বিদ্যালয়
- মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন ১৮-০৫-২০২৪

কালে-কালে ক্ষণে-ক্ষণে ওহে, বিদ্যা তোমারি রুপ আহরিতে
যেথায় গিয়েছি সবক'টা গণ্ডীতেই সীমাবদ্ধতার মাপকাঠি।
শুধুই তুমি রাখিয়াছিলে স্বাধীন করিয়া
তাই তোমারেই বারে বারে হৃদয়-তটে স্মরি।

ইচ্ছের সবটুকু’র শেষ প্রকাশ করিয়া
যখন যেথায় যেভাবে চেয়েছি গিয়েছি হারাইয়া,
বাপ-মা,বাড়ির মাস্টার অথবা বি.এস.সি স্যার
কতো-শত কাটিতো-মারিতো,
এইসব নিয়ে আমরা কখোনো ভাবিতাম না অত।

থাকিতো বাদলের দিনের সেই ফুটবল বা অতি-খরায় ক্রিকেট;
রাতের আধারে সব্বাই মিলে ফোটা খেলারও সে কি উদ্যোগ।

কখনোবা সাইকেল চড়িয়া অদূরের গ্যারিসনে
সিনেমা দেখিতে যাওয়া,
ভুলিবো কেমনে , ও বুন্ধুগন তোরা কি ভুলিয়াছিস কখোনো?

ছোট-ঘরনার সেই,পুরনো মডেলের মোবাইলে
উত্তর-দক্ষিন-পূর্ব-পশ্চিম যেদিকে বলিয়াছিলি তোরা
সেদিকেই টাকা ভাসাইতাম ইথারে-ইথারে।

ক্রিকেটবল-ফুটবল যাহাই উড়িয়া যাইতো মাঠ হইতে
দিতে চাইতো না আমাদের বল বলে,
তাই মোল্লাবাড়ির ডালিম, ডাব,পেয়ারা আরও কতোকি
রাতের আধারেই করিতাম সাবাড়।

মাঝে-মাঝে নিজেকে ভীষণ একা-একা লাগে খুব
যখনি কোন কাঁঠাল গাছের সবুজ পাতায় পড়ে এ দু-চোখ ।
অসীম স্যার মোদের ইংরেজি পড়াইবার তরে,
কাঁঠালি পাতার শিরায়-শিরায় ধ্যান করাতেন বসায়ে বসায়ে।

আমিনা, আমি সেই কবে ক্লাস-নায়ক থাকিবার কালে
সেইযে তোর চুল ধরে টেনেছিলুম
নিশ্চয়ই যাসনি এখনো ভুলে,
বিশ্বাস কর, দোস্ত আমার
এখন হয়তো আছি বিশ্ববিদ্যালয়ে
এমন আপন করিয়া কাওকে চুল নয়
হাতটি ধরিয়াও দেখা হয় নাই কখনো।

প্রতিদিন পি.টি-র পরে দেরি করিয়া আসিতাম উড়িয়া
শাহাবউদ্দিন তোর সিটখানিতে।
বরারবর প্রধান শিক্ষকের প্রতি কতো যে নালিশ দিয়েছিস,
অই দশ মিনিটের চুল-ছেঁড়া তর্কে-বিতর্কে।

ভক্ষনের সময় যাইতো বইয়্যা বলে
সজীব সদায় মোমবাতি হাতে থাকিতো
টিউবয়েলটার পাড়ে।
কখন, কখন আসে সে মাহেন্দ্র ক্ষণ !
দুটি অন্ন সে দিবে ভুঁড়িটার তরে।

ফিরোজ সহ এমন অনেক আপনের মতো ছোট ভাই হইয়া
মিশিয়াছিলি যারা,
তোদের ঋণ শোধ করিবো কি করিয়া?
বড় ভাই ছিলেন অনেক
মিশা হয়নি ততো তবুও যারা ছিলেন-
আপন করিয়া অতীতে রাখিয়াছিলেন
সামনেও পথ চলায় রাখিয়েন, হাতখানি ধরিয়া।

এ সৃতি,এ বিদ্যালয় আর সেই সব মুহূর্ত,
কিছুই ভুলিবার নহে হারিয়ে যাবার নহে।।

স্কুলে থাকিতে ২১-২৬ কিংবা ১৬ টানিতো আমারে খুব
ওই সময়ে ভাবিতাম ইস্ এখন যুদ্ধ হলে, আমিও হবো শহীদ।

আজো টানে দেশের মায়া , মানুষের মায়া
কেন যেন এখন আর সমাজের উঁচু-স্তরের মাতব্বরদের তরে
পাই না খুঁজিয়া কোন লেয়াজু রাখিবার সুতা পরিমান টান।

ওগো মা, তুমি মোরে যত্ন আর খেয়াল করিতে কতো
সেদিনের সে ছোট মুরগী আজি ব্যাঙ্গের-ছানার মতন লাগে-
মোর বাছারে যেন বড় হয়ে বড় কোন অসুখে না ধরে-
তাই,মোরে প্রতি-সপ্তাহে একটা করে সেই ছোট মুরগী খাওয়াতে।
আর শুধু স্যারদের হাতে সঁপিয়া দিতে
মানুষের মতো মানুষ হইতে।

জানিনে মা, তোমার ছেলে মানুষ হয়েছে কতো ?
জানিগো শুধু, এই অভাগা ভাবতে শিখেছে ,
কাজ করতে শিখেনি এখনো।।

_মুহাম্মাদ শরিফ হোসাইন
২১ জুলাই,২০১৪

উৎসর্গঃ
আমার বাল্য ও কৈশোর বেলার সকল বন্ধুদেরকে।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

faizbd1
২৪-১১-২০১৫ ২২:৪০ মিঃ

খুব চমৎকার!
ভাল লিখলেন,শুভেচ্ছা।