বৈশাখী স্মৃতি
- এ কে সরকার শাওন - আপন-ছায়া ১৯-০৪-২০২৪

হৈ চৈ হৈ হুল্লুড় সারাদিন,
খেলাধুলা ঘুরাফেরা বিনোদন প্রচুর।
আমাদের শৈশব কৈশর ছিল
কত আনন্দের; উল্লাসে ভরপুর।

কালের ডানায় ভর করে
যদি ফিরে যাই,
অতীত সাগর তীরে
দুরন্ত শৈশব কৈশরে;
বৈশাখী সোনালী স্মৃতিকণাগুলি
মনে পরে বারে বারে।

একটা অখন্ড সবুজ-তামাটে
বিশাল চাদরে ঢাকা মাঠ;
নদীর পাড়ে
গোপাটের শেষ প্রান্তে,
বিশাল বট গাছ,
মম উন্নত শীরের মত
বীর বেশে দাড়িয়ে
যেন এক বিশাল প্রাকৃতিক ছাতা!
নীলাকাশের নীচে মাটিতে পোথা
পরম মমতায় ছায়া বিতরণে
মানবের তরে বৃক্ষের কত অাকুলতা!

তারই চারিপাশে সাজ সাজ রব,
হাজার মানুষের কোলাহল
চুড়ী-ফিতা মন্ডা মিঠাই
বাহারী পণ্য কেনার ঢল;
হরেক রকম খেলনা,
পশরা শত শত
পাতার বাঁশীর পু পু শব্দ
বাজঁতো অবিরত!
ঢাক, ঢোলের ঢুং ঢাং
ঢুলীর তালমাতাল উদ্দ্যাম নৃত্য
সকাল থেকে চলে সারা বেলা;
এইতো বাঙ্গালীর বর্ষসেরা উৎসব
মনের মেলা মিলন মেলা
সবার প্রিয় বৈশাখী মেলা!

আমের গাছে ঢিল ছোড়া,
দস্যিছেলের দলের হয়ে জামের
মগডালে উঠে জামের রসে মুখ রাঙ্গানো!
কাঁঠাল-কলা চুরির আসামী হয়ে
দাদীমার আদালতে
ভাল মানুষের ভং ধরা!
উজির ছোট চাচার রাজদন্ড
কান ধরে উঠবস শতবার,
মেকি কান্নায় তাঁর মন গলানো
কত কঠিন যেন ঢেকি গেলার!
আর কোনদিন হবে না আবার!

মুক্তি পেয়েই কে শোনে কথা কার!
হৈ হৈ রৈ রৈ করে সারাটা দিন পার!
সবাই টো টো কোম্পানির ম্যানেজার!
আমরা নীজেই রাজা
ধারি নাকো কারো ধার!
মনে বড় সাধ যদি ফিরে পেতাম
সেই হারানো দিনগুলি আবার!

বাবার বকুনি মায়ের অাদুরে শাসন
বোনের ভালবাসা যায় না ভোলা,
কত প্রিয় ছিল
আমাদের সেই সোনালী ছেলেবেলা!
আজো সামনে দেখি
মহানগরের ইট-কাঠ দালানের মেলা
মানসজগতে ভাসে
শৈশবের স্মৃতি সারাবেলা
চৈত্রের অলস দুপুরবেলা!
কি মধুর ছিল আমাদের ছেলেবেলা!

দুপুরে পরে পড়ন্ত বিকেল
তাঁর বাড়ীর পাশ দিয়ে বার বার;
খোশমেজাজে ঘুর ঘুর করা
তাঁকে দেখানো আমার
বৈশাখী পোষকের বাহার।
লাল শার্ট নীল প্যান্ট
কপালে ট্যাগসহ সানগ্লাস,
মনে মনে ভাবতাম আমিই এ প্লাস!
অন্যসব থার্ড ক্লাস!

ছেলেবেলায় যা ছিল বীরেশ,
সেইদিনের সেই সল্টুর বেশ
মনে পড়ে আজো
মুছা যায় নাকো হাসির রেশ!

সাঝের পরে সব চুপচাপ,
অাফসোস আহা, বৈশাখী মেলা শেষ!
সারা বছর ধরে প্রতীক্ষার প্রহর গুনি
মনে নিয়ে বৈশাখের প্রথম দিনের রেশ!

শাওনাজ, উত্তরখান, ঢাকা।
১২.০৪.২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।