নিশিকন্যা
- হোসাইন মুহম্মদ কবির - অশ্রুসজল আঁখি ২০-০৪-২০২৪

প্রতিটি রাতে আমি হাস্নুহেনা হয়ে সুবাস ছড়াই,
আর দিনের আলোতে চিহ্নিত
ঝরা কলঙ্কিত শুকনো ফুল গন্ধহীনা;
লোকে থুথু ফেলে,দেখে মুখ ফিরিয়ে নেয়
এ সমাজের বড় বড় নীতিবান যতলোক,
ধর্মীয় সাধু রূপী পুরুষের দল।
অথচ,এরা গভীর রাতের অন্ধকারে নেশায় মাতাল হয় ;
আমার দেহের দুষিত গন্ধরস চুষে পিপাসা মিটায়,
পরিপূর্ণ সুখ পেতে,আমার অঙ্গ রক্তাক্ত করে যায়।
সব'ই আমি নীরবে স'য়ে যাই।
পাপিষ্ঠা হয়ে আমি কখনো বাঁচতে চাইনি,
কিন্তু জন্ম পরিচয়হীন শৈশব কাটেছে পথেঘাটে,
লোকের দ্বারে দ্বারে একমঠো অন্ন খুঁজেছি
কেউ দেয়নি,গলাধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে ;
ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেড়ে ডাস্টবিনে
নোংড়া খাবার খুঁটে,আমাকে বাঁচতে হয়েছে ।
নিজের অজান্তে যুবতী নারী হবার আগেই,
বক্ষের ফুলকলি তখনো ফোঁটেনি ভোমরেরা করেছে ভীর।
লুকাতে পারিনি কোনও আঁচলের তলে,
আঁচল ছিলোনা বলে,
তাই ফুঁটতে পারেনি ফুল ;
ওরা পাপড়ি ছিঁড়ে খেয়েছে শক্তিবলে।
এখন আর লাজ লজ্জার ভয় নেই,
ইচ্ছায় অনিচ্ছায় প্রতি রাতে সাজি, নিশিকন্যার রূপে।
শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা
স্বামী সংসার ভালবাসা মিছে স্বপ্ন
অবহেলিত সমাজে,আমি ঘৃণারপাত্র।
পেটের দায়,সতীত্ব করেছি বিলীন
রাজধানীর জমকালো আলোর আঁধারে,কষ্ট বুকে চেপে,মুখে মিথ্যে হাসি এঁকে,রঙিন সাজে দাঁড়িয়ে গভীর রাতে,আমি নিশিকন্যা।

৬/১১/১৬

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।