রক্তাক্ত তনু
- সীমান্ত শিপন ২০-০৫-২০২৪

বাংলার আকাশে এখন ক্ষুধার্ত শকুনের আনাগোনা
পক্ষী শকুন বিদায় নিয়েছে, মানব শকুনের বিচরণ আজ সারাবেলা
সকাল হতে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা হতে সকাল অবধি এদের পথচলা
হিংস্র হায়েনার মত ক্লান্তিহীন এদের পথযাত্রা
সারাক্ষণ লোলুপ দৃষ্টি ফেলে ওঁৎ পেতে থাকে সর্বত্র
অসহায় দুর্বল নারীদের পবিত্র শরীর এদের শিকার।
শিশু থেকে কিশোরী, যুবতী থেকে মধ্যবয়সী দুহিতাদের
নিষ্পাপ দেহ আজ এদের থাবায় ক্ষতবিক্ষত।
নিষ্কলুষ কণ্ঠের অসহায় আর্তনাদও এদের দমাতে পারে না
দমাতে পারে না করুন চোখের সহস্র ফোঁটা অশ্রুও
উল্লাসে মেতে ওঠে নরখাদকের ন্যায় শিকার শেষে।
অতঃপর উল্লাস থেমে যায় সাথে বোবা আর্তনাদও
অশ্রু গড়িয়ে গড়িয়ে রচিত হয় একটি ট্রাজেডি
যা লেখা হবে না কোন ডায়েরিতে, প্রকাশ পাবে না বইমেলায়
পঠিত হবে না কোন জ্ঞান পিপাসু পাঠকের দ্বারা।
তাড়িয়ে বেড়াবে সারাটি জীবন শয়নে স্বপনে জাগরণে
যন্ত্রনাক্লিষ্ট এক ভয়ানক দগদগে ক্ষত।
বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদবে বারে বার
যেমনটি কেঁদেছিল অসহায় মেয়েটি আমার
ঘনকালো অমানিশা অন্ধকার রজনীতে
কোন এক পাষণ্ড বর্বর লম্পটের পাশবিক নির্যাতনে।

ক্ষমা কর হে সন্তান আমার দুজনেই ক্ষমা করো
শেখাতে পারিনি একজনকে সম্ভ্রম হারানোর বেদনা কি হতে পারে?
নিরাপদ চলার পথ নিশ্চিত করতে পারিনি অন্যজনকে।
তোমাদের জন্ম হয়েছে ভুল সময়ে এক ভুল পিতার দ্বারা
যখন শাসকশ্রেণী মেতে রয়েছে স্বার্থ হাসিলের ধান্ধায়
সমাজ পরিচালিত হচ্ছে সব হিংস্র লুটেরাদের থাবায়।
আমি তুমি -আমরা সবাই বন্দী তাদের নির্দয় মুঠিতে।
"সম্ভ্রম হারিয়েছ কিইবা তাতে ক্ষতি
রক্ত মাংসে গড়া শরীরে সামান্য একটু আঘাত
এতেই এতো বিচলিত কেন, উৎকণ্ঠা কেন এত শত!"
শাসকের শ্লেষপূর্ণ এই তো উক্তি।

যে সমাজ তোমায় সম্মান দিবে না, দিবে না নিরাপত্তা
সে সমাজের বুকে লাথি মারো, মারো সহস্র ওষ্ঠা।
সমাজের পানে চেয়ে আর করিও না বৃথা কাল ক্ষয়
আপন মাঝে শক্তি আনো মুক্ত করো সব লোক ভয়।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।