সেই ছেলেটি
- আশরাফুল ইসলাম শিমুল - ইচ্ছেখুশী ২০-০৫-২০২৪

ধুসর মেঘের আড়ালে স্বপ্ন গুলো মলিন হয়ে আছে
চেতনার আকাশে এক ফালি নিরবতার নিশ্চুপ অপেক্ষা,
ছেড়া তালি দেওয়া জীবনটাকে একটু রঙ্গ তুলির আচড়ে
জীবন্ত করার চেষ্টায় বত্।

অপেক্ষা করা ছেলেটি অনেক বদলে গেছে
কলেজের করিডোরে আর অপেক্ষা করে না,
মেয়েটির পিছু পিছু আর হেঁটে যায় না।

যে ছেলেটির ধ্যানে মগ্নে ,চিন্তা চেতনায় জাগ্রত ছিলো ওই মেয়েটি ,
সেখানে আর স্বপ্নবিলাসীর কোকিল ডাকে না,
স্বপ্নহত্যার যুদ্ধে যে ছেলেটি প্রতিনিয়ত মরিয়া হয়ে থাকে,

সেই ছেলেটি আজ অনেক বদলে গেছে।

স্কুল কলেজ পালানো ছেলেটি
এখন আর ছুটে যায় না ওই মেয়েটির স্কুল কলেজে,
আর দাড়িয়ে থাকে না ব্যস্ত রাস্তার হতাশার মোড়ে ,
পায়চারী করে না মেয়েটির ইট পাথরে ঘেরা দালানের পাশে ,
হয়তো মেয়েটিও ভুলে গেছে তার অতীতের গানডিতে পড়ে থাকা দগদগে স্মৃতি,
হয়তো আর খোঁজে না ছেলেটির পায়চারী,
ভুলে যাওয়ার অভিপ্রায়ে নিত্য ছন্দময় কাব্য লেখে।

ছেলেটি আজ কোন স্বপ্ন খোঁজে না,
স্বপ্ন বোনে না, নির্বাক হয়ে পথে চেয়ে থাকে না,
উদাসীন হয়ে পথের ধারে তপ্ত দুপুরের খা খা রোদে,
বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে অপেক্ষা করে না ওই প্রাইভেটের
অলি গলিতে।

ছেলেটি অনেক বদলে গেছে
মরুভূমির বুকে আর শস্য ফলায় না
মরিচিকার পিছনে আর ছুটে চলে না হননি হয়ে।

দেয়ালের সাথে লেগে থাকা শৈবাল গুলো
আর বেড়ে উঠে না সবুজের রঙ্গে রঙ্গে,
ইট পাথরের ভাঙ্গা দেয়াল ভেঙ্গে গেছে
অতীতের কোন ঝড়ে,
জরাজীর্ণ ইট পাথরের স্তুপের সাথে লেগে থাকা
শরীরের রক্ত ক্ষয়ী ঘাম শুকিয়ে গেছে,
আগাছা এখন নিত্য নতুন সতেজতায় ভরে দিয়েছি
ওই পরিত্যক্ত স্থান।

এখন সে নিজেকে অনেক ভালোবাসে
রাতকে বড় আপন ভাবে
দিনকে বুকে আগলে রাখে
আকাশ ছোঁয়া সপ্নে বিভোর থাকে,
জীবনের রথে চড়ে অনেকদুরে চলে যেতে চায়,
নিজেকে অনেক বদলে ফেলতে চায়
ভাসা মেঘের ভেলায় আর ভাসতে চায় না।

ছেলেটি একাকীত্বের মাঝে নিজেকে খুব আপন করে পেতে চায়,
হেঁটে হেঁটে যেতে চায় দুরবহুদুরে যেখানে স্বপ্ন খেলা করে,
যেখানে বাস্তবতার মেলা বসে
যেখানে কোন দুঃখ নাই
হতাশা নাই, আত্মাবিলাস নাই, ঈর্ষা নাই, ঘৃণা নাই, অহংকার নাই, বিদ্বেষ নাই, প্রতিহিংসা নাই, ক্ষোভ নাই। যেখানে সবাই স্বাধীন।

আজও এই ছেলেটি এই নদীর পারেই দাড়িয়ে আছে
দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চেয়ে ওই গাংচিলের দিকে
একটা বুকভরা নিঃশ্বাস আসবে
একটা মুক্তির গন্ধ আসবে
একটা স্বাধীন পতাকা উড়বে
একটা সদ্য ফোটা নিস্পাপ গোলাপ তাকে এসে নিয়ে যাবে,
বিষাক্ত রক্ত গুলো চুষে চুষে খাবে দানব, রাক্ষস
ছেলেটি হঠাৎ জেঁগে উঠবে দংশনের ছোবলের যাতনায়,
শরীর বয়ে বয়ে বিষাক্ত রক্ত ছুঁয়ে ছুঁয়ে পড়বে
দানবের থাবায় ক্ষতবিক্ষত শরীর জলন্ত পিন্ডের মত দাউ দাউদ করে জ্বলবে ,
আবার ঘুমিয়ে যাবে।

ছেলেটি আজও দাড়িয়ে আছে সেই অপেক্ষার পরবাসে।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।