হঠাৎ একদিন
- জহিরুল ইসলাম অর্নব - অবিকল ২০-০৪-২০২৪

পাড়ার গির্জায় ঢং ঢং করে ঘণ্টা বেজে উঠে তিন বার।
পাজর ফুঁড়ে হৃদপিণ্ডে আঘাত হানে সেই ঘণ্টাধ্বনি
এভাবেই কেন সবার মৃত্যু সংবাদ জানিয়ে দিতে হবে?
আমার ঊনসত্তরেও ভুলতে পারি'নি সেদিনের কথা;
এভাবেই বেজে উঠেছিল গির্জার ঘণ্টা, বড্ড বেসুরো
কিশোর আমি শূন্য বক্ষে ছুটে গিয়েছিলাম গির্জায়
ফাদার ঘণ্টা বাজিয়ে ফিরছিল করিডোর ধরে
আমি পথ আগলে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম-
“ফাদার, আমাকে কেন ডেকে পাঠালেন না আজ?”
ফাদার কিছু না বলে হাঁটু গেড়ে বসেছিল আমার সামনে
কাঁপা কাঁপা হাতে বুকে জড়িয়ে নিয়ে মৃদু স্বরে বলেছিলেন-
“যেটা অননুমেয়, সেটা কল্পনাতীত- তারপর শুধুই শূন্যতা"
আমি কিছু না বুঝে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম, স্থাণু!!
তারপর ফাদার আমার পিঠ চাপড়ে চলে যায় বেজমেন্টে।
আমি দিনের শেষে বাড়ি ফিরেছিলাম, ক্ষুধার্ত হয়ে
আধখোলা দরজায় দাঁড়িয়ে খেতে চেয়েছিলাম
কিন্তু মা খাবার নিয়ে আসেনি, আসেছিল ফাদার।
আজ ঊনসত্তরে আবার কড়া নেড়ে উঠলো মনের
এই বুঝি ডাকছে আমায়, ঝনঝন শব্দে.. ফাদার!
না। মায়ের ডাক আমার খুব করে চেনা, খোকা!
আমি নিরুত্তর চেয়ে রইলাম চৌকাঠ ছাড়িয়ে উঠোনে
একটা শালিক খুঁটে খুঁটে ধান মুখে পুরছে
তারপর সাঁই করে উড়ে গেল।
কেন জানি অজানা ব্যথায় মন ভারী হলো আবার!
ঢিলেঢালা চামড়া আর সাদা চুলের মায়া কাটিয়ে
মায়ের ডাকে সাড়া দেবো আমিও একদিন, হঠাৎ!!

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

Biday
২৯-১১-২০১৮ ০২:৫১ মিঃ

দারুণ