কবিতার মা
- আমিনুল ইসলাম ১৮-০৫-২০২৪

"কবিতার মা" --আমিনুল ইসলাম . তুমি ফিরে গেছো বলে, মরচে পড়ে গ্যাছে আমার কলমের নিবে; স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে ডায়েরীর ঘরদোর, অমাবস্যার তারার সাথে বন্ধুতা করেছে কবিতার পাতারা! অন্ত্যমিলের বাকবিতণ্ডায় পালিয়ে গেছে সাদাকালো শব্দে মোড়ানো আমার প্রতিটা ছন্দ। আমি কবিতায় হাত বোলাতে গেলেই কানে বাজে কফিনে পেরেক টুকার অভিশপ্ত আওয়াজ! কবি হতে গিয়ে কবিতার নির্লজ্জ ঘাতক হয়ে ফিরে আসি বারবার। . তুমি ফিরে গেছো বলে আমার সন্ধ্যাদীপ আচমকা নিভে গ্যাছে; ছাইপোঁড়া সলতের সেঁজুতির তলায় অর্ধমৃত পোকা হয়ে পড়ে আছি আমি, একফোঁটা আলোর অভাবে ক্ষয়ে যাচ্ছে আমার জীবনের সবটুকু সাধ! আঁধারের নগ্নতা চুষে খাচ্ছে আমার হাড়গোর, হারিরে যাচ্ছে আমার কাবে পাওয়া তৈলচিত্রের পুরোটা হেলানতল! আঁধারের প্রতিবেশী হয়েও জোনাকির দেখা মিলেনিও আজও। . তুমি ফিরে গেছো বলে, শ্রাবণের সাথে তর্কে নেমেছে চৈত্রের খররোদ; আষাঢ়ের বুক ছিঁড়ে বসতী গড়েছে বোশেখের কালঝড়! আমি কালবোশেখির হুঙ্কারে ধ্বংসস্তূপে ছিটকে পড়ি, চৈত্রের অভিশাপে দুর্ভিক্ষ নেমে আসে আমাতে! আমি আধবেলা শ্রাবণের সুখ খুঁজি, কখনোবা আষাঢ়ের ঢল খুঁজে নিখোঁজ হই, বরষার জলধারায় একডুব স্নান খুঁজে মরে যাই যখনতখন। . তুমি ফিরে গেছো বলে, ভাল থাকারা আত্মাহুতি দিয়েছে উত্তরের শিমুলগড়ের বাঁশবনে, নিকোটিন, আমোনিয়ার দখলে চলে গেছে আমার ফুসফুসের ভিটেমাটি! ধোঁয়ার সাথে উড়ে গেছে আমার ভাল থাকার সবকটি উপকরণ। রাজশকুনের মতন আমি ছুটে চলেছি বিলুপ্তির পথে! তবুও মাঝেমধ্যে ভাল থাকার অব্যর্থ অভিনয় করে যাই, দুমুঠো কৃত্রিম হাসি ঠোঁটের কোণে জমা রেখে বলি, এইতো ভালই আছি আমি! . বিশ্বাস করো সন্ধ্যাবালা, তুমি ফিরে গেছো বলে খুব বেশি লোকসানে পড়িনি আমি। লাভের খাতাটা সামনে রেখে ছেঁড়া শার্টের আস্তিনে চোখ মুছতে মুছতে ভাবী, তুমি ফিরে গেছো বলেইতো আমার আরো একটি ফুটফুটে কবিতার জন্ম হলো! তুমি আবারো মা হলে! আমার সদ্যপ্রসূত কবিতার মা। . ০৮-০৮-১৬ কলেজ মসজিদ রোড,ময়মনসিংহ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।