প্রবাসি
- আসিব মিয়া ১৯-০৫-২০২৪

এখন আর নদির কলকল স্রোতধ্বণি শুনি না,
শুনি না কান পেতে নিস্তব্ধ নিশির সংকীর্ণ আওয়াজ।
আযানের ধ্বণিতে এখন আর বিরক্তি আসে না,
নেই উলুধ্বনি, শঙ্খবাদ্য, করতালের ঝনঝন।

আজ কতদিন হলো,
কতভোর পেরিয়ে গেলো।
সকালে মুরগির চিৎকারে ঘুম ভাঙে না আমার।

আজ কতদিন হলো,
মায়ের হাতের রান্না খায় না।
শুকটি ভর্তা, পান্তাভাত কিংবা বেগুন ভাজি!
আহা! কতদিন, কতদিন হলো খায় না।

মাসুম মামা ফুচকার দোকান,
জাকির ভাইয়ের রং চায়ে মুখ দিয়ে এখন আর কারো সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হয় না।
রাতভরে মুর্শিদি গানের বৈতালে সুফিনৃত্যে
আমার এই শরীরটুকু আর নেচে উঠে না।

আজ কতদিন হলো বই পড়ি না।
গোটা নজরুল সমগ্র পড়ে রয়েছে,
পড়া হয়নি ‘বেহুশের চৈতন্য দান, ‘দিওয়ানে মুইনুদ্দিন’, ‘কারবালা’, ‘সত্যানুসন্ধান’ ‘জীবনবেদ’, ‘পথের পুস্তক’, নামজানা অসংখ্য গ্রন্থ!

আজ কতদিন হলো,
পূর্ণ, তুর্য আর তাসফিয়াকে একটু কাছ থেকে দেখি না।
তাঁদের সঙ্গে দুষ্টুমি আর খুনসুটি করা হয় না।

আমি এখন বন্দি,
আমাকে আমিই বন্দি করেছি।
মুক্ত জীবনের পরিকল্পনায়
নিজেকে বেঁধে ফেলেছি সভ্য শহরে।
আমি আর আগের মতো মায়ের অকর্মা সন্তান নই;
নই সাদিয়া-মিরার ফেলনা প্রেমিক।
আমি শৃঙ্খলধারী সভ্য নগরীর আবদ্ধ প্রবাসী!

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।