আর্তনাদ
- Srabon Ahmed ২০-০৫-২০২৪

আর্তনাদ
শ্রাবণ আহমেদ

প্রভাত-ফেরিতে হঠাৎই ঘুম ভেঙে গেলে দেখি আমি,
মায়ের চোখে হাজারও বেদনার হাতছানি।
আজানের ধ্বনিতে চারিদিক মুখরিত, সাথে মায়ের মুখে অার্তনাদের স্পষ্ট বাণী।
চারিদিকে গোলাগুলির বিকট আওয়াজ,
দরজায় কারও কড়া নাড়াতে মা ভয় পেয়ে যায়।
কাঁপা কাঁপা শরীরে মা উঠে যায় বিছানা ছেড়ে, আমি তখন বিছানায় শুয়ে চাঁদর মুড়ি দিয়ে দেখছি মাকে।

মা দরজার কাছে গিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বলে ওঠে, কে?
দরজার ওপাশ থেকে আওয়াজ আসে, মা আমি তোমার ছেলে।
দরজা খোলো মা দরজা খোলো।
রফিকের ভয়ার্ত কন্ঠ শুনে মা অতি দ্রুত দরজা খুলে দেয়।
রফিক এক গ্লাস পানি নিয়ে মুখে, মায়ের দিকে একবার তাকায় অতি সুখে।
মায়ের চোখে সমুদ্র সমান জলের আভাস।
আবারও কে যেন কড়া নাড়ে দরজায়।
'কে?' জিজ্ঞেস করাতে দরজায় দুমদুম শব্দ হয়।
মা, ভাইয়া সহ, আমিও ভয় পেয়ে যাই।

ভাইয়া নিচু স্বরে মাকে জড়িয়ে ধরে বলে "মা, তুমি কেঁদোনা আমি চলে গেলে।"
যাও তুমি, দরজা খুলে দাও।
রফিক ভাইয়ের হাতের উজ্জ্বল রাইফেলটা তখনও চকচক করছে।
ভাইয়া দরজার দিকে রাইফেলটা তাক করে,  নিজেকে চাঁদরে জড়িয়ে লুকিয়ে আছে খাটের অপর পাশে।
জগৎ জননী মা আমার দরজা খুলতেই জানোয়ারের একটা দল প্রবেশ করে ঘরের ভেতরে।
ভাইয়া রাইফেলের টিগার চাপতেই দুটো জানোয়ার মেঝেতে পড়ে যায়।
সাথে ভাইয়ারও অাত্ম চিৎকার শুনতে পাই আমি।
মা 'রফিক' বলে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে।
জানোয়ারের দলগুলো অট্টহাসি হেসে চলে যায়।
আমি নির্বাক তাকিয়ে থাকি ভাইয়ার মুখপানে,
রক্তে ভেসে যাচ্ছে পুরো ঘর।

মায়ের আর্তনাদে চারিদিকে স্তব্ধতা নেমে আসে,
পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজও সব থেমে যায় মায়ের কান্নাতে।
পুরো ঘর, মায়ের বুক, সবটুকু জুড়ে শুধু হাহাকার আর বেদনার আর্তনাদ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।