এক কাপ চা হয়ে যাক
- কাফাশ মুনহামাননা - সঙবিতা ২১-০৫-২০২৪

- তো হয়ে যাক এক কাপ চা।
- এতোক্ষণ বসিয়ে রেখেছো, তার জন্য আগে শাস্তি পেতে হবে।
- কী শাস্তি?
- আমার জন্য মালাই নিয়ে আসো।
- কী অশ্লীল! কী অশ্লীল!
- মালাই খাবো। এতে অশ্লীলতার কী পেলে?
- ও আচ্ছা, মালাই খাবেন! আমি মালে শুনেছিলাম।
- মালে শুনেছো? কী সেটা?
- একরকম জিনিস। দেখতে অনেকটা লাটিমের মতো। আর বলতে পারবো না।
- কেনো? লজ্জা লাগে?
- অনেক।
- কোথায় লাগে?
- আর লজ্জা দেবেন না প্লিজ!
- তোমাকে মারবো ফাজিল! মালে হচ্ছে মালদ্বীপের রাজধানী।
- তাহলে তো সর্বনাশ! যে দেশের নাম এমন, তার রাজধানীর কী অবস্থা হবে, আল্লাহই জানে।
- তুমি আসলে ঠিকই শুনেছো। ইচ্ছে করেই এতোক্ষণ এসব করলে?
- ইচ্ছে করে কেনো এসব করবো?
- তোমার যে লজ্জাশরম নেই, তাই।
- ওটা তো আমার পূর্বসূরীরও ছিলো না। সেই বদৌলতে আমি পৃথিবীতে এসেছি। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
- এসব না করলে কি চলে না?
- কী চলে না?
- তুমি কিন্তু আমার কথা বুঝতে পেরেছো। তাও প্রশ্ন করলে?
- না বুঝলে কী প্রশ্ন করা অন্যায়।
- তোমাকে আসলে কেউ ঠিক করতে পারবে না।
- কেউ'টা বাদ দিন। আপনি চেষ্টা করুন। হয়ে যাবে।
- আমার কী খেয়ে-দেয়ে কাজ নেই?
- আছে তো। আমাকে সংশোধন।
- মাফ চাই মাফ। অন্যদিকে দেখো।
- চেয়ারটা উল্টো করে বসুন। তা না হলে অন্যদিকটা দেখবো কিভাবে?
- উফ! আমি কিন্তু চলে যাবো।
- মালাই খাবেন না?
- তোমাকে খাবো।
- আমি প্রস্তুত। খেয়ে নিন। তবে স্বাদটা হয়তো নোনতা হতে পারে।
- হায় আল্লাহ! কার কাছে এনে ফেলেছো?
- সঠিক লোকের কাছে।
- তুমি সঠিক লোক হলে বাঁকা কোন্ জন?
- আহা! আমি উপযুক্ত পাত্রের কথা বলেছি, যা আপনার একান্ত প্রয়োজন।
- ওহো! আমার প্রয়োজনও বুঝতে শিখেছো দেখি।
- এতটুকু না বুঝলে আপন হবো কীভাবে?
- তুমি হবে আমার আপন? কস্মিনকালেও না।
- সমস্যাটা তাহলে আপনার মাঝে, তাই না?
- আমার কোনো সমস্যা নেই। সব সমস্যা তোমার মধ্যে।
- সে যা-ই হোক! আমরা কিন্তু ইন্দোনেশিয়া'র জাতীয় প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এগোতে পারি।
- বুঝলাম না। পরিষ্কার করে বলুন।
- 'ইউনিটি ইন ডাইভার্সিটি'। বৈচিত্র্যের মাঝে একতা। এটা ইন্দোনেশিয়া'র গণতান্ত্রিক মূলমন্ত্র। এই মূলমন্ত্র অনুসরণ করে আমরাও আপন হতে পারি।
- আপাতত বন্ধুত্বই ঠিক আছে।
- ভুল বললেন। বন্ধুবিত্ব হবে।
- বন্ধুবিত্ব? সেটা কী?
- আমি বন্ধু, আপনি বান্ধবী। দুটোর মিলিত শব্দ হবে বন্ধুবিত্ব।
- বন্ধুত্ব বললে সমস্যা কিসে?
- আমি নারী-পুরুষের সমতায়নের পক্ষে। সর্বস্তরে নারীর সমোধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আমাদের জাতীয় জীবনে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। আমি মনে করি, বন্ধুত্ব শব্দটি এই ক্ষেত্রে অন্তরায়।
- তুমি পারোও! তবে জানো কী? যারা বেশি নারীবাদী দেখায়, তাদের মাধ্যমে নারীর অধিকার বেশি লঙ্ঘিত হয়।
- এটা কিন্তু আংশিক সত্য বলেছেন।
- শত্রুর মুখে আংশিক প্রশংসা!
- বন্ধু থেকে শত্রু বানিয়ে দিলেন?
- মতিগতি তেমন একটা সুবিধের মনে হচ্ছে না, তাই।
- মালাই এনে দেবো?
- কী অশ্লীল! কী অশ্লীল!
- ওহে দ্বীপ, তুমি মাল নিয়ে আসো। আমি মালে যাবো।
- তার আগে এক কাপ চা হয়ে যাক!

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।