মূসা ও ফেরাউন
- দেলোয়ার হোসাইন ২০-০৪-২০২৪

এক কালে ছিল ফেরাউন
ছিল দেশের রাজা,
পানিতে ডুবে মরেছিল সে
প্রভু দিয়েছিলেন তাকে সাজা।।
অহমিকা আর গর্ব ছিল
ছিল শত শত দাস দাসী,
আমিই সবচেয়ে বড় খোদা!
ডেকে বলেছিল শুন হে দেশবাসী।।
একদিন কি যে এক স্বপন দেখিয়া
উঠিল ঘুম থেকে জেগে,
সোনার সিংহাসন তছনছ করিয়া
কে জেন যাচ্ছে ভেগে।।
গণনাকারী গণনা করে বল
কি ছিল সে স্বপনের সার কথা,
নয়ন যোগল হচ্ছেনা এক
ক্ষনে ক্ষনে করছে মাথা ব্যাথা।।
এক মহা পুরুষের আগমন অতি নিকটে
বলল গনক শুন হে রাজা,
ধ্বংস করে তোমার সিংহাসন
পানিতে ডুবিয়ে তোমায় দেবে সাজা।।
বল কি?গর্জে উঠে বলল সে
আমি তোমাদের নিয়ে নেব জান,
আজ থেকে যদি এই দেশে বাঁচে
একটি শিশুর ও  প্রান।।
সত্তর হাজার শিশুর প্রান করিল হরণ
সে জল্লাদ রাজা,
প্রতিবাদ করলে কেউ তাকে পেতে হত
মৃত্যু দন্ডের সাজা।
মূসার আগমন রুখতে,ফেরাউন বসে তখতে 
কত ষড়যন্ত্র করেছে প্রকাশ্যে গোপনে,
আল্লাহর কুদরত, নেই কোন খুঁত
যথাসময়ে এলেন নবী মূসা ভুবনে।।
মহা চিন্তায় পড়লেন মাতা হে অন্নদাতা
তুমি বাঁচাও তাহার জান,
জালিম বাদশাহ শুনলেই হরন করিবে
আমার সন্তানের প্রান।
ছোট একটি বাক্স বানিয়ে মূসাকে দাও ভাসিয়ে
নীল নদের জলে,
তোমার শিশুকে তোমার কোলে দিবেন ফিরিয়ে
ইলহাম করিয়া প্রভু জননীকে বলে।
ছোট একটি বাক্সে রেখে শিশু মূসাকে জননী
নীল ধরিয়ায়  দিলেন ছেড়ে।
কলিজার বোন দেখছেন ধরিয়ার পানি
ছোট ভাইকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে ধেয়ে।
ফেরাউন,
শুন হে গনক কখন তোমার নড়বে টনক
দেখ আমার শত্রু এসেছি কি ভুবনে,
বিস্ময়কর ভাবে আপনার শত্রু এসেছে ভবে
প্রভু তাকে পাঠাইয়াছে গোপনে।
একদিন নীল নদীর পাশে ফেরাউন ভাবছে বসে
বিবিও আছে তার সাথে,
হঠাৎ বিবি দেখেন ছেয়ে,ছোট একটি বাক্স আসছে ধেয়ে
বিবির কৌতূহলী দৃষ্টি পড়ছে তাতে।
দেখ দেখ স্বামী,ঐ বাক্সে আছি কি,দাসিকে বল
উপরে আনতে তুলে,
ফুটফুটে এক সুন্দর শিশু শুয়ে আছে ফেরাউন যবে
দেখল বাক্স খুলে।
খোলা তলোয়ার হাতে নিয়ে চিৎকার করে বলে ফেরাউন
এখনি দি'খন্ড করিব তার কায়া,
বলল বিবি এত সুন্দর শিশু কি করে হয় তোমার শত্রু
তার জন্য একটুও হয়না মায়া?।
শুন হে স্বামী আজ অবধি দেখিনি আমরা
একটি সন্তানের ও মুখ,
এই শিশুটিকে লালন পালন করিয়া আমরা
মিটাব সন্তানের দুখ।
আল্লাহর দয়ায় ফেরাউনের মনে ভরে উঠল মায়া
শত্রুর ঘরে শুরু হল নবী মূসার লালন।
দেখ আল্লাহর ক্ষমতা শত্রুর মনে দিয়েছেন মমতা
মায়ের দুগ্ধ ছাড়া কিভাবে হবে পালন।
সবাই পড়ল মহা চিন্তায় কারো দুগ্ধ করেনা
শিশু মূসা পান।
দুগ্ধ ছাড়া বাচানো যাবে না এই ছোট্ট
শিশুর জান।।
বোনটি তাহার ছুটিয়া আসিয়া কহিল
শুন হে রানী
সকল শিশু দুগ্ধ করে পান এমন ধাত্রীর
খবর আমি জানি।
উমুক বাড়ি থাকেন তিনি নাহি আসিবেন
হেথায়,
শর্ত শুধু  শিশুটিকে নিতে হবে
তিনি থাকেন যেথায়,
এমনি করিয়া নবী মূসা ফিরিয়া গেল
আপন মায়ের কোলে
রবের ওয়াদা কখনো হয়না মিথ্যা
যখন যাহা বলে।
মায়ের কোলে বড় হচ্ছে মূসা,ফেরাউন দিলেন
সকল খরচের টাকা
বান্দার প্রতি আল্লাহর সাহায্য সব সময়
গোপনে থাকে ঢাকা।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।