ঘেসো নদী নিরবধি
- অনিরুদ্ধ আলম ১৮-০৫-২০২৪
ঘেসো নদী নিরবধি / অনিরুদ্ধ আলম
ঘেসো নদী
নিরবধি
ডাকে ইশারায় –
বলে – এসো
ব’সো ঠিক
এই পাশটায়।
তারপর
দিনভর
ভালবেসো –
উচ্ছল
টলমল
জলসিঁড়ি
ঝিকমিক
বালিতীর
দাদুরির
ছোট নীড়
জুড়ে দুই ধার।
ভালবেসো পাড়
পাড়ে বাঁধা নাও
ভেজা ডাঙা
ঘাসপিঁড়ি
ঘাসের নোলক
জলের দোলক
মাছরাঙা
স্যাঁতসেঁতে
আলক্ষেতে
বেতফুল-ঝাড়
এলোমেলো, তাও
দারুণ নিপাট।
ভালবেসো মাঠ
মাঠের হাটের
নানা উৎসব
ধানটুনিদের
টানা কলরব
থরে থর
প্রান্তর।
প্রান্তরজুড়ে
দূরে বহু দূরে
ঘুঘুদের ডাক।
ভালবেসো কাক
কাকডাকা ভোর
ভোরের শিশির
শিশিরের দুল
চম্পাপারুল
রোদ্দুরে
ফুরফুরে
সবুজের ভিড় –
নির্ঘুম
গাঙচিল
ঝিলমিল
কী নিঝুম
ঝুম বিল
মিঠে রোদে ছাওয়া।
ভালবেসো হাওয়া
হাওয়াদের তুড়ি
শাদা মেঘঘুড়ি
ফিকে নীল
আকাশের দাওয়া
কাশবনে
বাঁশবনে
ঘুরোঘুরি
লুকোচুরি
দীঘিজলে নাওয়া।
এ ভাবেই
নিমিষেই
আহা কেটে-যাওয়া
প্রতিটি পহর।
ভালবেসো চর
চরে নয়া ঘর
ছিমছাম
উদ্দাম
সারিসারি
খেরো বাড়ি –
ফেলে-আসা দোর
অন্দরটাও
বাদাড়ের মোড়
এ গাঁও, ও গাঁও।
বরবটি শিম
কোকিলের ডিম
পুকুরের পোকা
দুপুরের গান
কলমির থোকা
বকুলের ঘ্রাণ
দোয়েলের
কোয়েলের
ব্যস্ততাগুলো।
ভালবেসো ধুলো
ধুলোমাখা
আঁকাবাঁকা
ধুধু মেঠোপথ
শুধু বারবার
সাঁকো পারাপার
ঝরাপাতাদের
লুটোপুটি
হুটোপুটি
ধানশালিকের
খোশনহবত।
রোদের ডানায়
কানায়-কানায়
রঙ শত শত।
অপুদের মতো
ঢের অবিরত
ভালবেসো –
বেলা আর
অবেলার
মন উচাটন-
করা প্রতিক্ষণ।
গড়ের খাঁড়ির
জংলা বাড়ির
মেঠোপথ ধ’রে
কোনও এক ভোরে
তুমি এসো।
ভালবেসো খুব
আকাশের ডুব
দিগন্ত ঘেঁসে।
ভালবেসে এসে
ব’সো পাশটায়
এই নিরালায়।
মন্তব্য যোগ করুন
কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।