হলুদ লেফাফা-২
- সুকন্যা তিশা - পত্রালিকা ২০-০৫-২০২৪

প্রিয়ংবদ গাধামশাই, তোমার প্রতি রইলো এই স্নিগ্ধ
দুপুরের দীপ্তিহীন কাঁচা রোদের মিষ্টি ভালোবাসা ।
তুমি কেমন আছো তা আর জানতে চাইবো না,তোমার স্বাধের
বাহানা শুনেই আমি বুঝে নিয়েছি তুমি কেমন আছো।
এই মা!গাধা বলে সম্বোধন করলাম বলে ভ্রু কুঁচকে গেলো বুঝি ?
তুমি একটা গাধা নও তো কি,শুনি ?
চিঠি দিতে বললাম –আর অমনি হাজারটা বাহানা জুড়ে দিলে।
আচ্ছা চিঠি লিখতে যোগ্যতা লাগে ,বুঝি ?
জীবনে কখনও শুনেছো চিঠি লিখতে হলে কবিত্বের দরকার হয়,
সাহিত্যিক হতে হয়? কি আজব বাহানা বটে তোমার!

সেই যে পত্রমিতালীর যুগে দেখোনি ,
দূরে থাকা প্রিয়জনের জন্য প্রেয়সী কিভাবে পত্র লিখতো ?
আবার প্রণয়ীর সেই ভালোবাসার প্রত্যুত্তর দিতে গিয়ে
তার প্রিয় পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখেও শেষ করতে পারতো না ।
কই, তারা তো জানতো না কবিত্বের মারপ্যাঁচ,
তারা তো ভাবতো না কতটুকু গুণাবলী
সমৃদ্ধ হলে তাকে চিঠি বলা যায় ।
তারা তো জানতো শুধু নকশিকাঁথার মত
এক একটা কথার বুলিকে সুঁইয়ের মত গেঁথে গেঁথে
সাদা কাগজে রঙিন ভালোবাসার নকশা বুনতে ।
তারা জানতো এক ঝাঁক পাখির এলোমেলো পথ
চলার মত করে এক লাইনের পর আরেক লাইন
সাজিয়ে প্রেমের চাষ করতে ।তুমিও তো পারো
সেভাবে আমার জন্য কিছু একটা লিখতে,কি পারো না ?
আমার তো শুধু তোমার মনের আকুতি,চাওয়া-পাওয়াগুলোকে
জানা দিয়ে কথা,আমায় নিয়ে তোমার স্বপ্নগুলো
কোন রঙে রাঙে তা বোঝা দিয়ে কথা।
অতটুকুই তো চাই আমার,খুব কি বেশি হলো ?

কি করবো বলো, সে যুগের মত ঘুমোতে যাওয়ার আগে
হারিকেনের মৃদু আলোয় সবার চোখের আড়ালে
বড় যত্নে রাখা কাগজের টুকরোগুলোতে নাক ডুবিয়ে
ভালোবাসার সুঘ্রাণ নেয়ার লোভ যে সামলাতে পারি না আমি।
এ যুগে হয়ত অতটা সৌভাগ্য হবে না,
তবে ডিজিটাল যুগের ফ্লোরোসেন্ট বাতির উজ্জল আলোয়
তোমার অগোছালো কথার মাঝে চোখ বুলিয়ে
তোমার ঘ্রাণ আমি ঠিক খুঁজে নেবো,দেখে নিও !
ততটুকুই বা হাতছাড়া করি কি করে বলো তো ?
বাকিটা জীবন এ আশাতেই কাটিয়ে দেবো ভাবছি
যদি কখনও ইচ্ছে হয় কোন এক পড়ন্ত বিকেলে আমার নামে
অন্তত একটি চিঠি পোষ্ট করে দিও,সেই অপেক্ষাই রইলাম।
ইতি তোমারই অপেক্ষা প্রহরী।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।