গ্রাম-বাংলার বন্ধন
- আশরাফুন নাহার ২০-০৫-২০২৪

বিড়ালের ছানা দু'টো উঠানে মিঞ মিঞ করে এক সুরে গায়,
মোরগ-মুরগির দল উঠানের সোনা ধান কক ককিয়ে খায়।
কবুতর খোপে বসে আমায় বাকুম বাকুম শেখায়।

এখানে ঘুঘু সারাদিন ডাকে অবিরত,
পদ্ম চেয়ে থাকে বৃষ্টির অভিপ্রায় পদ্ম হয় পদ্যে পরিণত,
আমিও ওদের মাঝে ওদেরই মতো।

ধেনুর পাল চড়িয়ে রাখাল বাঁশিতে গ্রামের ছবি আঁকে,
মেঠো পথের বালুধুলো কী সুখে আমায় ধরে রাখে।

ঢেঁকিতে দাঁড়িয়ে কিশোরী নৃত্যের তালে ধান ভানে,
নতুন ধানের পিঠের ঘ্রাণ আমায় গৃহস্থ্য গৃহে টানে।

আইলে হেঁটে ডাঁটা ক্ষেতে যেতে যেতে দেখি-
ঘোমটা পরা এক কৃষাণবধূ নোলক নেড়ে কয়,
"বাড়ি যাওনের দাওয়াত দিলাম, শোনেন মহাশয়।"
এদিক ওদিক কাঁপে তার কাজল কালো আঁখি,
এ যে আমার বাংলার রূপ মুগ্ধ হয়ে দেখি।

শরতের মাঠ জুঁড়ে কাশফুল সাদা সাদা পালক,
ঐখানে ঘুড়ি উড়ায় ছোট্ট এক বালক।
তারে গিয়ে বলি,"নাম কি তোমার,কোথায় তুমি থাকো?"

সুতো ছিঁড়ে উড়িয়ে দিল ঘুড়ি,
বলল হেসে,"নামটি আমার সবুজ,থাকি মায়াপুরী।
মাঠ পেরিয়ে ঐ যে বাঁশের সাঁকো,
যাবে তুমি সেথায়?
মা আমার তিলের নাড়ু দিবে খেতে তোমায়।"
অতিথির এমন সমাদর ছেলেভোলানো সুখ,
বাংলামায়ের আঁচল তলে নিত্য নেমে আসুক।

পানশী ঘাটে কাদাজল দু' পা মোর মায়ায় জড়ায়,
এমনি করে রাখবে জড়ায়ে কে আছে কোথায়?
সেও যেন বলে-
"মাটিতে এসো হে পরিপাটি,
তোমার আমার অটুট বন্ধন এটাই আপন বাটি।"

গানে গানে কণ্ঠ ছেড়ে মাঝি ভিড়ায় তরী পাড়ে,
ঘাম কপালে গড়ায়,গামছায় মুছে আমায় ডেকে বলে-
"এক এক করে কতজনা গেল ওপাড়ে,
কেউ তো কোনোদিধ আসেনি ফিরে,
তুমি যেও না এ মাটি ছেড়ে-
নদীর কাঁদন,মাটির বেদন এই নাও দিয়েছি ভরে।
তবু মিনতি করি তুমি যেও নাকো ছেড়ে।"

আমার বাংলা,আমার মা,
এমন স্নহ মায়া কোথাও পাব না,
মুঠোতে তোমার মাটি ছুঁয়ে কথা দিলাম,মা
তোমায় ছেড়ে আমি কোথাও যাব না।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

asrafunnahar
০১-০৮-২০১৪ ১৯:৪৪ মিঃ

গ্রামের প্রকৃতিতে আমরা মাটির টান অনুভব করি