গাঁয়ের ছোট নদী
- আল আমিন মুহাম্মাদ ১৯-০৫-২০২৪

কায্যগ্রন্থ: হাওয়াই ওড়ে মন (অপ্রকাশিত)

গাঁয়ের ছোট নদী
"""""""""""""""""""""
আল আমিন মুহাম্মাদ

গাঁয়ের সবুজ বুকটা চিরে গাঁয়ের ছোট নদী,
সিঁথির মতো আঁকা-বাঁকা, চলে নিরবধি।
তীরের বুকে ভর-দুপুরে বুড়ো বটের ছায়া
জুড়ায় লোকে শিঁকড়-মাচায় ঘর্মাক্ত কায়া।
খেয়াঘাটের পথেই বায়ে বটের পাতা নাচে
পারপারের মানুষগুলো খরায় একটু বাঁচে।
বটের মোটা নিচের ডালে মাঝির কুঁড়ে ঘর,
নিজের জন্য নিজেই আপন দুনিয়ার 'পর।

বর্ষাকালে পাটের জাগে নদীর দু'কূল ভরে,
জলের রাগে মাছগুলো সব থাকে ডরে ডরে।
পাড়ার সবাই আসে ছুটে উছা-জুতি হাতে,
দুনো পারের মানুষ মাছের উৎসবে মাতে ।
জেলের সাথে পারে কেউ ধরার পাল্লাতে?
কেউবা হঠাৎ বানিয়ে ধরে কলার বিয়াতে।
জাগ মজলে তীরের বুকে কি যে কোলাহল!
কোমর জলে চাষির মুখে হাছন রাজার বোল।
বউরা বাছে পাটের কাঠি গল্প জুড়ে দিয়ে
খোকা গিয়ে থোয় বাড়িতে আউস করে নিয়ে।

ছেলেমেয়ে দুপুর বেলা ঘোলা করে জল,
মুরুব্বিদে রাগ-দাবড়ে বাড়ে যে কোলাহল।
রাখাল ছুটে লয়ে আসে ক্লান্ত গরুর পাল
ধোয়ায় গতর জুড়ায় দেহ ,চৈত্র মাসের কাল।
কাপড় কাচে বউবেটিরা মাজায় বেঁধে আঁচল
পুজোর সরা-ঘটি মাজে ঠাউমা সারে গোসল।
হাটের নাউয়ে পসরা ভরে যায়রে ধেয়েধেয়ে,
ঘাটের মানুষ হর্ষ চোখে দ্যাখে চেয়ে চেয়ে।

ছোট ছোট উর্মি নাচে নিজেল কালো জলে,
বৈকালে দু' তীর আরও ঠান্ডা বাতাস তোলে।
বধুরা দল বেঁধে আসে কলসি কাঁখে করে
জলের উপর মুখটা দেখে কলস ডুবোয় ভরে।
বিকেল বেলা এই পারেতে সুরুজ নামে পাটে,
সকাল বেলা ওই পারেতে ওই সূরুজই ওঠে।
এপার ওপার নিয়ে আমার ছোট্ট নদীর গাঁও,
ভালোবাসার সাঁকো গড়ে যাও আসো যাও

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।