অঙ্ক আর কল্পনার প্রশ্ন
- শামীম এএ কবীর - পৃথিবীর বিশ্রী সব কবিতা-২ ২১-০৫-২০২৪

আকাশের দিকে উদাস তাকিয়ে থাকতে দেখে
পেছন থেকে বলে উঠলো
‘‘স্যার ইঞ্চি টেপ দিয়ে কি আকাশ মাপছেন’’?
প্রশ্নের অভিনবত্ব আর নাটকীয়তা
সত্যিই আমাকে চমৎকৃত করেছে
জানিনা শুধু মাত্র ইঞ্চি টেপ দিয়ে
আকাশ পরিমাপ করা যায় কি না
তবে এটা এক ঐতিহাসিক বাস্তবতা,
আকাশ নিয়ে যত কল্পনা, তত প্রশ্ন।

আকাশ যত উচূ, আর আমার কল্পনা বিলাসী মন
আকাশের উচ্চতায় উড়তে গিয়ে
কল্পণা গুলোও রূপান্তরিত হয় প্রশ্ন আর কৌতুহলে
দেখতে চায়,
আকাশের নীল পর্দার ওপারের পৃথিবীটা কেমন?
আর কেমনই বা তার রং?
সে রং এর ধরন, পরিমান, দ্রবন কি
কল্পনার চোখে মাপা যায়?

আসলেই কি কেউ বলতে পারবে,
আকাশের নীল পর্দার ওপারে কি অন্য
পৃথিবী নাকি অন্য আকাশ?
আর যত কিছু দেখি তা তো
এই নীল পর্দার নীচেই ঝুলে থাকে।
তাহলে নীল পর্দার ওপারে কি?, কেউ কি
বসে থাকে সারাক্ষণ?
তাহলে কেনো এই নীল পর্দা?
পর্দার আড়ালে কে?
কতগুলো গ্রহ, নক্ষত্র, ধুমকেতু, নিহারীকা
তারা কেনো এই আকাশে? তাদের কাজই বা কি?
শুনেছি তারা নাকি অন্য অন্যকে প্রদক্ষিন করে
খালি খালি শুয়ে বসে
কেনো কাকে প্রদক্ষিন করে তারা?
এতে কার কি লাভ?
কতোগুলোর খোজ রাখেন জ্যোতির্বিদরা?

আর ওরা কত দূরে দূরে অবস্থান করে?
শুনেছি হাজার কোটি আলোক বর্ষ
যদিও সে হিসেবটা বুঝি তবে
সে অঙ্কে আমাদের কি লাভ?
যে অঙ্ক মানুষের এক জনমে শেষ না হয়ে
পৌনঃ পুনিকতার আবির্ভাব ঘটায়।
খোদ অঙ্কই বিরক্ত হয়ে পড়ে, সে
পূণরাবৃত্তির সীমাবদ্ধতায়

আকাশের অংক ?
বরং বলা চলে,
আকাশের অংক এখানে পাতালে গিয়ে ঠেকেছে।
আচ্ছা কেউ কি বলতে পারবে
আকাশে পাহাড় নদী সমূদ্র আছে কি না?
অথবা কতগুলো? জানি কেউ বলতে পারবে না
প্রশ্ন থাকলো আকাশের কর্তার কাছে ।

আকাশের অংক কষতে গিয়ে
বিজ্ঞানীরাও আবোল তাবোল বকতে থাকে
বিভিন্ন থিওরির অবতারণা ঘটায়
আজকে একটা তো কালকে আর একটা
কেউ পাগল হয়ে গুলিয়ে ফেলে কল্পনার জলে।
আর অঙ্কের আছে বাস্তবতা
তা তো শূণ্য,
আর সংখ্যাগুলো? শূণ্যের সাথেই যেনো যত প্রেম
এক দুই করে এগোয় পিছোয়
সারাক্ষণ শূণ্যের সামনে বা পিছনে লেগেই থাকে ।

আর আমাদের আছে কল্পনার যতো আলো
বিচিত্র তার রং, তার পরও
রীতি মতো পেইন্ট করে উড়িয়ে দেই
আকাশের বাতাসে,
তার পর শূণ্যে গিয়ে ঠেকে এক সময়।
সমূদ্র থেকে প্রাগৈতিহাসিক জীবের মতো
উড়ে গিয়ে খেয়া তরীরহয়ে ভাসতে থাকে মহাশূণ্যে
একসময় আকাশের শূণ্যতায় বিলীন হয়ে যায় ।

আর কল্পনার কাব্যিকতা,
আকাশের গায়ে কবিতা লিখতে গিয়ে
দেখি সেগুলো পথের ধুলিকণা ছাড়া আর কি?
সমস্ত কাব্যকর্ম সূর্য্যের আলোয় বালু, ঝিকি মিকি
শব্দ গুলো ক্ষুদ্র হতে হতে এতোই ক্ষুদ্র হয়ে যায় যে,
বিশাল মহাশূণ্যে একমুঠো বালি, উড়া উড়ি
সময়ে অসময়ে নির্বাক হয়ে শূণ্যেই তাকিয়ে থাকি, শুধু
মহান এক শিল্পির চিরন্তন কাব্যকে পাঠ করার জন্য
আর পেছনে উড়তে থাকে অঙ্ক আর কল্পণার যত প্রশ্ন -
‘‘স্যার ইঞ্চি টেপ দিয়ে আকাশ মাপছেন কি?’’


__________ ২৭/১০/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।