দুটো মাছি
- চিন্ময় বসু - চিন্ময় বসু ১৮-০৫-২০২৪

চিন্ময় বসু

১১/৮/১৮

জীবনের রাগী কণা হলো মাছি? কেন তারা এত রাগী? তারা কি আরো কিছু চায়। না মাছি বলেই তাদের এত রাগ। তারা এত রাগী। আমার কোন দোষ ছিল না । আমি তো ঘরেই বসে ছিলাম । সকালে। ওরাও ছিল। তা ওরা আমার দিকে ভেংচি কাটলো; হয়তো ওরা দুখী। হয়তো ভাঙা হৃদয়ের টুকরো। আমি পেপার পড়ছি। ওরা রাজি নয়। একটি তো আমায় আধবেড় দিয়ে ওপরে দেয়ালে মাথার কাছে শব্দ করে বিরক্ত করা শুরু করে দিলো। আর ছোটটা হাতে বসতে চায়। কিছু না বলে উঠছে, নামছে, হামাগুড়ি দিচ্ছে; কে জানে ভগবান কেন পাঠিয়েছে আমার কাছে। লোকের কত কষ্ট, কারুর রাজপাট চলে যাচ্ছে তো কারও ভালোবাসা বৃথা গেল। আর আমার? মাছিরোগ। ও বাবা! হাত নাড়িয়ে ছোটটাকে দূরে সরাবো কি, ও যেন নতুন প্রাণ পেল, দ্বিগুন উৎসাহে আমার মহড়া নিতে তৈরি হলো। আরো জোরে চক্কর কাটলো, আরো কাছে এসে, শব্দ করে আক্রমন করলো। তার দেখাদেখি ওপরের বড়টা গতি বাড়িয়ে নেমে এসে, শব্দ করে, আমার টেবিল ল্যাম্পটাকে বেস করে, হাতের ওপরে ঘুরে চললো। অবশেষে আমার পৌরুষে আঘাত লাগতে আমি খবরের কাগজটা গোল করে পাকিয়ে দমাদম চালাতে লাগলাম আর লক্ষ ভ্রষ্ট হতে লাগলো। ওরা আলাদা হলো হটাৎ, মনে হয় ওদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়লো। আমি বড়টাকে আক্রমন করলাম । ও পা ঝাড়া দিলো, লাথি দিলো। যেন খেঁকিয়ে উঠলো বেশ্যার মত। আবার আমি তৈরি হলাম কাগজের গদা নিয়ে আর ও ধরাশায়ী হল; চটকে মটকে খবরের কাগজটায় লেগে রইলো বিশ্রী ভাবে। কি যেন হয়ে গেল; দিনটা যেন নোংরাটে হয়ে রইলো। আরে মানুষেরও দরকার নেই দেখছি, কি পুরুষ কি নারী। প্রাণী, যে কোনো প্রাণী পারে এরকম করতে, কি আশ্চর্য! ছোটটা এখন ওপরে উঠে গেছে আর আরো জোরে ঘুরছে কিন্তু নিঃশব্দে, প্রায় অদৃশ্যের মত লাগছে। হাতে এসে বসছে না আর। আমাকে আর ঘাটাচ্ছে না, আমিও আর ঘাটালাম না। কাগজটা আর পড়তেই ইচ্ছে করলো না, ঘেন্না হলো। আমি বসে বসে ওই ছোট মাছিটাকে লক্ষ্য করতে লাগলাম। দুজনেই আমরা একই হাওয়া অবলম্বন করে টিকে আছি, বেঁচে গেছি। বেঁচে আছি, মরিনি। দেরি আছে আরো।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।