ভয়ার্ত জীবন
- সীমান্ত শিপন ২০-০৫-২০২৪

বসে আছি বাসে ধীর্ঘ ক্লান্তি নিয়ে
যাচ্ছি টাঙ্গাইল নতুন কলেজে
সামান্য ভুল শোধরানোর জন্য।
হবে কিনা জানি না
হয়তো আরও কাফফারা দিতে হবে
বহু দিক দিয়ে বহু দিন ধরে।

একেবারে পেছনে আমি
পথঘাট, গাড়ি-ঘোড়া কোন কিছুই চিনি না আমি
একেবারেই নতুন সব
নতুন মানুষ, নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশ
নতুন অভিজ্ঞতা।

ঠিক সম্মুখে বাসের করিডোরে
খাঁচায় বন্দী এক জোড়া কবুতর
ক্ষণে ক্ষণে চাইছে আমার দিকে
উৎসুক দৃষ্টি নিয়ে।
তাদের মতো অমলিন চাহনি নেই আমার
তবুও দেখছি তাদের।
দেখছি তাদের নাক, ঠোট, চোখ, চোখের পাতা,
পা আর নীলচে কালো পালক।
ছোট্ট শরীরে কী সুন্দর মিশেল সবকিছুর
দীর্ঘ ক্লান্তি আর যানবাহনের হর্ণ ভুলে
মেতে আছি এখন তাদের নিয়ে
তাদের সৌন্দর্য নিয়ে।
আরেকটু অনুসন্ধিৎসু মনে তাকাতেই
তাদের আসনের নিচে সামনের দিকে
একটি লোমহীন বাচ্চা কবুতর
বসে আছে নির্বিকার নিশ্চল পাথরের মতো
বাবা মায়ের মতো সতর্ক দৃষ্টি নেই তার চোখে
হয়তো বাবা মা কাছে আছে তাই।

বুট আর কলুই ভাঙা খাওয়ায় মেতেছে ওরা
সম্মুখে নিরুদ্দেশ যাত্রা
অথচ ভাবনাহীন পথচলা ওদের।

হঠাৎ বাসের ব্রেক
দুই তিন উল্টানি দিয়ে খাঁচাটি সবেগে ছুটল
দমকা হাওয়ার মতো সামনের দিকে।
প্রাণ ভয়ে চেঁচামেচি শুরু করলো ওরা
নিরুত্তাপ জীবনে পেল ভয়ার্ত অভিজ্ঞতা।

এই তো জীবন ওদের
সব সময় তটস্থ থাকে যাকে নিয়ে
কখন কে হামলে পড়ে ছোট্ট শরীরের উপর
দুপুর বা রাতের খাবারের মেন্যুতে থাকে ওদের নাম
যে ভয়ে ভীত থাকে ওরা সারাক্ষণ
সে ভয় আমাদের মাঝে থাকে কতক্ষণ!

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।