পরিচিত মুখ
- কাফাশ মুনহামাননা - গ্রুপ-ডিসকাশন: ভেতর-বাহির ২১-০৫-২০২৪

ইফরা তারিন আর প্রবোধ মিত্র।
আমাদের গ্রুপের দু'জন পরিচিত মুখ।
বলতে গেলে ওরা-ই আমাদের গ্রুপ-ডিসকাশন'কে
নিয়মিত প্রাণবন্ত করে রাখে।
হোক পড়াশোনার খাতিরে আমরা গ্রুপ-ডিসকাশন করি।
কিন্তু ওদের দু'জনকে ছাড়া আমাদের
আলাপ-আলোচনা যেনো তেতো করলার মতো।

প্রবোধের বাড়ি দক্ষিণবঙ্গে।
নদীবহুল এলাকার ছেলে। নদীর মতোই সরল।
প্রকৃতির মতো উজ্জ্বল আর বাতাসের মতো দুরন্ত।
কথার মধ্যে একধরনের আলাদা টান আছে ওর।
যেটাকে আমরা আঞ্চলিকতা বলি।
আমি বলি অলৌকিকতা।
আমরা যারা শহুরে, হাজার প্রচেষ্টার পর-ও
আঞ্চলিক ভাষার সেই মধুটান ধারণ করতে পারি না।
সুতরাং আঞ্চলিকতা কে অলৌকিকতা বলাই শ্রেয়।

প্রবোধের কথার টানে আমরা-ও বিমোহিত হই।
সত্য বললে বিমোহিত হতে বাধ্য হই।
ওর টক-ঝাল-মিষ্টি কথাগুলো
অলৌকিক টানের মিশেলে
এমন এক মায়াঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে,
আমরা আর না হেসে থাকতে পারি না।
ওর কথার পরতে পরতে থাকে জ্যৈষ্ঠ মাসের
রসালো আমের শৈল্পিক পরিবেশন।
যেটা অগ্রাহ্য করার মানসিক ও দৈহিক শক্তি -
কোনোটাই আমাদের নেই।
আমরা-ও কম যাই কীসে?
গ্রুপ-ডিসকাশনের বিষয়াদি ভুলে শুধু ওর কথার রসাস্বাদন করি।

প্রবোধের রসকথার চেয়েও চোখ দুটো বেশি সুন্দর।
এটা আমার না, ইফরার কথা।
ইফরা। যার কথা শুরুতেই বলেছি।
হ্যাঁ, তাই। শুধু নামটা বলেছি। বাকি কথা-ও বলবো।
তবে বলে রাখি। আমার একটা বদনাম আছে।
এবং সেটা মেয়েদের পক্ষ থেকে।
আমি নাকি মেয়েদের অতিমাত্রায় প্রশংসা করি।
কী জানি! তবে আমার কিন্তু কখনোই তা মনে হয় না।

মেয়ে মানেই যদি সৌন্দর্য হয়,
তাহলে ইফরা হবে সেই সৌন্দর্যের বিস্ময়; মধ্যমণি।
এটা প্রবোধের ভাষ্য। আমার-ও সেটাই বিশ্বাস।
ইফরা'র রূপ আর হাসি যেনো সহোদরা।
দুটোর মাঝে কোনো ফারাক নেই।
গ্রুপ-ডিসকাশন করতে করতে যখন আমরা ক্লান্ত হই,
একগাল হাসি ছড়িয়ে ও-ই আমাদের পরিশ্রান্ত করে।
ওর মুখটা যেনো ছোট্ট স্বর্গের সন্নিবেশ।
দেখামাত্রই অতীত-ভবিষ্যৎ ভুলে
শুধু বর্তমানে বাচতে ইচ্ছে করে।
এমন সুখের প্রসাদলাভে আমরা ওর কাছে চিরঋণী।

প্রবোধের রসভার দুষ্টুমির বেশিরভাগ উৎপত্তি ঘটে -
ওই ইফরার কথা ধরে। শতকরার হিশেবে নব্বই ভাগ।
ইফরা কোনো কথা বলামাত্রই
প্রবোধের কিছু একটা ফিরিয়ে বলা চাই-ই-চাই।
ইফরা-ও হয়তো মনে মনে এটাই প্রার্থণা করে।
তবে অন্য কেউ ইফরা কে কিছু বলতে গেলে
তাকে সাতবার ভাবতে হয়।
না ভেবেই বা উপায় কী বলুন?
ইফরা হয়তো ছেড়ে দেবে, কিন্তু প্রবোধ!
রসালো কথার তীর বড়ই ভয়ঙ্কর!
বক্ষবিদীর্ণ করে তবেই ছাড়ে।
আর সেই তীর যদি হয় প্রবোধের,
তাহলে ইহকাল-পরকাল
সব একাকার হয়ে মূর্ছা যায় চুলোর ভেতর।
আসলে যারা হাসাতে পারে, তাদের কাঁদাতে পারার
মুন্সিয়ানা-ও খুব তীক্ষ্ণ এবং বিধুর যন্ত্রণায় ঠাসা থাকে।
তবে প্রবোধের কথায় আমাদের তীর বিধলেও
ইফরা কিন্তু তখন বেশ খুশি হয়। একেবারে যারপরনাই খুশি।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।