বনলতা
- জহিরুল ইসলাম অর্নব - কথোপকথন ১৮-০৪-২০২৪

--কতক্ষণ এলে?
চোখে চোখ তুলে তাকালাম মেয়েটির দিকে। বিষণ্ণ দুপুরে নিজেকে আড়াল করে যেমন ঘুঘু তার একাকীত্বের ঘোষণা দেয় তেমনি মেয়েটি নিজেকে আড়াল করতে চাইলো। এতো দিন পরে চোখাচোখি, হয়তো লজ্জায় পরে গেছে। আমি চোখ নামিয়ে নিলাম। মেয়েটি আবার বললো,,,
--কিছু বললে না যে?
-- দুই বসন্ত পেরিয়েছে।
--কেমন আছো?
--এখনো কৌতূহলী আছো, জানতাম না!!
--উত্তরগুলো গুছিয়ে দিলেও পারো।
--পরকীয়া হচ্ছে না?
-- কেন ডেকে পাঠিয়েছি জানতে চাইলে না?
ঘাড় বাকিয়ে মেয়েটির দিকে তাকালাম। নাকে নোলক নেই। বাঙ্গালি বধূর সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে কি? কয়েক সেকেন্ড পর বললাম,
--কৌতূহল নেই আমার।
--বদলাও নি একটুও।
--ধ্রুব বদলায় না পাগলী
-- অনেক দিন পর,,,
-- সন্তুষ্ট হবার কিছু নেই, অবুঝ মেয়েদের পাগলী বলা যায়।
--জানতাম না।
-- সবাই সব কিছু জানে না।
--তারপর কি করছো?
--এমন প্রশ্ন কর যেগুলোর উত্তর তোমার জানা নেই।
--খুঁজে পাচ্ছি না এখন
--আমি খুঁজে দেবো?
--না, বনলতা কেমন আছে?
--সে এখন নোলক পরে না।
মেয়েটি নাক চুলকিয়ে বলে
--গৃহত্যাগী নারীর নোলক স্যাকরা'র সিন্দুক'বন্দী থাকে।
--গৃহত্যাগী নারী ঘোমটা দেয় কি??
মেয়েটি আমার দিকে এক ঝলক তাকিয়ে বললো
--থাকার একটা ঘর চাই আমার।
--সন্ন্যাসী'দের ঘর নেই
--একটা বুক আছে জানি
--আজ উঠি
--কোন প্রশ্নেরই উত্তর পাইনি
--জীবনানন্দ'কে খুঁজে পাই আগে, উত্তর তিনি জানেন।
উঠে দাঁড়ালাম। যাকে দেখলে মায়া বাড়ে, তার কাছ থেকে দূরে দূরেই থাকা ভালো। মায়া খুব খারাপ জিনিস। বনলতা পেছন থেকে ডাকলো আমায়
"অর্নব?" আমি পিছু না ফিরে হাঁটিছি আপন মনে। হঠাৎ কোথা থেকে যেন একটা ঘুঘু ডেকে উঠলো, কাতর কণ্ঠে,,,, সেই ডাকের মানে আমি জানি, কিন্তা তা আর সম্ভব না।
#কথোপকথন-২

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।