চৈতালী
- এ কে সরকার শাওন - আপন-ছায়া ১৯-০৪-২০২৪

চৈত্র মাসের ভীষন খরতাপে,
সূর্যি মামা অট্টহাসি হাসে!
তাঁর নিমর্ম অগ্নিবানে
নিরস জমি চৌচির হয়
তামাটে মাঠের ক্যানভাসে।

চরের নদী শুকানো মাঠ হয়।
পুকুরের জল তলায় গিয়ে ঠেকে,
পানির সংকটে ঠা ঠা বরেন্দ্রভূমি
সাপাহারে ও রহনপুরের বাঁকে!

চাতক তাকায় মেঘের পানে
মেঘ নিয়েছে ছুটি,
কৃষাণ তাকায় আসমানেতে
তৃষায় ফাটে ছাতি।

ঝরা পাতা নিচ্ছে বিদায়
চোখের জলে ভাসি,
মেঘ বৃষ্টি নিখোঁজ হলো
ঈশান কোনে আসি।

কাঠফাটা রোদে কাঁদছে নৌকা
ডাঙ্গায় ঝিমায় মাঝি।
গাছতলাতে রাখাল বিভোর
দিবা-স্বপ্নের কাজী!

প্রজাপতি আয়েশ খোঁজে
শীতল কোন দেশে,
কোকিল একা গান গেয়ে যায়
মগডালের ঐ শেষে।

পুকুর পাড়ে গাছ তলাতে
পেতে শীতল পাটি,
রমনীকুলের সরস আড্ডা
সাথে টকের বাটি!

ভুট্টার মোচা উঠছে ভাসি,
হাতছানি দেয় আমের গুটি,
কাঠালের মুছি দিচ্ছে হাসি,
পাটের চারা আসছে হাটি,
তাইনা দেখে কৃষান খুশী
চৈত্র নয় মোটেই সর্বনাশী।

ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়া
চৈতালী ফসলের মিষ্টি-মায়া;
আশায় সাত রংয়ের খেলা,
মিলবে মেলা বটতলায়।
ঝিয়ারীরা জামাই নিয়ে
আসবে আপন আঙ্গিনায়।
স্বপ্নবুননে চৈত্র কম নাহি যায়,
বৈশাখের আনন্দ আলো
চৈত্রের গানে বৈষ্ণবী তাই গায়।

বিরহী প্রিয়ার মনের আগুন
দ্বিগুন চৈত্র মাসে।
সব শুকিয়ে খাঁ খাঁ হলেও সে
আখিঁ সাগর জলে ভাসে।

ত্রিতুপুরী, ঢাকা। ১৬ মার্চ ২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।