দারিদ্র্যতার ডাইনোসর
- শেখ মাফিজুল ইসলাম ১৯-০৪-২০২৪

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কুটিরগুলো
দারিদ্র্যতার ডাইনোসর;
বস্তি পাড়ায় স্বস্তি কোথায়
দুঃখ ওদের জীবন ভর।

যে শিশুটি জন্মনিলো
চিৎকারে সে জানান দেয়
বাঁচা মরার সন্ধিক্ষণে
ডাইনোসরকে সঙ্গে পায়।

কোকিয়ে কাঁদে ছেঁড়া কাঁথায়
স্যাঁত সেঁতে তার আতুর ঘর,
ধোঁয়ায় ভরা চুলোর মুখে,
নতুন জীবন বরণ কর!

ধুলো মলিন পোশাক আশাক
জ্বরা জীর্ণ তাপ্পিসার,
রোগ জীবাণু বসত ক'রে
হানা দেয় সে বারংবার।

শাক সেদ্ধ আলু ভর্তা
ভাতের থালায় রোজ জোটে
শীর্ণ দেহী মায়ের কোলে
ছোট্ট শিশুর চোখ ফোটে।

ঝি চাকরের কাজটি পেলে
আলোয় ভরে শুষ্ক মুখ
কেউ-বা আবার টাকার জোরে
কিনতে পারে যৌনসুখ।

আদর করে কেউ ডাকে না
কেউবা বলে টোকাই দল
পথকলির দৃশ্য দেখে
কেউ-বা ফেলে চোখের জল।

ভাঙাচোরা পাইপ পেলেও
সুখে ওরা নিদ্রা যায়
কচি শিশু ঘোমায় যখন
বাবা মায়ের পরশ চায়।

দল বেধে সব নোংরা ঘাটে
খাদ্য পাবে সেই আশায়
পঁচা বাসি খাদ্য পেলে
সবাই মিলে ভাগ বসায়।

কাচের চুরি স্নো পাউডার
আলতা ফিতে রঙিন ফুল
নোংরা ঘেঁটে পেতেও পারে
এনামেলের কানের দুল।

তাতেই খুশি, সাজায় দেহ
নানী দাদি হেসেই খুন
রূপ দেখে তার চক্ষু জোড়ায়
সত্যি সুখী হাজার গুণ!

খুটে খাওয়া পাখির মতো
ওদের আছে আত্মবল
সুখে দুখে কষ্ট পেলে
ওরাও ফ্যালে চোখের জল।

বস্তা এবং ছেঁড়া কাঁথায়
শীতের রাতে দিচ্ছে ঘুম
চোখের পাতায় রাত পোয়ালে
দারিদ্র্যতা দিচ্ছে চুম।

বস্তি পাড়ায় আগুন লাগে
দগ্ধ শরীর চিনবে কে?
সেই যাযাবর হাঁটছে পথে
মানুষ পোড়ার গন্ধ নে।

মানুষ তো নয় মনুষ্য-কীট
ভুগছে এমন লক্ষজন
ডাইনোসরের তীব্র ছোবল
ওর কাহিনী গল্প শোন।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।