অদ্বি || বাবা সংখ্যা
- আজাদ বঙ্গবাসী - লিটলম্যাগ ২৪-০৪-২০২৪

উৎসর্গ: পৃথিবীর সব বাবাকে সূচিপত্র কবিতা ♦মুহাম্মদ নূরুল হুদা ♦আনিসুল হক ♦ফরিদ আহমদ দুলাল ♦মুজিব ইরম ♦সমর চক্রবর্তী ♦আদিত্য নজরুল ♦চাণক্য বাড়ৈ ♦লতিফ জোয়ার্দার ♦আজাদ বঙ্গবাসী ♦ ইমরান মাহফুজ ♦শফিনাজ শিরিন ♦সাদী কাউকাব ♦হিরণ্য হারুন স্মৃতি ♦অনিরুদ্ধ দিলওয়ার ♦আনোয়ার কামাল ♦হাসান জামিল মুহূর্তের অনুভূতি ♦আমির চারু বাবলু ♦ শামীম হোসেন ♦সেজুল হোসেন ♥♥♥ বাবা || মুহম্মদ নূরুল হুদা যেদিক যাবা, যাবা মনে রাখবা বাবা আমার বাবা আসল বাবা মুখজোড়া যার কাবা। কাবার দিকে মুখ ফেরালে বাবা পাওয়া যায়, বাবার দিকে মুখ ফেরালে কাবা পাওয়া যায়। যেদিক যাবা, যাবা মনে রাখবা বাবা দিনদুনিয়ায় আল্লাহ্-রসুল তারপরেই বাবা। ♥♥♥ বাবাকে নিয়ে আনিসুল হকের দুই পঙতি আব্বার আঙুল আমার মুঠো, আমার আঙুল পদ্যর মুঠো ♥♥♥ উত্তরাধিকার || ফরিদ আহমেদ দুলাল বাবা ছিলেন আমার সহজ সরল এক মাটির মানুষ তার ঔরশে কী করে যে এলাম আমি সে এক বিস্ময়, যখন বঞ্চিত হই- আমার মাথায় কেউ যখন কাঁঠাল ভেঙে খায় মনে মনে ভাবি, এই তো বাবার যোগ্য পুত্র আমি; নাট্যপাগল ছিলেন বাবা তার অনুসারী হলাম অজস্র উজানের স্রোত ঠেলে পরিপার্শ্ব-সমাজ যখন আমায় গালমন্দ করে বর্তে যাই নির্লোভ বাবার পুত্র বলে। বাবা ছিলেন আমার গৌরবর্ণ সুদর্শন গৃহস্থ পুরুষ আমি যে কীভাবে কৃষ্ণবর্ণ নাগরিক হলাম তা ভেবে মরি, ভালোবেসে তুমি যখন ঘনিষ্ঠ হতে ডাকো নিরিবিলি ভাবি, এই তো বাবার সুযোগ্য উত্তরাধিকার বৃষ রাশির জাতক। ♥♥♥ পিতা || মুজিব ইরম এতোটাই পুত্রময় আছি... পৃথিবীর শিশুগুলো আমার পাঁজরে এসে দিয়ে যায় পিতৃত্বের ওম। সন্ত ওরা, হাসিগুলি নিরাময়ী- নিয়ত নতুন। আমি রোজ পুত্র হতে চাই। পৃথিবীর শিশুরাই পেয়ে যাক পিতার মুকুট। ♥♥♥ বাবার স্বপ্ন || সমর চক্রবর্তী আমার বাবার মুখে বাবার সেই মুখ দেখতে পাই না এ্যাখন পলিমাটির স্নিগ্ধ উজ্জ্বল কৃষিরঙে আঁকা মায়াময় সে শ্যামলে বদলে যাওয়া স্বপ্ন্ঋতুর নির্যাতন চিহ্ন দেখি ! জলরঙে আঁকা মানবতার উদ্যানে ক্ষয়ে যাওয়া সময়ের অক্ষম হাহাকার দেখি দীর্ঘশ্বাসের ভাঁজ খুলে তার শুধু স্বপ্ন পোড়া গন্ধ পাই জীবনের ভাঁজ খুলে তার শুধু জীবন পোড়া গন্ধ পাই বাবাকে প্রতিদিন দৃশ্যের ভেতর অদৃশ্য হয়ে যেতে দেখি বাবার চোখে স্বপ্ন ছিলো ভূগোলের ম্যাপ থেকে উঠে যাবে একদিন সীমান্তরেখা মুক্ত নিসর্গে হাত ধরে হেঁটে যাবে জীবন জীবনের সাথে শান্তি-সৌহার্দে্যর মানবিক বাতাসে বেড়ে উঠবে মেধাবী সন্তান তাঁর, পূর্ব পুরুষ থেকে উত্তরকাল তারই গৌরব সৌরভ ছড়াবে উজ্জ্বল মুখ,উচ্ছল বুকে বেঁচে থাকবেন তিনি নক্ষত্র’র আলোয় ,নক্ষত্র’র জন্মদাতা । তার বুকের ভেতর নিঃসঙ্গ স্বপ্নসমুদ্রের বিদীর্ণ গভীরতা দেখতে পাই লীলাবতী সে মোহরঙ মোহনায় এসে বর্ণিল আগুনের মরুভূমি হয়ে যায় ! বাবা স্বপ্ন দ্যাখেন ,লাল স্বপ্ন নীল স্বপ্ন হরিৎ-ঐশ্বর্য বিমূর্ত স্বপ্ন স্বপ্নগুলো সূর্যভূক ঘোড়া হয়ে ছুটে যায় আলেয়ার প্রান্তরে বাবা তবু স্বপ্ন দ্যখেন- ফুলের বাগান থেকে দুঃস্বপ্নের সাপ তাড়াতে তাড়াতে স্বপ্ন দ্যখেন, বিপ্লবী অশ্বারোহী সন্তান তার এসেছে ফিরে পিতৃভূমির দাবীতে হাতে তার সুলেমানী তরবারি । উদয়াস্ত সমান সোনালিখোয়াব বুকে পুষে মৌনবৃক্ষ হৃদয়ে হৃদয়ান্ধ বাবা আমার দ্বাবিংশ শতাব্দীর আকাশে খোঁজেন সবুজ নিঃশ্বাস ঘর থেকে জানালায় চোখ রেখে খুঁজে ফেরেন আকাশের পরিসীমায় জীবনের আয়তন । তার বিশ্বাসের উৎস ভূমি নিচু হতে হতে ক্রমেই হয়ে যায় রঙিন গর্তের সুড়ঙ্গপথ ! বাবা, আমি তোমার গহীন গহনে নিসর্গ পোড়া গন্ধ পাই, সন্ত আত্মার সুফলা বীজগুলোকে আগুনের আঙিনায় ভোরের শিশিরের মতো ঝরে যেতে দেখি ! মনে পড়ে- মুক্তির মিছিলের মতোই সাহসী ছিলে তুমি এভারেস্ট চুড়ার উন্নত শিরে পরেছিলে ব্যক্তিত্বের মুকুট শত সংঘাত বুকে বয়েও ভিড়াও নাও জাহাজ বাণিজ্যতীরে সময়ের প্রলোভোন ফিরে গেছে বারবার পরাজিত বিবেকে । বাবা .আমি তোমার স্বপ্ন-সংগ্রাম দিনের কথা বলছি সৃষ্টি উল্লাস পুষ্পফলা কালের কথা বলছি তুমি বলতে,আমি শিক্ষক আদি পুরোহিত দ্বিতীয় জীবন পিতা শাশ্বত প্রেম আমি,জীবন চেতনা বিকাশ ধারার । স্কুলের সবুজ মাঠের আলপথে যেতে যেতে আকাশে পাখির ঝাঁক উড়ে যাওয়া ধানের ক্ষেতে কৃষকের সোনালি হাসি নদীতে মাছের অবাধ সাঁতার দেখে,স্বাধীনতা-স্বাধীনতা সঙ্গীত ধ্বনীতে নেচে উঠতে ধমনীময়, কিশোরী সবুজ ধানের ছড়া বুকে জড়িয়ে পরম স্নেহে বলতে,বল খোকা,জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী; বিস্ময় চোখে আমি তাকিয়ে থাকতাম ! তুমি বিপ্লব ,চেতনা জয়ের কথা বলতে বোধিবৃক্ষের মৌনতার কথা বলতে বলতে, জানিস খোকা ,আসলে মানুষের কোনো সৌন্দর্য নাই সৌন্দর্য তার আত্মা,মানুষ তার আত্মার সৌন্দর্য রূপ ধারণ করে ... তোমার কণ্ঠে সেদিন জীবন উচ্চারিত ছিলো বাক্যে প্রেম-প্রেরণা উজ্জীবিত ছিলো গভীরতায় অভিজ্ঞতা বর্ণিত ছিলো । তুমি বলতে,পা পথের আড়াআড়ি পথ আছে খোকা জীবন পথের কোনো আড়াআড়ি পথ নাই জীবন সংগ্রামী না হলে মানুষ ব্যাধি হয়ে বাঁচে । মানবতা, প্রেম শেখাতে চেনাতে তুমি মাদার তেরেসার হৃদয় আশ্রম , সংগ্রাম শেখাতে শোনাতে নেতাজীর জীবন শান্তি বোঝাতে শেখাতে মহাত্মার অহিংস আন্দোলন স্বাধীনতা বোঝাতে শোনাতে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠস্বর জীবনের প্রেরণা ছিলো তোমার রবীন্দ্রনাথ । বিপন্নঋতুর আগুনডানায় স্বপ্নজাল চোখে তুমি কখনো মাষ্টারদা,কখনো প্রীতিলতার কণ্ঠ হয়ে যেতে, নজরুলের কবিতা বিদ্রোহে চেতনার প্রদীপ জ্বালাতে অন্তরে। তোমার ভেতর তখোন অরণ্য ছিলো ,সমুদ্র ছিলো ছিলো অসীম আকাশ ! তেমার চোখের স্বপ্নগুলো দুঃসময়ের মধ্যেও জেগে থাকে আজকাল আছন্ন সময় ঘিরে রাখে সরল জীবন লৌকিক জীবন গিলে খায় আত্মার পবিত্র রক্ত; অতিক্রান্ত স্বপ্নঋতু ভেসে যায় জলডানায় হেসে ওঠে চোখ আগুন পানের তেষ্টায় । স্বপ্ন দেখে দেখে ক্লান্ত চোখ এ্যখন দুঃস্বপ্নের ফসিল ! আলপথ উঠে যাওয়া সড়কের মতোই বুক তোমার সংস্কৃতি বিলুপ্তির আকুতি মেখে নুয়ে আছে বাবা তোমার ভাষার বাক্যে কোনো ভাষাই খুঁজে পাই না এ্যাখন ভাঁজ খুলে শুধু দগ্ধ প্রাণের গন্ধ পাই । বাবা ,তোমার চোখের স্বপ্নগুলো মিছিল হয়ে আমার সামনে দাঁড়ায় ঘেরাও করে প্রকাশ্যে আমার যতো প্রকাশ আমি বার বার ফিরে যাই অসীম সে হৃদয়তীরে- শাহজাহান হয়ে যে চোখে তুমি গড়েছিলে তাজমহল সাজিয়েছিলে তীতুমীরের বাঁশের কেল্লা সীতারামের ঘোড়া হয়ে ছুটেছিলে মানসিংহের দূর্গে, সাজিয়েছিলে আপন আঙিনায় ঈশাখাঁ’র রাজধানী আমি তোমার সেই সমুদ্রচোখের নিচে নতজানু হয়ে আছি বাবা তোমার স্বপ্নগুলো আমার চোখে জীবন্ত এক একটি শহিদ মিনার । আমি আক্রান্ত এক ভূমিকার নেপথ্যে সংক্রামক আর এক ভূমিকা লিখি,বাবা স্বপ্নের শিল্পঘরে সিঁদ কেটে ঢুকে পড়া রঙিন সে বাণিজ্য ভূমিকা- বুকের গোপনে গচ্ছিত স্বপ্ন থেকে খুলে নেয় ওরা জীবনের চাকা শিল্প-সুষমায় বিষ ঢেলে জ্বেলে দ্যায় বুকে কামনার বহ্নি ক্ষুধার্ত হৃদয়ে স্বপ্ন বিক্রেতা যাদুকরের ঘরে জীবন সন্ধানে আমিও সুখক্রেতা ক্রীতদাস হয়ে যাই ! বাঁকা পথে ছুটে যাই সরল গন্তব্যে... তুমি বলতে, লাইফ ইজ নট ডিফিকাল্ট,বাট উই মেক সো ! বর্ণিল সময়ের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হাসতে হাসতে ছিঁড়ে ফেলেছিলাম সেদিন শান্তি-সৌন্দর্যের অভিজ্ঞান, পায়ে ঠুকে উল্টে ফেলেছিলাম জীবন বোধের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ! দূরাতিক্রমের সিঁড়ি ভেঙ্গে স্খলিত পায়ে দীর্ঘ যাত্রায় অমি চলছি হেসে ভেসে আমার নির্মাণ ক্যাবলই ভেঙে যায় ,বাবা কী যে সুখময় যন্ত্রনা ,ভেঙে যেতে দিতে ! হাসতে হাসতে কতো স্বপ্ন ভেঙেছি তোমার গোপন হৃদয়ের কতো আনন্দ,সুখ ভেঙে মা’র জীবন রাঙিয়েছি রক্তাক্ত অন্ধকারে... ”টাইম এ্যান্ড টাইড ওয়েট ফর নান”-গুরুগম্ভীর সে কণ্ঠস্বর হৃদয়ে আমার থেমে থেমে ঝংকার তোলে দুঃসময়ের বন্ধু কেউ নেই দুধের বেড়ালেরা এসেছিলো একদা চেটে-পুটে খেয়ে গ্যাছে ভাঁড়ার অন্ধকারে ; আমাকে অন্ধ করে- বুঝিনি ,সময় এ্যাতো অসহায় সময়ের কাছে অতীত ভুলের মূল্য দেবার তার নাই তো সময় সামনে এগিয়ে যাবার তার শুধু তাড়া আছে... ক্ষমা করো ক্ষমা করো বাবা আমি তোমার স্বপ্ন হন্তারক সন্তান নিসর্গের আলোক-প্রান্তরে অবাধ্য,অপরিনামদর্শী শুধু জেনে রেখো নই কু-সন্তান ! মহাপ্রকৃতির মহাপ্রেম আমি, শুধু সময়ের অবহেলা বাবা, তুমি স্বপ্নলোভী পিতা আমি তোমার দুঃখমাখা গৌরব ! ঢং ঢং ঢং বাবার স্বপ্নপোড়া দীর্ঘশ্বাসে বেজে ওঠে সাতান্ন বছর চোখ থেকে বুক থেকে নিভে আসে ক্রমশ স্বরবর্ণ ব্যাঞ্জন বর্ণের কোলাহল ভোরের নদী- গোধূলির ছায়া -সবুজ তৃণে কতো রঙিন পালক ফেলে উড়ে যায় সজল চোখের পাখি স্বপ্নেরঘরে খিল এঁটে আধখোলা জানালায় বাবা তাকিয়ে থাকেন হেলান দিয়ে পিএফ গ্রাচ্যুইটি, কোমল হাতে মাঝে মাঝে ছুঁইয়ে দ্যাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত সার্ভিসবুক চোখের অসংখ্য বৈদ্যুতিক তারে ঝুলে থাকে অন্তর্মুখি স্ত্রী কুমারী কন্যা বেকার সন্তান-সন্তুতি ... ♥♥♥ বাবা || আদিত্য নজরুল দো-ফসলি ভুঁইয়ের মতো ছিলেন আমার বাবা; কৃষিকাজ এবং শিক্ষকতা করে বাবা সংসার কে একটি সুখের সরোবর বানিয়েছিলেন। মা সেই সরোবরের ঘাটে পা ডুবিয়ে একা একা কি যেনো ভাবতেন। এই দৃশ্য দেখেও নিরুদ্বিগ্ন মনে জলের উপর ভেসে বেড়ানো পাখিদের মতো মনে হতো বাবাকে। বাবার দু’চোখ কখনো কখনো বাড়ির পাশের উচু শিমুল গাছটির লাল ফুল ফুটতো। ভুঁইবাড়িতে ধান কাটার মৌসুমের মতো তখন মায়ের ব্যস্ততা বেড়ে যেতো। দো-ফসলি ভুঁইয়ের মতো ছিলেন আমার বাবা ♥♥♥ অলৌকিক মাস্টার || চাণক্য বাড়ৈ বাবা, তোমার ওই সফেদ পাঞ্জাবিটা উত্তরে বাতাসে দুলিয়ে, হাওই চপ্পলে তুলে চট্ চট্ শব্দ, কখনো যাবে না-- আমাদের পরিচিত রাস্তা দিয়ে হেঁটে কখনো যাবে না তুমি, অলৌকিক মাস্টার... সুকান্তের রানারের মতো পিঠে নিয়ে বিদ্যের বোঝা, মাথায় রঙচটা অতিকায় বর্ষাতি এক, ঘড়ির কাঁটার সাথে তাল রেখে চলে যেতে আপন কার্যালয়ে। তোমার স্কুলে যাওয়া কখনো দেখিনি, শুধু ঘুম থেকে উঠে যেখানে ঝুলত ঘড়ি সেই কড়িকাঠ, আর পুরোনো কোটের পকেট, যেখানে রেখে দিতে মোটা ফ্রেমের চশমা-- দেখেছি সাহারার শূন্যতা। সেই কখন নাকে-মুখে খেয়ে অর্ধসেদ্ধ চাল বেরিয়ে পড়েছ তুমি জীবীকার খোঁজে। আর পরিত্যক্ত বিছানাজুড়ে রেখে গেছ অশেষ মমতা। কখনো দেখিনি এমন, কোনো ঝড় অথবা অসুস্থ্যতা কোনো তোমাকে রেখেছে ধরে। মায়ের করুণ আকুতি,‘শরীরটা খারাপ বড় আজ যদি ছুটি নাও, কী এমন ক্ষতি ?’ সকৌতুকে করেছ উপেক্ষা। আজ কোনো ঝড় নেই, এক টুকরো মেঘ নেই সুনীল আকাশে, আজ কেন বসে আছ বেছে নিয়ে উঠোনের নিভৃত কোণ বিপুল আলস্যে বসে কী ভাবছ অমন? যৌবনের প্রথম প্রাতে দোলা দিয়ে যাওয়া একখানি মুখ, যাকে আর বড় বেশি মনে পড়ে না , নাকি ফেলে আসা জীবনের নোট বুক খুলে ছোট ছোট চিরকূট নিয়ে মেলাচ্ছ নির্ভুল হিসাব-- কতটুকু চেয়েছিলে আর কতটুকু পেলে ! চোখে-মুখে মেখে অলীক মেজাজ আর দাঁতে দাঁত চেপে আহা,কাকে দেখাচ্ছ অমন ধমকের ভাব , তোমার সামনে নেই অবাধ্য ছাত্র কোনো। চোখ খুলে চেয়ে দেখ, তোমার সামনে শুধু খাঁ খাঁ শূন্য উঠোন। আজ কোনো তাড়া নেই উৎকণ্ঠাও নেই আজ ঘণ্টা বাজার এই ভাবে বসে থাকো, সারা দিন বসে থাক কাঠের চেয়ারে। তুমি স্কুলে জেনেও যারা নিতান্ত অভ্যেসবশে দিত ডাক-- ‘বাড়ি আছো মাস্টার ?’ তারা আর ফিরবে না। ♥♥♥ বাবার গল্প ||লতিফ জোয়ার্দার বাবা তোমাকে মনে পড়ে খুব অথচ তোমার কোন স্মৃতি নেই আমার কাছে পড়ে খুব অথচ তোমার কোন স্মৃতি নেই আমার কাছে এমনটা কেন হয় বলতে পারো! আমি আমার ঘর গেরস্তালি তন্য তন্য খুঁজে তোমাকে পাই না। তোমার হাতে লাগানো যে কয়টি বৃক্ষ ছিলো তাদেরও রক্ষা করতে পারিনি। তুমি তো জানো আগুনে যেদিন আমাদের ঘর পুড়ে গেল সেদিন পাড়াময় শুধু আগুন আর আগুন। সেই আগুনে সব পুড়ে গেল!পুরনো আর কিছুই রইলো না আমাদের হাতে। তোমার একটা ছবি ছিলো আমার মেঝ ভাইয়ের হাতে। তুমি চলে যাবার পরে সেই ছবিটাই কয়েক বার নেড়েচেড়ে দেখেছিলাম। অতঃপর সেই ছবিটাই একদিন হারিয়ে গেল। সেই সাথে মনে হয় তোমাকেও হারিয়ে ফেললাম আমি এখন আর তোমার কোন স্মৃতি নেই আমার কাছে অথবা তোমার কোন ছবি মাঝে মাঝে সব পিছন স্মৃতির কাছে প্রশ্ন করি। তোমাদের আরকাইভে আমার বাবা নেই কেন? এখনো কোন বালক যখন তার বাবার হাত ধরে হেঁটে বেড়ায় কিছু সময়ের জন্য সেই বালক হয়ে যাই আমি বাবা তোমার মনে পড়ে কত বড় সংসার ছিলো আমাদের মা বলতো মাঝে মাঝে তুমি বড় ক্লান্ত হয়ে যেতে ঘরে ধান নেই। মাঠে কাউন চিনা! তোমার কপালে কত্ত বড় চিন্তারেখা সেদিন কাউকে বুঝতে দাওনি ...গ্রামময় কেউ জানে না আমাদের ঘরে অভাব ছিলো তোমার রেখে যাওয়া সম্পদের আমি যেমন একজন অংশিদার আমিও দেড়বিঘা জমি পেয়েছি তোমার। কিন্তু এসব চাইনি আমি কখনো কোনদিন আমি তোমাকে চাই বাবা। তোমার হাতে হাত রেখে অদূর ভবিষ্যত পাড়ি দিয়ে চাই। ♥♥♥ হলনা উড়াল পাখি দেখা || আজাদ বঙ্গবাসী বাবা, এই ত সেদিন! কোলের ওপর শুয়ে নীল পথে চলে গেলা পৃথিবীর আলোক রেখা কেটে যাবার পর আর কোনদিন প্রাণ খুলে ডাকতে পারিনি তোমায় কত করে তাকিয়ে ছিলাম উড়াল পাখিটি দেখবো কেমন করে উড়ে যায় মায়া ছেড়া ডানা মুহূর্তের বিচ্ছেদে অদৃশ্য হবার ঘোষণা উঠলো কান্নার রোলে স্মৃতির ব্যবচ্ছেদ কেটে কত সান্ত্বনার হাত... তাতেই কি বাবার ব্যথা ভোলা যায়! মায়ে চোখে, ভাই মুখে, পাড়া-পড়শির আক্ষেপে কি মহৎ হয়ে আজও তুমি ফির বাবা! তাজা মাটির বুক ভরে গেলো ঘাসে রাতের জোছনা ঘোর অমানিশা সকাল দুপুর সন্ধ্যা ঘড়ির কাটায় যাচ্ছে কেটে বাবা ডাকের ব্যথা আমার কাটছেনা... ♥♥♥ দ্রুপদী নক্ষত্র || ইমরান মাহফুজ অসুখের পৃথিবীতে- বাবা বেঁচে আছেন বলেই বয়স্ক রাতে নির্ভয়ে করি পদচারণ আবছায়ার ভেতরেও শংকাহীন দূর্বার গতিতে চলি. অজানা মাল্টিপথে বাবার দৃশ্য আবিষ্কার করে বিজয়ানন্দে আগামীর পথ হাটি বাবা বেঁচে আছেন বলেই সত্যের দীপ্ত শিখা-- পদ্মফুলের পাপড়ির মতো দু’হাতে আকড়ে ধরি মনে হয়- দ্রুপদী নক্ষত্রের মতো বাবা প্রতিটিক্ষেত্রে আমাদের চেয়ে রাখছেন। ♥♥♥ বাবার সমান বড় হতে চাই || শফিনাজ শিরিন পাশাপাশি বাবা আর আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলতাম - বাবা দেখতো তোমার সমান হয়েছি কিনা? কখনো মায়ের হিল পরে, কখনো নিজের পায়ের আঙুলে ভর করে বাবাকে বলতাম বাবা আমি প্রায় তোমার সমান বড় হয়েছি। বাবা বলতেন ধুর বোকা এভাবে বড় হওয়া যায়? মন দিয়ে লেখাপড়া কর তাহলেই বড় হবি। ছোটবেলায় বাবাই প্রথম শিখিয়েছেন অ আ ই তারপর ' লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয় ' কিংবা 'বড় যদি হতে চাও, ছোট হও তবে' - আমি বুঝিনা এসবের সাথে বড় হওয়ার কী সম্পর্ক! একদিন দেখি বাবা শাদা কাপড়ে শুয়ে আছে। কীভাবে মাপ দিব বাবার সমান হয়েছি কিনা? বাবাকে নিয়ে যাওয়া হলো ঘর ছেড়ে চৌকাঠ মাড়িয়ে ওই আকাশে... দূরত্ব যে আরো বেড়ে গেল ! আমার কানে বাজতে থাকে স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ, টাইম এ্যান্ড টাইড ওয়েট ফর নান... সময় কি তবে পেরিয়ে গেল বাবা? আর মেপে দেখতে পারি নি বাবার সমান হয়েছি কিনা বাবা আকাশের নক্ষত্র হয়ে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘজীবী হয়েছে আর আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে বড় হবার বাসনায় রোজ ছোট হতে থাকি... ♥♥♥ বাবা || সাদী কাউকাব আমাদের বাবার পল্লবের অভাব তিনি চির অভিনীত বট গাছ আমরা পড়েছি হিমালয় প্রেমে প্রজ্ঞায় বড়ো হতে বলে বাবা বাবাই কেবল বড়ো হয় ♥♥♥ বাবা || হিরণ্য হারুন আমি ঈশ্বরকে দেখিনি— বাবা বলেছে ঈশ্বরকে ভালোবাসতে। বাই দ্য ওয়ে, বাবা আমাকে ভালোবাসে, আমি ঈশ্বরকে ভালোবাসি। ♥♥♥ বাবাকে নিয়ে স্মৃতি আমার আব্ব আয়ুব আলী বেঁচে থাকুক || অনিরুদ্ধ দিলওয়ার আমি আব্বা ডাকি। টঙ্গিবাজার উনার কাপড়ের দোকান ছিল। আমার ছোট ভাই বোনদের রেখে আব্বার কাছে একমাত্র আমিই যেতে পারতাম। আমার মধ্যে ছিল দারুণ অভিনয় ক্ষমতা-আমার চিৎকারটা আব্বা সহ্য করতে পারতেন না। বাধ্য হযে উনার কাপড়ের দোকানে নিযে যেতেন। বড়রা যখন চা খেতো আমার জন্যও এককাপ বরাদ্দ থাকতো। গরম চা আব্বা পিরিচে ঢেলে দিতেন। দুপুরে এক থালায় ভাত খাওয়া। বিকাল হলে মজমায় সাপের খেলা। খুবই আনন্দে কাটত সারাদিন। বাড়িতে আসার সময় এক ঢুঙা মজা নিযে বাড়ি ফিরতাম। সবাই আমার পিছনে লাইন ধরত। আব্বাকে আমি ছাড়া সবাই বড় রকমের ভয় পেত। আব্বা প্রচন্ড রাগি। কারো কিছু দরকার হলে মা্‌ আর না হয় আমাকে বলতো। আমার ভাই বোন কখনও কখনও প্রতিবাদি হযে হযে ওঠতো। আমি কেনো এত বেশি বেশি মজা খাই। আমি বলতাম কান্নাকাটি যেহেতু আমাকে করতে হয়-ভাগটাতো আমারই বেশি। ওদের কে কৌশল শিখিয়ে দিতাম তাতেই কাজ হতো না। একেক জন মহা অপরাধির মত পালিয়ে বেড়াতো। সব চেযে বড় কথা আমি তখন থেকে আব্বা মা র খুব কাছকাছি থাকতাম। বাড়ির বাইরে খুব কম যেতাম। আমাদের বাসায় যারা আসতো তাদের সাথে খেলতাম। কারো বাড়ি বা কোথাও যাওয়া আমার পছন্দ ছিল না। বলা যায় বন্ধুহীন বেড়ে ওঠা। আমি মনে করতাম আমার সব চেযে বড় বন্ধূ আমার মা আর আব্বা। আমাদের বাড়িতে একটা ছোট্র পুকুর ছিল বলে আব্বা কোলে নিযে সাঁতারটা শিখিযেছেন। এ ছাড়া আর কোন খেলাধূলা একদম জানিনা। আরেকটা কাজ পারতাম আমাদের টিনের চালে বসে ঘুড়ি ওড়াতাম-তাও অল্প সূতায়। কেউ কাটতে এলে টেনে নামিযে নিতাম। একটা ঘুড়িই আমার এক বছর চলে যেত। আব্বা নিজ হাতে বানিযে দিতো। আমাদের বাড়ি সবাই যখন অন্যের বাড়ি টিভি দেখতে যেত- আমার খুব খারাপ লাগতো। আমাদের এত ভাই বোনদের খোরাক আবার তাদের লেখা পড়ার খরচে আব্বা হিমশিম খেত। মা র সাথে আব্বার ঝগড়া লেগেই থাকত। বাসায় যেদিন প্রথম টিভি নিযে এলাম সবাই খুব খুশি এবং অবাক। সব চেযে খুশি হযেছে আমার মা।আলিফ লায়লা দেখার জন্য মাকে আর অন্যের বাড়ি যেতে হবে না। এখন আমার মা নেই। আব্বা আছেন।বেকার বলে বাসায় থাকি ঠিক আগের মত। বাইরে খুব কম যাই। মাঝে মধ্যে কবিতা লেখার সূত্রে জামতলা কবিদের সাথে আড্ডা দেই। আব্বা হাটতে পারেননা- হুইল চেয়ারে বসা থাকে। দুইতলা থেকে প্রতিদিন নিচে নামাই। আব্বা উনার জন্ম ভিটায় যান। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিযে থাকেন। অচিরে “আয়ুইব আলী টাওয়ার” নামে ভবন হবে বলে আশা রাখি। ততোদিন আবার আব্বা আইয়ুব আলী বেঁচে থাকুক। আমিন। ♥♥♥ বাবার ছবিটি যেন হারিয়ে না যায় ।। আনোয়ার কামাল ছোটবেলাকার আমার কোন ছবি সংরক্ষণ করা নেই তবে কি সে সময় ছবির কোন চলন ছিল না! নিশ্চয় ছিল। বাবা আমার এ সবে বিষয়বৈরাগ্য ছিলেন আর মা, সে তো সংসারের হাড়ি সামাল দিতেই ক্লান্ত পরিশ্রান্ত তাই আমি বাবার একটি ছবি অনেক যত্নে রেখেছি। মাঝে মাঝে ছবিটি বাড়িতে থাকা আমার একমাত্র অস্থাবর সম্পদ টিনের বাক্স থেকে সযত্নে বের করে বাতাসে শুকিয়ে রাখতাম। পাছে ছবিটি হারিয়ে ফেলি এই ভয়ে একদিন তার ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করাতে বন্ধুরা শত-শত লাইক দিলেন, রাতা-রাতি ছবিটি বিখ্যাত হয়ে গেল। বাবার ছবিটি আর হারাবে না। ফেসবুক তাকে বুকে ধরে রাখবে আমি যেমন বুকের ভেতর আগলে রেখেছি। আমি আর কতদিন তাকে আগলে রাখতে পারবো? একবার বাবা ঢাকায় আমার বাসার ডাক্তার দেখাতে এলেন আমি তার চিকিৎসা শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী করবস্থান, রমনা পার্ক, সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তর এর সামনে অনেক ছবি তুললাম। বাবার সে সব ছবি কিন্তু আমি বন্ধুদের জন্য ফেসবুকে শেয়ার করেছি ছবিগুলো আর হারাবে না। ♥♥♥ আব্বা || হাসান জামিল আব্বার লগে আমার অত মোয়ামিলা নাই, দোস্তি নাই, আছিলো না কোনো দিন। আব্বায় বড় রাগি মানুষ। বিরই তার একটা সাইকেল আছিল, চাইপা সে দৈত্যের বাজার যাইতো, উট পাখির মত ঠ্যাং। সেই সাইকেল টুংটাং করলে আমরা ডরে হিম হয়ে যাইতাম, আমাদের বুকের বাজনা থাইমা যাইত। বোয়াল মাছে একবার তার বরশি নিয়া গেছিল বইলা আব্বায় সব ফিশিং রড ভাইঙা ফালছিল! শোনা যায় সে নাকি আরো বেশি রাগি ছিল বয়সকালে। আমি দেখি নাই। কিছুটা দেখছে আমার বড় দুই ভাই। তারাতো আব্বারে তুমিই বলতে পারে নাই, আব্বার চেহারা মুবারকে একদৃষ্টে চায়া থাকতে পারে নাই। আব্বা গো... আব্বার গতরে আর অত তাগত নাই। রাগ নাই। তা বলে দোস্তিও নাই। আব্বা দৈত্যদের সাথে দোস্তি করে রাইত কইরে ফিরত। একটা কি বারটায় গ্রামদেশ। আম্মা হ্যারিকেন নিয়ে বইসে। টেনশনের কিছুটা আমরাও পাইতাম, ফোনতো আছিল না। এখন এইটা তারে ফিরতি দেই। আমি দেরিদেরি কইরে ফিরি, কবিগিরি কইরে। সে ডিমলইট জ্বালাই বইসে থাকে। তার দৈত্যদিনের স্মৃতি মনে লয়! আব্বা গো, তোমার পোলায় বদলা নিতে শিইখে গেছে। আমি তারে দান দেই যেই দান সে দিছিল, হাত ধইরা রাস্তা পার করি- যেইমন সে করত, ডাক্তারখানায় নেই- ইতিউতি। সব ঋণ যা যা আছে তার তরে আমি ফিরাই দিতে চাই, রাগ না কইরাই। তোমার আড়ালে কই, তোমার কিন্তু বাঁইচা থাকতে হইবই। ♥♥♥ বাবাকে নিয়ে অনুভূতি আমির চারু বাবলু আমার আব্বার কোন ছবি নেই । দিন দিন আব্বার মুখশ্রী কেমন ম্লান হয়ে আসছে । পাকিস্তানে চাকরি কালীন ও দেশে তাঁর সহকর্মীদের সাথে বেশ কিছু ছবি ছিল আব্বার । সুঠাম দেহ, মোটা গোঁফ , উজ্জ্বল শ্যামলা ছিলেন আমাদের আব্বা । সে গুলো কোন এক বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে । আজ অনেকের পোস্ট দেখে আব্বার কথা বেশ মনে পড়ছে ।আমি প্রতিদিনই স্মরণ করি প্রতি ওয়াক্ত নামাজে । যেদিন জেনেছি দোয়া কবুলের শ্রেষ্ঠ সময় সালাত , আল্লাহর রাসূল সাঃ সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে বেশি বেশি দোয়া করতেন - সহি মুসলিম । সেদিন থেকে এমন কোন সালাত নেই - যা আমি আদায় করেছি, যার শেষ বৈঠকে আব্বা আম্মার জন্য দোয়া না করে সালাম ফিরিয়েছি । বন্ধুরা একদিন নয় আসুন প্রতিদিনই পিতা মাতার জন্য খাস দিলে দোয়া করি আর জিবিত থাকলে সেবা যত্ন করি । মুসলিম বন্ধুরা নিশ্চয়ই শুনেছেন আল্লাহর রাসূল (সাঃ) মৃত্যুর আগে তাঁর গায়ের পোশাক ওয়াস করনী (রহঃ) নামে একজন কে পৌঁছে দিতে আলী( রাঃ) কে অসিয়ত করে জান । কিন্তু কেন ? আমাদের সমাজে এ বিষয়ে বিভিন্ন কথা চালু আছে যেমন তাঁর দাঁত ভাঙার গল্প এর কোন দলিল নেই ,এ গুলো বানোয়াট গল্প, সহি হাদিস থেকে জানা যায় । ওয়াস করনি (রহঃ) আল্লাহর রাসূল সাঃ জিবিত থাকা অবস্থায় ইসলাম গ্রহণ করেন কিন্তু রাসূল সা এর সঙ্গে সাক্ষাৎ না হবার কারণে তিনি সাহাবায়ের মর্যাদা পান নি । তিনি আল্লাহর রাসূল সাঃ কে একখানা চিঠি লিখেছিলেন - "হে আল্লাহর রাসূল সাঃ, আপনার সাথে সাক্ষাতের জন্য আমার মন সর্বক্ষণ অস্থির কিন্তু আমার বৃদ্ধা মাতা অসুস্থ তাকে সেবা যত্ন করার কেউ নেই ।" আল্লাহর রাসূল সাঃ জবাব পাঠালেন - " আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহর পক্ষ থেকে ওয়াস করনির প্রতি - হে ওয়াস করনি , আমার সঙ্গে সাক্ষাতের থেকে তোমার মাতা সেবা যত্নের বেশি হকদার, অতএব তুমি তোমার মায়ের সেবায় নিয়োজিত থাক ।" বন্ধুরা , আসুন প্রতিদিন প্রতি ওয়াক্ত নামাজে সালাম ফেরানোর আগে একবার হলেও পিতা মাতার জন্য পড়ি - "রাব্বানাগফিরলী ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুউমুল হিসাবু ।" অর্থ : হে আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সকল মুমিনকে ক্ষমা কর, যেদিন হিসাব কায়েম হবে। (সুরা ইবরাহিম, আয়াত-৪১) "রাব্বীর হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী সাগীরা ।" অর্থ : হে পালনকর্তা, তাদের(মা-বাবা) উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমনিভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত-২৪) ♥♥♥ শামীম হোসেন আজ বিশ্ব বাবা দিবস। সকালে ‘বাবা’ শব্দটি প্রথম শুনেছি কন্যা প্রণতি প্রাপ্তির মুখে। আমার বাবা এমন বর্ষা ঋতুতেই মাটিসজ্জা নিয়েছেন বছর ছয়েক আগে। তুমুল বৃষ্টি-- বাবা দেহ রাখলেন বর্ষণসিক্ত মাটিতে। একটু ভাবছি, বাবা হিসেবে আমি কতটুকু দায়িত্জ করার সুবাদে যে যৎকিঞ্চিত সময় পাই—সেটিও যেন হাওয়াই মিঠাই। সময় কই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর। কন্যাকে সময় দেবার! হয়তো তাই পৃথিবীতে কোনো না কোনো কারণে বাবারা দুখি থাক খুব… ১৯ জুন ২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।