একমুঠো ভাত
- ফয়জুস সালেহীন ২১-০৫-২০২৪
কাকডাকা ভোর থেকেই শুরু হয় ভিখারিনীর লক্ষ্যহীন পথচলা।
সে ঘুরে বেড়ায় এ দুয়ার থেকে সে দুয়ার,
সে দুয়ার থেকে এ দুয়ারে,একমুঠো ভাতের তরে।
তিনকুলে তার কেউ নেই।
নেই শিকড়,নেই ভিটা- মাটি।
নেই উনুন,নেই হাঁড়ি,নেই ঘটি।
নেই কাঁথা- বালিশ -পাটি।
নেই তার একজোড়া চটি।
সম্বল তার কোলের ছাওয়াল,পিন্ধনের ছেঁড়া শাড়ি আর একটি ভাঙ্গা বাটি।
স্বামি তার নিরুদ্দেশ তিন তিনটা পেট চালানোর অক্ষমতায়,
নয়তো ট্রেনের নীচে কাটা পড়ে বেওয়ারিশ।
সাধ করে বেছে নেয়নি সে ভিক্ষাবৃত্তি।
কে তাকে কাজ দিবে?
যেখানে বিশ্বাসেগুলো সব করেছে ত্যাগ শেষ নিঃশ্বাস।
সেতো নাম পরিচয়হীন!
নাই তার জাতীয়তার সনদ,নাই ভোটার আইডি।
অবশ্য ভোটার হওয়ার কোন খায়েসই তার নেই।
দেশের রাজা হবুচন্দ্র কি গবুচন্দ্র তাতে তার কিচ্ছু আসে যায়না।
সে শুধু খোঁজে একমুঠো ভাত আর একটি কাঁচালন্কা।
তোমাদের মুখরোচক রেসিপিগুলোর দিকে
সে কখনও দেয়না লোভাতুর দৃষ্টি।
ভাতের চাউল মোটা কি সরু, বাসী তরকারীটাতে নুন মসলার তারতম্য সে বুঝেনা বুঝতেও চায়না।
গোগ্রাসে সব গিলে ফেলে সন্তানকেও দেয় কয়েক লোকমা।
না স্নো, পাউডার, আলতা মাখার সাধ জাগেনা তার।
সাধ জাগেনা ঠোঁটে কড়া করে লিপষ্টিক মাখার।
সে শুধু খোঁজে একমুঠো ভাত,
একটি কাঁচালন্কা বড়জোড় একটি কাঁচা পেয়াজ।
পূর্ণিমার আলোও স্পর্শ করেনা তাকে।
সে রাখেনা খবর দিন, মাস,তারিখের।
স্বপ্ন? না স্বপ্ন দেখেনা সে।
ভিখারিনীর যে স্বপ্ন দেখতে নেই।
তবে সে একমুঠো ভাতের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।
আর ঘুম থেকে উঠেই বেরিয়ে পড়ে একমুঠো ভাতের আশায়।
১৭/১২/২০১৪
মন্তব্যসমূহ
এখানে এপর্যন্ত 7টি মন্তব্য এসেছে।
মন্তব্য যোগ করুন
কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।