রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)
- ফয়জুল মহী ২৯-০৩-২০২৪

৫ম পর্ব-------রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)-------গীতা গুরুমা।ওর অধীনে আছে দুইশত হিজড়া কিন্তু তার আছে স্ত্রী ও সন্তান।অথচ সে হিজড়াদের গুরুমা।সুন্দরী ম্যাড়াম গুরুমা এবং হিজড়াদের সিলেট বিভাগীয় প্রধান।গ্রামে ফরহাদ মঞ্জিল নামে ঢাউস বিল্ডিং-এ থাকে সুন্দরী ম্যাড়াম নামদারী ফরহাদের বউ বাচ্চা।ঝুমুর হিজড়া সেও নকল।তবে এদের ভিতর শুধু ঝুমুর পুরুষ অঙ্গ কেটে নিজে হিজড়া সাজে এবং টাকা কামাই করার পথ বেঁচে নেয়। গীতা ও সুন্দরী আসলে কিন্তু পুরুষ তারপরও তাদের হিজড়ার ভূষণ।পনের হতে বিশ হাজার টাকার ভিতরই অস্ত্রোপচার করা যায়।নিজের ইচ্ছায় হিজড়া হওয়ার একমাত্র কারণ হল অর্থ উপার্জন করা আর তারাই আবার ছেলেদের অপহরণ করে কিংবা দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে অসহায় ছেলেদের হিজড়া বানায়।দিপালী ও লিজা দুইজনে হিজড়া কামজ।আগে একজন রিপন এবং আরেকজন দুলাল ছিল।রিপনের আগে মূত্র ত্যাগে সমস্যা হচ্ছে বলে এক সময় ডাক্তারের দ্বারস্ত হয় বেসরকারি চিকিৎসালয় নামক একটি বাড়ির ভিতর ধামরাইয়ের রোম আমেরিকান হাসপাতালে।গোলাম রহমান শাহজাহান প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক সে নিজেই এই হাসপাতালের মালিক।বাংলাদেশ এবং কলকাতার সব মিলে চারশ জনকে অস্ত্রোপচার করেছেন এই ডাক্তার।অথচ উনি একজন মানবিক মানুষ উনার লক্ষ্যও টাকা রোজগার।তাই তাঁর কাছে এটা কোন অপরাধ নয় অথচ আইনে আছে কাউকে অনৈতিকভাবে অঙ্গহানী করা মারাত্মক অপরাধ কারণ এতে একজনকে বিকালঙ্গ করা হয়।আজব আমাদের দেশ তার চেয়েও আজব মানুষ, স্ত্রী ও সন্ত্রান নিয়ে সংসার থাকা সত্বেও হিজড়ার ভূষণে অপরাধ করে যাচ্ছে কিন্তু দেখার কেউ নাই।গীতা চট্টগ্রামে এবং সুন্দরী ম্যাড়াম সিলেটে নকল হিজড়া হয়েও তারা স্বকীয় বাহিনী গঠে তুলেছে আসল নকল হিজড়া নিয়ে।তাদের কেউ করে চাদাবাজি,কেউ কেউ কামজ কিন্তু রোজগারের সব টাকাই নিয়ে যায় গুরুমা। গুরুমা নতুন হিজড়ার সাথে প্রথম প্রথম অমায়িক আচরণ করে যার কারণে পরিবার ও সমাজের রূঢ় আচরণে অতিষ্ট হিজড়ারা গুরুমার প্রতি অতি সহজে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।কিন্তু আস্তে আস্তে তার আসল চেহারা প্রকাশ করতে থাকে।যদি চেহারা সুরত সুন্দর হয় তাহলে হরমোন ইনজেকশন দিয়ে মেয়েলীভাব নিয়ে আসে শরীরে।তারপর বিভিন্ন কলাকৌশলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে গুরুমার মনোনীত ডাক্তার দিয়ে অস্রোপাচার করে নারী হিজড়ায় পরিনিত করে তাদের যৌন কর্মী বানিয়ে টাকা রোজগারে আজ্ঞাবহ করে।রূপসী হিজড়ারা কুহকী সাজে সজ্জিত করে উচ্চ তলার মানুষের মনরজ্জন করতে পাঠায়।কিছু হিজড়া রাস্তায় গাড়ি হতে চাঁদা তুলে,কিছু হিজড়া দোকান হতে চাঁদা তুলে তবে যে যাই করুক কেউ বসে খেেতে পারে না।সারা দিন যে যা টাকা রোজগার করুক না কেন প্রত্যেক জনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান টাকা ধায্য করা আছে এবং রাতে গুরুমার হাতে তুলে দিতে হয়।সেই নির্দিষ্ট পরিমান টাকা গুরু মার হাতে তুলে দিতে না পারলে নেমে আসে খাওয়া বন্ধসহ মনোগত ও শাররীক নির্যাতন।তখন গুরুমার আচারণ হয়ে উঠে গণিকার রাণীর মত আর তাকে সহযোগীতা করে তারই ভৃত্য।কখনো কখনো অত্যাচার সহ্য করতে না পারলে মুক্ত হওয়ার পথ খোজে সাধারণ হিজড়া কিন্তু মুক্তি মিলতে চাই মৃত্যু না হয় বড় অংকের টাকা।টাকা চাওয়ার অংক এত বড় থাকে যে যোগাড় করা দুসাধ্য হয়ে থাকে।আর তখনি চলে গুরুমার বিরুব্ধে ভিতরে ভিতরে রাজনীতি।জাতীয় রাজনীতির মত প্রভাব প্রতিপত্তি বজায় রাখতে চলে অস্ত্রের ভাষা,চলে জখম ও খুন।গুরুমার আছে বিলাস বহুল জীবন,আছে বাড়ি গাড়ি।আর এদের রাজনীতির সাথে অংশু করে আরমান নামক আমাদের সমাজের আরেক রাজনীতিবিদ।রূপসীদের নিতে কখনো কখনো গাড়ি নিয়ে আসে অভিজাত শ্রেণী,হিজড়া গাড়িতে কিছুদূর গেলেই আরমানের লোক গতিরোধ করে নিঃস্ব করে সব নিয়ে যায় আর মানসম্মান হারানোর ভয়ে অভিজাত শ্রেণী থাকে অবর।হিজড়া ছোটকালে গুরুমার কাছে আসুক বড় হয়ে আসুক তাদের থেকে সমঝোতা চুক্তি করে দলিলে স্বাক্ষর নেয়।তবে মজার বিষয় সেই দলিল কেউ পড়ে দেখার সুযোগ পায় না ঝামেলা হলেই তা উন্মুক্ত করে।মেয়ে হিজড়ার সাথে নকল গুরুমা যৌন কাজ করতেও বাধ্য করে।যৌন কাজ করে হোক আর চাঁদাবাজি করে হোক এক হাজার টাকা গুরুমার হাতে দিলে সে হয়তো একশ/দুইশ টাকা বকশিস দেয় আয়কারি হিজড়াকে।গরিব পরিবারের হিজড়ার ভিতর তাদের পরিবার নিয়েও চিন্তা থাকে তারা মা-বাপ,ভাই-বোনের ভরণপোষণের জন্য টাকা দিতে উদগ্রীব থাকে কিন্তু সে আশা হৃদয়ের ভিতর নিহত করতে হয় গুরুমার ভয়ে।(চলবে)


৬ষ্ঠ পর্ব-------রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)------- গুরুমার কাছে টাকা চাওয়ার পর হুমকি আসে হাড্ডি ভেঙ্গে ফেলার।তখনি আবার নেত্রজলে ভেসে উঠে জন্ম দেওয়া মায়ের ছবি,ভেসে উঠে বাবা,ভাই ও বোনের ছবি।ইস,যদি তাদের জন্য কিছু টাকা দিতে পারতাম,তাদের একটু তরকারি দিয়ে ভাত কপালে জুটতো।বিধাতা জন্ম দিয়ে পৃথিবী দেখালে তাও আবার হিজড়া করে যাদের কোন ঘর নাই,বাড়ি নাই,সমাজ নাই এমনকি দেশও নাই।দুনিয়াটাকে বুঝতে পারার পর হতে লাঞ্ছনা-বঞ্চনার স্খলিতচরণে চলন বন্ধি হতে হয়।নরক হতে সুখ খোজতে এসে আরেক নরকে ডুব দিতে হয়।জীবন জীবিকার তাড়নায় হিজড়া যে পথে নামে কেউ বুঝতে চায় না।হিজড়া যে আকাশ হতে শিলা বৃষ্টি নয় তাও কেউ বুঝতে চায় না অথচ হিজড়ার মাকেই গালি দেয় উচু গলায়।নকল গুরুমা হিজড়া দিয়ে হাত পা টিপে দিতে ডাকে একদিন একজনকে আর কৌশল করে যৌন লালসা চরিতার্থ করে অবলীলায়।তাও বন্ধি থাকে গুরুমার ঝকঝকে কামরায়।কিন্তু কত দিন,নকল গুরুমার সংসার সন্তানের জন্য টাকার পাহাড় করে সাধারণ হিজড়ার রথে কামাই দিয়ে।যখনি গুরুমার সাথে বোঝাপড়া করতে সাধারণ হিজড়া একজোট হয় তখনি নেয়ে আসে নির্যাতন,বাহির হতে আসে সন্ত্রাসী বাহিনী,হাতে পায়ে পড়ে শিকল,থাকতে হয় ভুখা।প্রতিটি গুরুমার থাকে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী,থাকে থানা পুলিশে হাত যার কারণে প্রতিবাদ করার পর রাস্তাঘাটে নজর রাখে সন্ত্রাসী,রাস্তাঘাটে প্রচন্ড মেরে আহত করে ফেলে যায় যাতে অন্যরা গুরুমার সাথে কথা বলারও সাহস না পায়।শুধু একটুবার ভাবুন গুরুমা তার মনোনীত ডাক্তার,সন্ত্রাসী,পুলিশ দিয়ে যে মানুষটাকে অস্রোপাচার করে হিজড়ার আবরণে গণিকা বানাচ্ছে তার স্থান সমাজে কোথায় হবে।তার যখন বয়স হবে কে তার ভার বহন করবে।এমনিতে প্রাকৃতিকগত হিজড়ার ঘর,পরিবার,সমাজ দেশ এমনকি কবরের জায়গা হয়তো আকাশময়। দোকানপাট,গাড়ি কিংবা রেলগাড়ী কোন কিছুই এখন বাদ যায় না চাঁদা তোলা হতে।যাত্রীদের গালি দেওয়ার সাখে সাথে শরীরে হাত দেওয়া এবং কাপড় ধরে টান দেওয়া যেন অতি সহজ হয়ে দাড়িয়েছে।হিজড়াদের এসবের কোন প্রতিবাদ করা যায় না,সাংবাদিক ছবি তুলতে গেলে করে লংকা কান্ড,খোলে ফেলে পরনের কাপড় বলতে থাকে আমাদের কাজ চাই,তেড়ে আসে মারতে তাই সবাই ভয় পায়।কিন্তু প্রশ্ন হল কেন তারা টাকা উঠাবে।হিজড়া বলে চাকরী পায় না বলে,নাকি আছে টাকার নেশা,রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন।অফিস সহকারি পদে চাকরীর জন্য ত্রিশজনকে বাচাই করে সমাজসেবা অধিদপ্তর।ছয়টা প্রতিষ্ঠানে দুইজন করে মোট বারজনকে চুড়ান্ত করাও হয়।শেষ পর্যন্ত কারো চাকরী হয়নি কারন ডাক্তারি পরীক্ষায় কেউ হিজড়া বলে প্রমান হয়নি।যেমন মিরপুরের গুরুমা রাখী যে গোপাল গঞ্জের রাকিবুল হাসান।কিন্তু তাকে দেখে বুঝার কোন উপায় নাই তিনি হিজড়া নয়।প্রচন্ড প্রভাবশালী রাখী যে কিনা সাংবাদিককে একবার মেরেছে।এদিকে আবার সমাজ বিজ্ঞানীরা ডাক্তারী পরিক্ষার সাথে একমত নয়। আমিও সমাজ বিজ্ঞানীদের সাথে একমত কারণ রাখীরও আছে ছেলে বন্ধু (পারিক)।সমাজ বিজ্ঞানী ড. আমানল্লা ফেরদৌস বলেন কিছু হিজড়ার female organ আছে কিন্তু female organ কাজ করে না আবার কিছু হিজড়ার male organ আছে কিন্তু male organ কাজ করে না।এখন যদি সমাজসেবা অধিদপ্তর চলনে নারী হিজড়াকে male organ আছে বলে পুরুষ সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে হবে না।আর এই কারণে রাখী চাকরীর জন্য ডাক্তারি পরীক্ষায় বাদ পড়ায় প্রচন্ড ক্ষুব্ধ।সরকারের পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও বিশ্বাস করে না হিজড়ারা।এই ক্ষোভ জমে তারা এখন অন্যায়কারী একে আইনের ভাষায় কি বলা যায়।অনেক হিজড়া বিত্তশালী বাবার সন্তান,তবে শুধু হিজড়া হওয়ার কারণেই বঞ্চিত হন বাবার কোটি কোটি টাকা হতে।আর এই অপমান,অবজ্ঞা,অবহেলা ও না পাওয়ার বেদনায় ওরা গঠে তোলে নিজের অবৈধ সাম্রাজ্য আর জড়িয়ে বড় অপরাধে।নাজমা হিজড়া আশির দশকে ঢাকাতে এমন সাম্রাজ্যের একক অধিপতি ছিল,এখন সে বৃদ্ধ।তারই শিয্যরা এখন ঢাকাকে ভাগভটোয়ারা করে চাঁদা তোলে।এক সময় এত ক্ষমতাশালী ছিল যে কোন হিজড়া মাথা তুলে কথা বলার সাহসও করতো না।তবে গুরুমা হিসাবে শিয্যদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই নাজমা হিজড়া।এলাকা নিয়ন্ত্রণ বা দখলে নিতে চলে টার্গেট হত্যাকাণ্ড,বিষ খাইয়ে হত্যা করে পিংকি হিজড়াকে,আরেকজনকে করা হয় গুম।রাখী এত বেপরওয়া যে পুরা মিরপুর দখলে নিতে মরিয়া সে।আর এসব হত্যাকারী ও অপরাধীদের পুলিশ খোজে পায় না,পুলিশ এসব দেখতে চায় না।(চলবে)



৭ম পর্ব--------রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)-------- কিন্তু কেন পুলিশ চুপ থাকে,তারা হিজড়া বলে নাকি অন্য কোন লেনদেনের কারণে।হিজড়ারা কি রাষ্টের নাগরিক না,প্রতিটি নাগরিকের মালিকইতো রাষ্ট তাহলে হিজড়া কেন আইনের সহযোগিতা পাবে না।মানুষ যেমন তাদেরকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে তাহলে পুলিশও কি তাই,নাকি তাদের রোজগারের ভাগ পায়,কি জানি।পিংকি হত্যার আইনত কোন বিচারই হয়নি,হায়দার হত্যার জন্য জেল খাটে তার আপনজন তাও পুলিশের মিথ্যার জাল।মানিক যার নাম এখন সেই সেজুতি,এই সেজুতি প্রাণে বেঁচে গেলেও শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছে গুলির জখম না মরে কোন রকম বেঁচে আছে সে।তাকে পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে কচি হিজড়া,মাথায় আঘাত করে যেন মরে যায়।আর মরে গেলে প্রতিপক্ষ থাকবে না এবং প্রমান থাকবে না হামলার তাই মাথা থেতলে দেয় হামলাকারীরা।কিন্তু কেন এই মরণ লড়াই,উত্তর একটাই টাকার ভাগাভাগি,প্রভাব বিস্তার,জায়গা দখল।এই হামলা করে দেশের আইন এবং সাংবাদিক সবার চোখ ফাকি দিয়ে কচি হিজড়া চলে যায় ভারতে।আর নিরাপদে চলে যেতে সাহায্য করে পুলিশ ও আরমানেরা। একটা কল্পনা করা যেতে পারে হিজড়ারা কত টাকা চাঁদা তোলে তার।একজন প্রতিদিন ২০০০ টাকা,মাসে ৬০,০০০ টাকা,প্রতি দলে ২৫ জনে আয় ১৫ লাখ টাকা,১০ দলের আয় ১.৫ কোটি।বিয়ে এবং বাচ্চা জন্ম নেওয়া বাড়ি হতে হাতিয়ে নেয় পাঁচ হাজার হতে এক লাখ টাকা।এই টাকা সব যায় গুরুমার হাতে তাই কোন কোন গুরুমার ঢাকাতে বাড়ি গাড়ির মালিক।তবে শিয্যদের সব সময় নিজের সমান সমান টাকার ভাগ দিয়েও ঢাকাতে বাড়ি এবং এলাকায় অনেক সম্পদের মালিক ছিলেন।নিজের পরিচয় গোপন করে ফ্লাট কিনেন হায়দার হিজড়া।এই হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা করে তার প্রতিপক্ষ,সে মারা যাওয়ার পর তার শিয্যরা তার কিনা ফ্লাটে থাকেন।কিন্তু সে মারা হল কেন।জামালপুর ইসলামপুরে হায়দারের বাড়িতেই তাকে হত্যা করা হয়।হায়দারের বোনের করা মামলায় স্বপ্না,কচি,পিংকিসহ সাতজনকে আসামি করা হয়।স্বপ্না হিজড়া ফার্মগেট এলাকার পাশাপাশি মগবাজার এলাকাও দখল করে নিয়েছে।ঢাকার বাড়িতে সিসি ক্যামরা এবং শিয্য দ্বারা পাহারা থাকায় রাতে গ্রামের বাড়িতে একা পেয়ে হত্যা করে।আর মজার ব্যাপার হল পুলিশ ধরে হায়দারের ভাইকে এবং সে জেল খাটে ছয় মাস।হত্যাকারী হিজড়ারা হায়দারের ভাইকে বিশ লাখ টাকা দিতে চেয়ে ছিল।সেখানের পুলিশও হিজড়াকে সন্দহ করে।কিন্তু পুলিশ আসামি ধরতে পারে না কারণ অজানা থাকুক আপনার আমার তবে চৈতন্য খোলা রাখবেন কারণ এই সমাজ আপনার,এই দেশ আপনার কোন পলিটিক্সম্যানের নয়।আমার চাহনিতে যারা নিজেকে মতিমান ভাবে আর অন্যকে ভাঁড় মনে করে,এবং সত্যকে দূরে রাখে মিথ্যার আবরণের কুদরতে টাকা রোজগার করে সেটাই রাজনীতি যাতে জনগণের কোন শুভ হয় না। শহরে বিলাসী জীবন গ্রামে বিশাল অট্টালিকা,কিন্তু হায়দার একজন হিজড়া ,কত টাকার মালিক ছিল সে,আর কি করে এত টাকার মালিক হল।কিন্তু এসবেও তার চিত্তপ্রসাদ ছিল না আরো চাই। যেসময় সে নিহত হয় তখনও ইসলামপুর গিয়ে ছিল ব্যবসার কাজে,ইসলামপুর টাউনে একটা মার্কেট ক্রয়ের ব্যাপারে কথা শেষ করতে।যে মার্কেট এক কোটি টাকায় কিনতে গ্রাহক ছিল আর সেই মার্কেট হায়দার হিজড়া কয়েকগুন বেশি টাকায় কিনার জন্য প্রস্তুত ছিল এবং মালিক পক্ষের সাথে কথা শেষ করে বাড়ি ফেরে ওই রাতে সে খুন হয়।কিন্তু কিকরে অন্য হিজড়া জানলো হায়দার বাড়িতে,কি করে খুন করে অপরাধী নিরাপদে চলে যায়,এলাকার কেউ জড়িত কিনা তা জানা যায়নি,যাবেও না।তবে কিছু লোক জেল জুলুমের স্বিকার হয়েছে এই হত্যাকান্ডকে ঘিরে।তবে সব কিছু দমিত হয়েছে রাজনীতির তলায়।বিচার তুমি হাওয়া হাওয়া।ঢাকার ফ্লাট হায়দারের শিয্যদের দখলে,গ্রামের প্রসাদ শূণ্য,আর খুনীরা তার রাজ্যের রাজা আইন অন্ধ,রাজনীতি চলছে চলবে।(চলবে)


৮ম পর্ব---------রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)-------- ইসলামপুরের সবচেয়ে বড় মার্কেট ক্রয়ের ক্ষমতায় বুঝা যায় হায়দারের টাকা বাড়ার সাথে সাথে শত্রুও বাড়ে।কিন্তু পুলিশ অবেক্ষণ শেষ হয় না,পুলিশ বলে সব মোটিভ আমরা তদন্ত করে দেখছি,কিন্তু কত দিন।তাহলে কি আইন সময়ের কাছে বন্ধি নাকি চলছে অন্য কোন রাজনীতি।আমি অপেক্ষা করি প্রেয়সী আসার মত সেই বিকাল চারটা হতে,সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত,এরপর ভোর চারটা,সকাল পেরিয়ে রবি আকাশে প্রেয়সী হয়তো পথ ভুলে অজানায়।আমি ফুল হাতে অপেক্ষা করি তাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য,এই অপেক্ষা যন্ত্রণার শেষ হওয়ার নয়,আইন তুমি আমার প্রেয়সী।সুনিদিষ্ট নাম থাকার পরও আসামী ধরা হয়নি,পুলিশ বলে প্রকৃত আসামী এবং তাদের অবস্হান জানতে সময়ের দরকার কিন্তু কত সময়।এক বছর নাকি অনেক বছর ,আর আসামী রাজধানীতে ঘুরে বেড়ালেও অবস্হান জানা যায় না।কিসের এই রাজনীতি,কেন তিনটা হিজড়া খুনের একটিরও বিচার হয়নি। তৃতীয় লিঙ্গ স্বীকৃতি পাওয়ার পর সমাজ সেবা অধিদপ্তর তাদের চাকরী দেওয়ার জন্য ডাক্তারী চেক-আপ করতে গেলে সব ভেস্তে যায়।আর এতে সরকার হাত ধুয়ে পরিস্কার হয়ে বসে থাকে।এদের অভিযোগ আমরা স্বীকৃতি ফেলেও মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা পাইনি।তারা বলে বাসা ভাড়া পায় না,টাকা জমানোর জন্য ব্যাংক সেবা পায় না,হাসপাতালে সেবা পেতে কষ্ট,গণপরিবহনে কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাসির পাত্র। বার-তের অর্থ বছরে সরকার সাত জেলায় ৬৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করে হিজড়াদের ক্ষালনের জন্য।২০১৩ হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২৬ কোটি টাকা হিজড়ার জন্য খরচ করে সরকার আর এতে ৭০০০জন হিজড়া উপকারভোগী।উপবৃৃত্তি, চিকিৎসা,বাসস্থান এসব খাতে সরকার খরচ করে হিজড়ার জন্য।এত সুবিধার পরও কেন এরা জীবনমান বদলায় না।যানবাহনে ভদ্র লোকের কাছে হাত পাতা পুরানো অভ্যাস।সস্তা পন্থায় টাকা রোজগার করার সহজ উপায়ের যে অভ্যাস তা ছাড়তে পারছেন না বলেন আবদুর রাজ্জাক(পরিচালক,হিজড়াদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসসূচী)।আসলে তা ঠিক।মিরপুরে গুরুমা রাখীর শিয্যরা সরকারি প্রশিক্ষণ পাওয়ার পরও যানবাহনের যাত্রী হতে টাকা তোলা বন্ধ হয়নি।এই সময় সাংবাদিক ছবি উঠাতে গেলে সবাই মিলে ক্যামরা নিয়ে ভেঙ্গে ফেলে,মারতে তেড়ে আসে।তাহলে কি অ্ভ্যাস বদলানো যাবে না।তাই বলে থেমে থাকা যায় না তাই হাত বাড়ান একটি সংস্থা।এবং হিজড়াকে অপরাধ করা হতে দূরে রাখতে এগিয়ে আসেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। উত্তরার বাওনিয়া এলাকায় আপন গুরুমা ২৫জন শিয্য নিয়ে থাকেন এক বাড়িতে।এদের কেউ কবুতর পালেন,কেউ আল্পনা আঁকেন,কেউ কেউ রান্না বান্না করে এবং অবসর সময়ের নাচ গান করে।তারা বলেন তখনই খারাপ লাগে যখন মানুষের কাছে হাত পাততে হয়,এভাবে ভিক্ষা করে ও জোর করে টাকা রোজগার করতে ভাল লাগে না।আপন বলেন আমরা যদি সম্মানের সাথে ডাল ভাত খেতে পারি তাহলে মানুষকে অপমান করা,হাত তালি দেওয়া,নাচ গান করা,চাঁদাবাজি করা এবং কাপড় খোলে ফেলা করবো না।যখন নিজে কাজ করে খাব তখন আমরা ঠিক থাকব এবং মানুুষ আমাদের সাথে মিলবে আমরাও মিলবো মানুষের সাথে।আমরাও শিক্ষিত মানুষ আর কতকাল ভিক্ষা করে খাবো।তাই এমন আগ্রহ দেখে তাদের পাশে এসে দাঁড়ান অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান ও উত্তার ডিসি বিধান ত্রিপুরা।মানুষ যে তাদের আচরণে অতিষ্ট হয়ে যায় এবং তাদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে আমাদের উদ্যেগ বলেন বিধান ত্রিপুরা।তাদেরকে যদি একটা প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে দেওয়া যায় তাহলে কাজ করে খাবে এবং সহজভাবে সমাজে বাস করবে ভদ্র হয়ে আমরা স্বস্তি পাব তারা পাবেন সম্মান।দুই পুলিশ কর্মকর্তা এদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সেলাই মেশিন কিনে দিয়েছেন আর এতে বিভিন্ন স্কুল কলেজের ড্রেস তৈরি করবে এতে জীবনমান ভাল হবে।আমরা কাজ করেই খেতে চাই আর এতে খুশি।বিভিন্ন স্কুলল কলেজে গিয়ে আমরা অর্ডার নিয়ে আসবো প্রথম তারপর তারা আস্তে আস্তে সব নিজেরা করতে পারবে।আমরা তাদেরকে ভাল রাস্তায় তুলে দিলে তারা অপরাধমুলক কাজ করবে না সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা নিশ্চিত হবে বলেন হাবিবুর রহমান। কাজটা যে অনেক শুভ এতে কোন সন্দেহ নেই,দেখা যাক আপন গুরুমার শিয্যরা হিজড়া হতে মানুষ বনে কিনা।এই প্রকল্প যদি সফল হয় তাহলে সারা ঢাকায় কাজ করার চেষ্টা করেন এই দুই জন মহত ব্যক্তি।এই যেন মরু পান্তরে এক ফোটা প্রাকৃতিক জল,আমরা যেমন হিজড়ায় স্বাধীন হিজড়া হয়ে যাই তেমনি পুলিশ দেখলেও স্বাধীন দেশে হিজড়া হতে হয়,কিন্তু এই ধারনা কিছুটা দূর হতে সাহায্য করলো এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা।তাই ফিরে যাই পুরাতন স্লোগানে পুলিশ জনগণের বন্ধু।(চলবে)

৯ম পর্ব---------রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)---------- দুই হাতে উড়াই পোড়া স্বপ্নের ছাই,পিরিতি কাকন আর যেত আকুলতা। একান্তে প্রেম ভেঙ্গে গেলে পড়ে থাকে ঝড়ু ঝড়ু স্মৃতি আর বিষাক্ত চুল কাঁটা। পান্তিক রেখায় উড়ছে মেঘদল,ওদের চিনাবো বদ্ধ ভূমির ফাঁস। চার পাশে পুরুষ নেইতো কোন,যুথচার সব নৃপংশুকের নাচ। এই দুর্ভিক্ষে তুই আমি এক সুখী, চল যাই ভেসে দুহানিও মিলে দুর্ভাগ। বেপরোয়া নদী দ্বিধাহীন অস্নানোত, নিচু ফেলে মাটি আমরা পরস্পর। সকাল হতে ছুটে চলে শহর সাথে ছুটে চলছি আমরাও।আমাদের সাথে ছুটে চলে কিছু অন্য লোক যাদের পরিচয় আছে সামাজিক স্বিকৃতি নেই। আসলে আধুনিকতার মোড়কে প্রগতিশীল হলেও সামাজিক হীনমন্যতা হতে বের হতে পারিনি আমরা।বয়ঃসন্ধি কালের পর হতে শুরু হয় লড়াই,তার বেড়ে উঠা বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত,তৃতীয় লিঙ্গের স্বিকৃতি ফেলেও বেঁচে থাকা খুব সহজ নয়।আমি রুপালী রূপান্তর হয়েছি যে দশ বছর হয়েছে তবুও যেন অস্বিত্ব সংকটে আছি অথচ আমি শিক্ষিত মানুষ অভিনয়ও করি।এই লড়াই যে কতটা কন্টক তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানে।এক কথায় বলে বুঝানো যাবে না,প্রতি মুহুর্ত নিজেকে জাস্টিপাই করা,সমাজ তোমাকে বুঝানোর চেষ্টা করছে তুমি খারাপ,তুমি ভুল,তুমি যা করছো সেটা ভুল করছো অন্যায় করছো,এবং সাথে সাথে সমাজ দন্ডের ব্যবস্থাও করে দিচ্ছে।যদি সমাজের নিয়ম অনুযায়ী চলতে না পারি সমাজ প্রতিনিয়ত শাস্তি দিবে এবং শাস্তি দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। আর সেখানে দাড়িয়েই সবসময় নিজেকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে জিঞ্জাস করা এবং কখনো কখনো বলা যদি নিজের প্রতি নিজের বলার সেই আত্নবিশ্বাসটা থাকে তাহলে বলা তোর চেয়ে আমি সত্য,এই বিশ্বাসে প্রাণ দিব দেখ। আচ্ছা রুপালী রূপান্তরিত হতে হবে এই সিদ্ধান্তটা কেন। আসলে আমার যেটা মনে হয় অন্তর আর বাহিরের এই দুইটো জায়গার মিল না থাকলেতো একটা মানুষ সম্পূর্ণ হয় না।অন্তত আমি,বাকিদের কথা বলতে পারবো না আমার নিজের ক্ষেত্রে আমার সে রকম অনুভূতি ছিল,যে আমার হৃদয়ের সাথে আমার শরীরের বাহিরের যদি মিল না হয় তাহলে আমি কখনো নিজেও স্বস্তিবোধ করছিলাম না যে সম্পূর্ণ নারী হিসাবে।যে কারণে বার বার মনে হয়েছে যে আমার বাহিরের গঠনটা পরিবর্তন হওয়া অত্যন্ত জরুরী। এখনো মনে পড়ে সে বাড়ি,সেই বাড়ির ছাদ যেখানে আমি একা একা বসে আকাশ দেখতাম।বসে বসে হাঁটুর ভিতর মুখ লুকিয়ে কাঁদতাম,কাউকে কিছু বুঝানো যেত না বুঝাতে পারতাম না।আর এই না পারাটা নিজের সাথে ছাড়া পৃথিবীর কারো সাথে বলা যেত না। মা কি বলতেন? (কান্না) মা.....মাতো এসমাজের একটা অংশ ছিলেন,তারপরও সন্তান হিসাবে কখনো অবহেলা ছিল না।শুধু পরিবারের সবার এক কথা ছিল আমাকে তাদের সমাজের একজন হতে হবে,আমি যদি সমাজের মত হতে না পারি নিন্দার শেষ নাই,লজ্জার শেষ নাই।আমাদের সমাজে পুরুষকে সিংহের মত মনে করা হয়,পুরুষ যেন একটা প্রতুল। তুমিতো অনেক পরিচিত মুখ,যখন রাস্তাঘাটে বাহির হও অন্যরা কি তীর্যক দৃষ্টি ফেলে। কিছু কিছু জায়গায় এখনো হয়।একটা ঘটনা বললে বুঝতে পারবে।আমিতো অভিনয়নের পাশাপাশি মডেলিংও করি তাই বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জনের সাথে মিশতে হয়।সেই রকম এক জায়গায় এক মহিলা খুব তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে ব্যবহার করে ছিল।তখন তাকে আমি বলি কেন আপনি এমন করছেন তখন সে অত্যন্ত চিড়-খাত্তয়া ভাষায় বলে।(চলবে)


১০ম পর্ব--------রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)------- তোর মত হিজড়ার সাথে আমি কথা বলতে চাই না। কেমন করে আমরা সমাজের এই চুত মার্গ থেকে বাহির হতে পারব। এই চুত মার্গ হতেও সব চেয়ে অন্ধকার দিক হল মানুষের মননশীল মন না,অশিক্ষা কুশিক্ষা এর জন্য দায়।যাদের আমরা শিক্ষিত মনে করি তাদের হতে যখন বাজে মন্তব্য পেতে হয় তখন ভাবতে হয় এটা কি পুথিগত শিক্ষার সমস্যা,আসলে একটা লোকের জন্য সামাজিক সুজনশীল শিক্ষার প্রয়োজন।শিক্ষা যদি ভিতর হতে না হয়,যদি মানুষের ভিতর পরিবর্তন করতে না পারে তাহলে ওই শিক্ষা পুথির ভিতর থেকে গেল।যদি মানুষের ভিতরকার শিক্ষিত হয় তাহলে সগোত্রীয়দের সম্মনের পাশাপাশি অন্য লিঙ্গের মানুষকে সম্মান করবে। একজন মানুষ রূপান্তরকামীতে পরিনত হওয়ার ক্ষেত্রে মা বাবার বড় ভূমিকা থাকে,বাহিরের মানুষের সাথেতো লড়াই করা যায় কিন্তু ঘরের মানুষ,আপনজন তাদের সঙ্গে লড়াই করাটা খুব একটা সহজ নয়। ভারতে অধিকাংশ হিজড়ার মা বাবাকে কয়েকটা সংগঠন ক্লাউন্সেলিং করে এবং সুন্দর করে যুক্তি দিয়ে বুঝান কিন্তু আমাদের দেশে সেই রকম এখনো হয় না। আচ্ছা রুপালী এতে কি কাজ হয় বলে তোমার মনে হয়। এটা নিয়ে আমার বন্ধুদের সাথে কথা হয়,যা বুঝলাম যে পরিবারের লোকদের ক্লাউন্সেলিং বেশি বেশি দরকার।আমি বেশ কয়েক বছর ধরে পরিবার হতে বিচ্ছিন্ন থাকি তারা কিছুটা অর্থনৈতিক সাহায্য করলেও তাদের সাথে রেখে মায়া মমতা ও ভালবাসা দিতে প্রচন্ড অনিহা। বিদিতা ভট্টাযার্চ (মনোবিদ,কলকাতা) বলেন,মা বাবারই সবচেয়ে বেশি ক্লাউন্সেলিং দরকার কারণ তাদের একটা সন্তান হিজড়া এইটা মেনে নেওয়া খুব কষ্টকর হয়ে যায়।তাই মুল হতে পরিবর্তন দরকার,তারা যে চেষ্টাটা করেন তা খুব ভুল চেষ্টা।অনেক সময় জোর লত্তয়া করেন,অনেক সময় বকাবকি করেন,এমনকি মারধরও করেন।অনেক সময় মা বাবা হতাশার গভীরে চলে যান তখন হিজড়া সন্তানটি আরো হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।এমন অবস্হায় সন্তানটি ওই সময়টাকে মোকাবেলা করতে হিমশিম খেতে হয়। তোমার মা বাবার কি অবস্হান ছিল তোমাকে নিয়ে। মা বাবার দুঃখ বুঝি,আসলে তাদের সন্তান জন্ম নিয়েছে ছেলে হয়ে কিন্তু এখন মেয়ে অতএব তাদের কষ্ট লাগার কথা।সত্যিকার অর্থে যে সমস্যা হয় সেটা হচ্ছে প্রতিবেশীদের নিয়ে। প্রত্যেকের পছন্দ আছে,এমনকি রুচি পছন্দ হরেক রকম,জেন্ডারের ব্যাপারটাও খানিকটা তাই,এবং জেন্ডার যাই হোক সে যেরকম আচরণ করতে চায় তার জেন্ডার নিয়ে সেখানে দ্বিতীয় কেউ তার সিদ্বান্ত চাপিয়ে দেওয়া ঠিক না,তাদের মত করে চালানোটা সঠিক নয়। আমি আমার ছেলেকে মেয়ের মত সাজতে দেখেছি,তখন রীতিমত আমার পায়ের তলা হতে মাটি সরে যায়।মিড়িয়া দেখে,বই পড়ে সব কিছু জেনে আমি জানলাম এই জিনিসটা পুরা আলাদা,আমার সন্তান ঈশ্বরের এমনই কৃপা।এখন তাকে মেনে নিতে আমার কোন অসুবিধা নাই,ভয় নাই পাড়া প্রতিবেশীর তীর্যক নজরে,রুপালী আমার সন্তান আমি তার মা। কি কি সমস্যা তোমার সামনে আসে। সরকার যেত আমাদের স্বিকৃতি দিন না কেন তারপরও সরকারি কোন কাজে গেলে আমার আইডি প্রমাণ করা লজ্জাজনক হয়ে পড়ে,সরকারি উচ্চস্তরে কিছুটা অনুবেদন দেখালেও নীচতলায় যারা তারা আমাদের নাকাল করে,বলে প্রমান দেখাতে হবে।আমিতো জানি আমি কি কিন্তু লোকও বুঝতে হবে আমরা কি,আর সেটা এখনো হচ্ছে না। রুপালী শিক্ষিত নয় শুধু শাররীক গঠনেও অপরূপ,তাকে দেখে বুঝা যায় না সে এক সময় ছেলে ছিল।চালচলনে পুরাই এক মেয়ে মানুষ,আমি মেয়েদের নারী বলতে নারাজ কারণ এতে নারী মানুষ হয়ে উঠে না বা সমাজ মানুষ হয়ে উঠতে দেয় না।তাই আমি নিজেকে মেয়ে মানুষ বলি যা পুরুষ মানুষ হতে শাররীক গঠনে আলাদা।আমরাও অন্য মানুষের মত চিন্তা চেতনায় কোনভাবেই কম নয়,সংগ্রাম করে জীবন চালাতে পারি,শুধু একটু সুযোগ ও সম্মান দরকার তবে কোনমতে করুণা চাই না।(চলবে)


১১তম পর্ব-------রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)------- অনেক শুনা আছে একজন ছেলের মেয়ে রূপান্তরিত হওয়ার কথা কিন্তু একটা মেয়ের ছেলে রূপান্তরিত হওয়ার কথা খুব কমই শুনা গিয়েছে৷আর এই লড়াইটা এত সহজ নয় খুবই কঠিন তবে উদাহরণ আছে৷নীল মেয়ে হতে আজ পুরুষে রূপান্তরিত হয়েছে,এই পরিবর্তন হতে বড় ধরনের অস্ত্রোপচার করতে হয়৷পায়েল হতে নীল হতে তিন বছরে তিনটা অস্ত্রোপচার করে রূপান্তরিত হতে হয়েছে৷মানসিক এবং শাররীক দুইটাতেই প্রচন্ড লড়াই করতে হয় দীর্ঘ সময় ধরে তাহাছাড়া সমাজের বিরুদ্ধে লড়াইতো আছেই৷যেখানে ধর্ম মানুষকে সৃজনী করতে পারছে না সেখানে সমাজ কি করে করবে৷নিজের পরিপূর্ণতা নিয়ে যেখানে মানুষ ঈশ্বরকে প্রণাম করার কথা সেথানে তার অন্য সৃষ্টিকে নিয়ে উপহাস করার ঘৃণ্য চর্চায় মেতে থাকে৷তাঁরই সৃষ্টি অকৃতজ্ঞ রূপ ধারণ করে ঈশ্বরের ভুল ধরতে নেমে পড়ে,আচ্ছা পরমেশ্বর তখন তুমি কি আসমানে বসে জমিনে পিপীলিকার নাচন দেখে কলঙ্ক কলঙ্ক বলে খোয়ার করতে থাকো৷দোহাই পরমপিতা তুমি যে মানব সৃষ্টি করে মর্তভূমিতে প্রেরণ করছো তাদের হিজড়া করে পাঠাও না হয় আমি মা ও মেয়ের কাছে লজ্জিত হচ্ছি অবিরত৷বাংলার সোনার ছেলেরা মা ও মেয়ে প্রতি শুধু প্রগাঢ় হয়ে ক্ষান্ত হচ্ছে না তাদের নিপুণভাবে হত্যা করে,না হয় কামার্ত নাট্যমঁচ সার্বজনীন করে টাকা খাওয়ার ধান্ধায় সংশ্লিষ্ট আর তাতে শক্তির যোগান দিচ্ছে রাজনৈতিক ক্ষমতা৷কামুক মানুষ যদি হিজড়া হতো তাহলে ৮-৫ বছরের অবুঝ শিশু দুইটো বোন হাসপাতালের বিছানায় পুতুল নাচ খেলতে হতো না৷যদি তারা ৮০ বছর বেঁচে থাকে তাহলে কি আবারো তোমার সৃষ্টি পুরুষ দিয়ে ধর্মনাশ করিয়ে আবারো হাসপাতালে সেই পুতুল নাচন করাবে,বলো না চুপ কেন তুমি৷আর মৃত্যু পর্যন্ত যে অসহ্য যঁত্রণাদান নিয়ে বেঁচে থাকবে মানব সমাজ তাদের সেই অপজ্ঞান কি করে পরিহার করাবে৷তাই বলি "চার পাশে পুরুষ নেইতো কোন,যুথচার সব নৃপংশুকের নাচ"। ধর্ম,নীতি ও আদর্শ বিসর্জন দিয়ে মানুষ আজ মনুষ্যত্বহীন হয়ে পড়েছে যেন তাই মনে হয় আমার দেশে সব চাপিয়ে উপরে চলে রাজনীতি যা পলিটিক্স।আমরা সাধারণ জনগণ অসুস্থ রাজনীতির বলী,দেশের উন্নতির কারণও রাজনীতি আবার রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারীতা দেশকে পিছিয়ে দেয় এবং ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।ধর্মকে খাটো করে দেখার কোন সুযোগ নেই,আধুনিক সভ্যতা,রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থা উপহার দিয়েছে ধর্মই।যারা বলে ধর্ম ও রাজনীতি একসাথে চলতে পারেনা তাদের সাথে ভিন্ন মত আমার,অতিরিক্ত জাতীয়তাবাদ দেখাতে গিয়ে এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মকে খাটো করে দেখছেন আমি তাদেরকে বলবো সীমিত করুণ আপনার চলা নিজ ধর্মেই। নীল তোমার এই রূপান্তর খুব rear। আমরা দেখে থাকি rear,আসলে ঘটনাটা কিন্তু রিয়ার নয়।এর অনেক কারণ আছে রাষ্টের কাছে,আইনের কাছে এবং সাধারণ মানুষের কাছে, সবার কমন শব্দ সেটা হচ্ছে হিজড়া।হিজড়া এবং রূপান্তর একই জিনিস,হিজড়া একটা বাস্তব জীবন,একটা কৃষ্টি এটা আমাদের বুঝতে হবে।পুরুষ হতে নারী,আবার নারী হতে পুরুষ এটাকে কোথায়ও হিজড়ার পেশা আবার কোথায়ও কৃষ্টি হিসাবে দেখা হয়।এক্ষেত্রে তারা নিজেরা বলে দিয়ে থাকেন তারা রূপান্তর কিন্তু নিদিষ্ট করে বলে বলে দেওয়া ঠিক নয় যে সে রূপান্তর মানুষ। এত এত লড়াই,এত চড়াই,এত ত্তলন ভিতর সামনে এগিয়ে যাওয়া,তোমার পরিবারকে বুঝিয়ে উঠতে পারলে তুমি,এবং তাদের জন্য একেবারে আলাদা থাকা। মা বাবা এখনো মেনে নেয়নি এবং তাদের দোষ দেওয়ার নাই, তাদের সমর্থন দেওয়ার সুযোগ নাই কারণ পাড়া প্রতিবেশী,সমাজ এবং আত্নীয়-স্বজন কেউ বলবে না তোমাদের সন্তান সঠিক তাহলে মা বাবা কিভাবে আমার কাজ মেনে নিবে।আর সহজভাবে মেনে নেওয়া সমাজে নেই,তবে আমার পাশে আমার সমাজ আছে,এনজিও আছে এমনকি আমার ডাক্তার সাহেবগণ আছেন।তারা আমাকে সব ধরণের সহযোগিতা করছেন। মনোবিদ বিদিতা ভট্টাচার্য বলেন,অবশ্যই মা বাবার প্রথম হতে সচেতন হওয়া উচিত এবং পাশে থেকে আলাপ করা উচিত,বাচ্চা কেমন অনুভব করছে জেনে নিয়ে তাকে তার মত হতে সহযোগিতা করা উচিত।বাচ্চা এই জিনিসটা প্রথম হতেই বুঝতে পারে যে তার কোথাও যেন disconnect হচ্ছে,আর সেটাকে মা বাবা উঠিয়ে না দিয়ে সেটা নিয়ে বাচ্চার সাথে আলাপ করা উচিত।বাচ্চা দমক দিয়ে উল্টো আচারণ করতে গমনরত না করে সেটাকে যদি হৃদয় দিয়ে অনুভব করে সহানুভূতি দেখায় এবং বন্ধুর মত পরামর্শ করে তাহলে আর কিছু না হোক তার রূপান্তরের ইচ্ছা চলে নাও যায় তারপরও সেই বাচ্চা বা কিশোর কিশোরীকে মানসিকভাবে অনেক শান্তি দেওয়া যায়।(চলবে)

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।