রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)
- ফয়জুল মহী ২৬-০৪-২০২৪

১৩তম পর্ব-----রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)----

আহ....আহ...কেউ এদের বলে শিখণ্ডী,কেউ বলে তৃতীয় লিঙ্গ আবার কেউ বলে কমন জেন্ডার,আর বাকীরা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বলে হিজড়া।নারী হয়ে কেউ জন্মায় না ক্রমশ তারা নারী হয়ে উঠে ঠিক তেমনি পুরুষশালী শরীর কাঠামো বন্ধি এদের মন প্রাণ পুরোদস্তুর নারীর মনে বদলে যায়।তাই নারী সুলভ সবকিছু তাদের কাছে প্রিয় এবং বহু প্রিয়।নাচ-গান তাদের জীবনের পরীতল,যেখানে তাকালে দুঃখের খরস্রোতা নদীটি অদৃশ্য দেখায়।কিন্তু কোন মানব মনের সাথে মন মিলিয়ে যদি তাদের দিকে তাকায় তাহলে বিষাদসিন্ধুর চাইতেও বিষাদ মিলবে।মারা গেলে তাদের দাফন কিংবা দাহ পর্যন্ত হয় না,সমাজ সেই অধিকার হতেও বঞ্চিত করে। সমাজ তাদের যে জীবন দেখে না সেই জীবনে একটু উঁকি দিই আমরা চলুন সবাই মিলে কান পাতি তাদের জীবনের গভীরে যেখানে তাদের নেতা আছে,কথা আছে,অনেক অনেক মনের কথা।আমি হিজড়া বলে আমার শিক্ষা সনদের কোন মুল্য নাই অথচ আমি সবার মত লেখাপড়া করে পরিক্ষা দিয়ে পাশ করেছি।কেন আমার সনদের মুল্য হবে না মাতৃভূমি তুমি বলো।হিজড়ার হিজড়াই মা,হিজড়াই বাবা,হিজড়াই ভাই-বোন।কি পাষণ হৃদয়ে বরফ লাগবে সমাজ তোমার,যারা তাদের অমানুষ,নমানুষ কত নামে ডাকেন তাদের কি চিন্তার দুয়ার খোলবে।যাদের খোলবে না তাহলে তাদের জন্য রুপালীর কথাটি ছুড়ে দিই,মনে মনে কি উত্তর দিবেন ভাবুনতো।আমরাতো কোন মায়ের সন্তান, আমরাতো মায়ের গর্ভ হতে দুনিয়া দেখেছি তাহলে এভাবে আমাদের জীবন আর কতদিন চলবে,আমরা কার কাছে একটু সহানুভূতি পাবো(প্রচন্ড কান্না)।কান্না বা আবেগের শক্তি মহাজাগতিক এক নয়নের জল দ্রুত অন্য নয়ন ধরে,এক জনের কান্না এদের সবার মনে একই অনুবভের জন্ম দেয়।যার ব্যথা শুধু তারা বুঝে আর কেউ নয়।আজকে দশ বিশ টাকার জন্য আমার বোনদের কত গালি কত লাথি খেতে হয়,আমাদের কপালে এত কষ্ট এত দুঃখ।আমরা কি নিজেরা এমন ইচ্ছাকৃত হয়েছি,এমন মন নিজেরা তৈরি করেছি?( সবাই বলে না না )।আমরাতো কোন পাপ করি নাই,আমাদের জন্ম হওয়া কি পাপ ছিল সমাজের কাছে।এদের জীবনের করুণ দিক হল পরিবার হতে অপভ্রংশ,শুধু হিজড়ার হওয়ায় সমস্ত স্বজনের পরিত্যাগ।পরিজন,পরিবার ও প্রতিবেশী কেউ দেখতে পারে না,অনেক অপমান নিজেকে সহ্য করতে হয়,হিজড়ার বাবা মা বলে অনেক অপমান বাবা মা কে হতে হয়,হিজড়ার ভাই বলে অনেক অপমান ভাইদের হতে হয়,রাস্তায় বের হলে অট্টনাদ উঠে হিজড়ার বাবা মা,হিজড়ার ভাইবোন চারদিকে অপমান আর অপমান।ছোট ভাইটা স্কুলে যেতে পারে না,চুপি চুপি কাঁদে বাঁশ বাগানে বসে।তাইতো যখনি অবসর মিলে হাতে নিয়ে বসে মুঠোফোন,ফোন করে মা বাবার প্রিয় কন্ঠস্বর শুনতে চায়।মারে তোমার এক ছেলে মারা গিয়েছে,আর এক ছেলে আছে তাই ভেবে থাকো,কি করবো আমি মা আত্নীয়-স্বজন দেখতে পারে না,পাড়া-প্রতিবেশী দেখতে পারে না আমি তোমার কাছে গেলে আরো মারদোর করবে মা।এই জন্য আর কোন দিন বাড়ি যাব না,আমি চাই না তোমার কোন কষ্ট হোক,কেউ তোমাকে আমার জন্য মদ্য বলুক তাই দূর হতে ফোনে কথা হবে,কেঁদো না মা রা রা রাখবো এখন।খোজ নেয় খবর নেয় ভালবাসা নেয় এবং ভালবাসা দেয়।কান্নার কোন মূল্য নেই তাদের কাছে কারণ পেটের ক্ষুধা তাদের আবেগকে করে তাড়িত তখন চোখ মুছে জীবিকার তাগিদে ছুটতে হয় আনন্দ বিলাতে এবং অন্ন মিলাতে।"ওমা ছেলে আছে ভাল আমার নয়নও জুড়ালো.......আল্লাহ মিলাইয়া দিছে পূর্নিমার চাঁদ,রাসূল মিলাইয়া দিছে শবেবরাতের চাঁদ"।বাচ্চা জন্ম নেওয়া বাড়িতে এসব গান গেয়ে নাচে টাকা তোলে।তাদের এই হাসি মুখ বেশি সময় থাকে লোকালয় হতে যখন একা ফিরে একান্ত জীবনে তখন বুকে জমাটবাঁধা দুঃখগুলো স্বন হয়ে আলো আধারেতে "জীবন মানেতো যন্ত্রণা,বেঁচে থাকতে বোধদয় শেষ হবে না।জীবনে আসে কত দ্বিধা আর ধন্দ।জীবনে আসে ভাল আর মন্দ,মনের কথা মনে রইল কেউতো বুঝলো না।জীবন মানেতো যন্ত্রণা,বেঁচে থাকতে বোধদয় শেষ হবে না"।ঈশ্বর কারো কপালে কারো দুঃখ চিরস্থায়ী করে না।সমাজের অন্ধ অলিগলিতে জীবনের সাথে যুদ্ধ করতে করতে প্রায় পরাজিত এই মানুষগুলি।(চলবে)

১৪তম পর্ব-----রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)------ এই অন্ধকারে দেবদূত হয়ে আসা বিধান ত্রিপুরা(ডিসি,ডিএমপি) সংসারের কোন আড্ডায় স্বামী স্ত্রী মিলে আলাপ করেন সমাজের এই অবহেলিত মানুষদের নিয়ে।তাদের জন্য অন্তত কিছু কিছু একটা করতে হবে।সেই কিছু একটায় আজ শত সেলাই মেশিনের কাজের আওয়াজ,যা আজ রীতিমত প্রতিষ্ঠান।সমাজের চোখে অপাংক্তেয় মানুষগুলোর ভিক্ষার হাত বদলে হয়েছে কর্মির হাতে সেলাই মেশিনে হাতপায়ে তাল তুলে তারা হয়েছে কর্মমুখী।আমি হিজড়া হলেও শিক্ষিত,মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষা চাওয়া আমার নিজেরও বিবেক বাধা দেয়।মানুষের দ্বারে দ্বারে যাব মানুষ লাঞ্চনা- গঞ্চনা দেয় এই ব্যথাতো আর সহ্য করতে পারছি না এই কারণে আমার মা আপন মা কর্মের ব্যবস্হা করেছে আমি কর্ম করে খাচ্ছি।জীবন বিমুখ মানুষগুলিকে যিনি জীবন ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি মাঝে মাঝে দেখতে আসেন কখনো একা আবার কখনো সস্ত্রীক।বুকে আগলে ধরে শুনেন এবং শুনান নানা কথা,এই মাটির পান্তিক মানুষের জন্য তিনি অন্তর হতে টান অনুভব করেছেন আর এই টান উনাকে নিয়ে এসেছেন এদের মাঝে।আসলে পরিবার,সমাজ এবং রাষ্ট কোন জায়গা হতে তাদের দায়িত্ব নেয় না,যার কারণে এই সব মানুষ কোন আশ্রয়ও পায় না কোথায় যাবে কি খাবে তাদের কি হবে জীবন জীবিকার তা ভেবে দেখে না।এই যে তাদের দেখলে ছি ছি বা দূর দূর করার যে অভ্যাস রয়েছে তাই আমাকে নাড়া দেয়।আমি দেখেছি হিজড়াদের গুরুমা যখন কোনখানে যায় তখন উনি তার শিয্যদের ছাড়া কিছুই খায় না।সুতরাং কোন বিয়ে বাড়ি কিংবা নবজাতকের বাড়ি হোক সেই আনন্দময় সময় গিয়ে যে টাকা দাবি করেন আর যিনি টাকা দেন তার কাছে টাকার পরিমান বেশি মনে হলেও আসলে সেই টাকায় হয়তো সবার দুইবেলা খাবার জোটে না।তাই আমি যেটা মনে করি তা হল পরিবার,সমাজ এবং রাষ্ট এই তিনটা জায়গা একসাথে কাজ করতে হবে।বিশেষ করে রাষ্টের দায়িত্ব বেশি যেমন প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের রাষ্ট সহযোগিতা করেছে তেমনি হিজড়াদের সহযোগিতা করলে সমাজের মুলস্রোতে তারা মিশতে পারবে।তারপর তারা অন্যদের মত স্বাভাবিক হয়ে বসবাস করতে পারবে এবং জন্মই আজন্ম পাপ তা ভুল প্রমানিত হবে।জন্ম মৃত্যু বিয়ে এসবতো প্রাকৃতিক নিয়ম,এসবে অন্য নিয়ামকের কোন হাত কাজ করে না।সুতরাং তাদেরও সুন্দর করে বেঁচে থাকার অধিকার আছে আর সে অধিকার নিশ্চিত করতে সবাই মিলে কাজ করলে তাদের কর্মসংস্হান হবে পরিবারে বসবাসের সুযোগ বাড়বে।আমরা তাদের কত বিরক্ত হয়ে বলি হিজড়া,শব্দটাই কেমন!না তারাও মানুুষ।সৃষ্টির সেরা জীব,অথচ আমরা অস্বিকার করে বিধাতার বিরাগভাজন হচ্ছি এটি আমার ন্যুনতা।সমাজ,পরিবার জায়গা দেয় না,কিন্তু জোর করে টাকা নেওয়াটা বড় নজর আসে অথচ তাদের মন জীবিকার সংগ্রাম নজর এড়ায়।তাদের জন্য কাজ করাটা আমার জীবনে পরম পাওয়া,ধন্যবাদ বিধাতা।একজন সুধী মানুষের সাধু এই কাজ এসব মানুষের জীবন কতটুকু বদলে দিয়েছে তা সমাজের পর্দা পড়া মানুষ না দেখলে বিশ্বাস করবে না।তাই পুলিশ অফিসার বিধান ত্রিপুরা হল আপন গুরুমার কাছে দেবতা।আমরা তাদের ভালবাসায় এই কর্মসংস্হান পেয়েছি,মনে হচ্ছে যেন আমাদের পিছন হতে হতাশা ও অভিশপ্ত জীবন সরে যাচ্ছে।এখন আমাদের পরিবার আমাদের সম্মান করে,কাছে ডাকে তাই দেবতারূপী এই মানুষটার কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ।সূর্য যেমন সারা দিনের পরিকল্পনা নিয়ে পূর্ব আকাশে উঠে ঠিক তেমনি এদের জন্য পুরোদস্তুর পরিকল্পনা নিয়ে কাজে উদ্যেগ হয়েছেন তারা।ভবিষ্যতেও তারা মাটি ঘেষা আর প্রান্তিক না থাকে মানুষের কাতারে দাঁড়াতে পারে সেজন্য আছে বিশাল আয়োজন।স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী যেন হিজড়া দেখে ভয় না পায় এবং হিজড়াদের প্রতি মায়া,মমতা,ভালবাসা এবং সম্মান অন্তরে সৃষ্টি হয় সে জন্য স্কুল এবং কলেজের পোষাক তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।এবং শিক্ষিকগণ সময় করেছাত্রছাত্রী নিয়ে এসে হিজড়াদের বসবে আলাপ করবে এবং ছাত্রছাত্রী বুঝবে এবং অন্যকে বুঝাবে হিজড়ারাও মানুষ,তাদের সব ধরনের অধিকার আছে সমাজে।সভ্য সমাজের আর দশ জনের মত তারাওতো মানুষ,রাষ্ট কি কোন দিন পুরো দায় নিবে না,একজন বিধানের মত মানুষ কি সমাজে আর নাই আহ আহ্।(চলবে)

১৫তম পর্ব------রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)----- আমরা তাদের দেখলেই চিটকে পড়ি কিন্তু তাদের কি বেদন হয় তা অজানা।পোষাক ছেলেদের কিন্তু চলনে মেয়েলীপনা নাম রাশেদ সবাই ডাকে নিপুণ নামে।জন্মের পর হতে মেয়েলী স্বভাব কথাও বলে মেয়েলী ঢং-এ,সাজ যেমন পছন্দ তেমনি নাচ গানও।ছেলেদের সাথে কোন খেলা তার পছন্দ নয় তাই অপলক চেয়ে থাকে।আমার মেয়েলী মন তাই ছেলেদের সাথে মিলতে ভাল লাগে না।মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় একটা নাচের অনুষ্ঠানে হিজড়াদের সাথে পরিচয়,আবার সেই সময় নিজের পরিবর্তনও চাঁদমারি হয়।একটা সময় কচি গুরুমার সাথে মিলে তারপর শুরু হয় রাস্তায়,দোকানে এবং বাসাবাড়িতে পয়সা তোলা। আমি এক পর্যায় লেখাপড়া ছেড়েই দিলাম,তারা আমাকে এমনভাবে আকর্ষণ করে যে তাদের ছেড়ে থাকতে আর ভালই লাগে না।তবে নিপুণের এইসব এখন আর ভাল লাগে না,সে নিজে কোন সামাজিক কিছু করতে চায় যাতে হিজড়া সমাজ উপকৃত হয়।কিছু হিজড়াদের ভিতর ভয়ংকর রকম লোভ ঢুকেছে যে করে হোক টাকা রোজগার করতে হবে,ক্ষমতা পেতে হবে।রাজনীতির অন্ধকার গলির একজন হয়ে কোটি কোটি টাকা চাই যার কারণে হিজড়ার হাতে আয়ুধ,আর এতে যোগান দেয় আরমানের মত লোক এবং জাতীয় নেতা।ক্ষমতার জন্য হয় অস্ত্রের মহড়া,মরণ পণ লড়াই যার জের ধরে সেজুতি আজ মৃত্যুর মুখোমুখি।মাথায় হাতুড়ির আঘাত করে কচি হিজড়া,এলাকার দখল নিজের করতে পারলেই তার রাজত্ব চলবে আর রাজত্ব চললে আসবে টাকা আর টাকা।তাদের ভিতরও খুনখারাবি,তাহলে অস্ত্রো কি তাদের ভিতর থাকে,থাকলে কোথায় পায়,কে অস্ত্রের যোগন দেয়।এতে বুঝা যায় রাজনীতি জড়িত তাদের ভিতরে এবং বাহিরে।নব্বই দশকে ঢাকায় মগবাজার হতে উত্তরা পর্যন্ত সবটি নাজমা হিজড়ার দখলেই ছিল আর তা আস্তে আস্তে অন্যরা দখল করে নিজেদের মধ্য ভাগ করে নেয়।এই দখলকারির ভিতর আবার মাথাছাড়া উঠে উপদল।কচি হিজড়ার শিয্য সেঁজুতি,আপন এবং আলেয়া কচির সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে কচির রাজত্বে ভাগ বসায় শুরু হয় স্হায়ী কোন্দল যা রূপ নেয় আসুরিকভাবে। দিয়েছি,আমি যখন যা পেয়েছি সব সমান ভাগ করে সবাইকে দিয়েছি।কোন দিন কারো অংশ মেরে খাইনি,নিজের জিনিস নিজে তারা বুঝে নিয়েছে।হায়দার,পিংকি,কচি ও স্বপ্না এরা সবাই আমার শিয্য।আর এখন আমি নাজমা গুরুমা বুড়ো আর তারা রাজ্যের রাজা।এখন আমি চলাফেরা করতেও কষ্ট হয়,বয়স হয়েছে টংগীর বোর্ড বাজার এলাকায় বাসায় পড়ে থাকি।আগে মানুষ ইচ্ছাকৃত পাঁচ-দশ টাকা দিত,সারা দিন যা মিলত সবাই তা দিয়ে আহার চলত।এখন যে দোকানপাটে যে চাঁদাবাজি হয়,পাঁচ-দশ হাজার টাকা জোর করে নিতে চায় তাহা ছিল না।আরো অনেক কথা আছে যা বলা যাবে না আসল নকল মিলে আমাকে মেরে ফেলবে।গুরুমা নিজে আজ আতঙ্কে থাকেন কিন্তু এত টাকা কি করেন হিজড়ারা।আমি আজ নিঃস্ব কারণ কোন লোভ করি নাই আর কার জন্য সম্পদ করবো আমাদেরতো কোন অভিমুখী নাই।অন্যরা লোভে পড়ে টাকা বাড়ি গাড়ির পিছে ছুটছে,মারা গেলে কে খাবে।এই যে হায়দার একজন কুলি ছিল,আর কুলি হতেই কোটি টাকার মালিক বনে মগবাজারেই পঞ্চাশ লাখ টাকার বাড়ি কিনে।হায়দারের সাথে স্বপ্নার দ্বন্দ্ব পুরাতন।স্বপ্না পুলিশকে হাত করে হায়দারকে অস্ত্রোসহ ধরিয়ে দেয় একবার কারণ টাকার ভাগবাটোয়ারা।কচি নাকি কাজল হিজড়াকে গুম করে,এই কচিই পিংকিকে গুম করেছে।ওহ,কত ভয়ংকর এই সমাজও।এর ভিতর আবার গুপ্তচরও আছে,মানিক হিজড়া কখনো হায়দারের সাথে আবার কখনো স্বপ্নার সাথে থাকে।ঝুমাকেও স্বপ্না খুন করতে চেয়ে ছিল।এই ঝুমার সাথে অনেকজন তারা কেউ কেউ প্রকৃত হিজড়াও নয়।হাতের তালি,চাঁদা তোলা,বাসা বাড়িতে হানা দেওয়া সব স্বপ্নাই শিখিয়েছে আমাদেরকে।আসতে আসতে অনেক হিজড়া জমা হয়ে যায় তাদের সবাই একে অন্যের সাথে দাম্ভিক বাক্য বিনিময় জড়িত।হঠাৎ করে পুলিশের গাড়ি হাজির হয় কয়েকজনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় তারপর কি আমার অজানা। পরখ করে জানা যায় হিজড়াদের আদি পেশা নবাগত বাচ্চা নাচানো,আর সেখানে পাওয়া যেত বকশিস।আর তাতে হিজড়ারা খুশি থাকতো এবং জীবন চালাত।কিন্তু বর্তমানে তার উল্টো।দক্ষিন বনশ্রী,রামপরার একটা শিশু যার জন্ম গ্রামে এবং সন্তান জন্মের পর বাবা মা ঢাকায় বসবাস শুরু করেন।আর এই খবর হিজড়াদের কাছে চলে যায় এমনি দলবেঁধে হিজড়ারা হাজির।(চলবে)

১৬ তম পর্ব-------রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া)------- এই যে দোকানে দোকানে টাকা তোলে হিজড়ারা তা কি মানুষ খুশি মনে দিয়ে দেয়,না তা কখনো না।জোর জবরদস্তি করে এবং টাকা কম দিলে কুশ্রী কথা বলে তাই দোকানী সম্মান বাঁচাতে বাধ্য হয়ে হিজড়াদের টাকা দেয়।আর টাকা না দিলে জিনিস প্রত্রও নিয়ে যাওয়ার ভয়ে তাদের টাকা দেয় দোকানী।তাদের এই সব কাজ সমাজ বাঁকা চোখে দেখে কারণ তাদের কাজও বাঁকা তাহলে তাদের জীবিকা।কিন্তু তাদেরকে কেউতো আর সহজ কাজ দেয় না তাহলে জীবন ধারণের উপায় কি।এই সহজ কথার উত্তর জটিল বলে তাদের ভাবমূর্তিও জটিল।স্বপ্না,হিজড়া হওয়ার কারণে বাড়ি হতে বিতাড়িত হয়ে একদিন আশ্রয় নেয় নাজমা গুরুমার কাছে।এখন তার দখলে মগবাজার,গুলশান,বনানী,তেজগাও আর কাওরান বাজারের কিছু অংশ।এই স্বপ্না আর হায়দারের সম্পর্ক নষ্ট হয় ক্ষমতা ও অর্থের কারণে। আমরা একদিন নাজমা গুরুমাকে এলাকা ছাড়া করি এক সাথে চলবো বলে কিন্তু হায়দার প্রথমই আমার শিয্য সজিবের কান ভারী করে আমার বিরুদ্ধে বলে।এবং আস্তে আস্তে অনেকজনকে তার পক্ষে নিয়ে যায় এবং আমার নামে অনেকগুলি মামলাও করে।জানি না কি সত্য কি মিথ্যা কারণ এখন হায়দার মৃত।তবে মানিক এখন স্বপ্নার সাথে থাকে তখন জীবনের ভয়ে সে হায়দারের বাসায়ও যেত।এই মানিকই একদিন নানা অভিযোগ করেছে স্বপ্নার বিরুদ্ধে এখন সে স্বপ্নার একজন বিস্বস্ত সঙ্গী।যে স্বপ্নার বিরোদ্ধে এত অভিযোগ মানিকের তাহলে সে আবার স্বপ্নার কাছে কেন।আসলে সে কার লোক বুঝা কঠিন সব যেন তালগোল পাকনো।আমরা যারা তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ড দেখে তিক্ত বিরক্ত তারা হয়তো ভিতরের ভিন্ন দিকগুলি জানি না।এই ভিন্ন দিকের কারণে একই ব্যক্তি দুইজনের কাছে ঘটনার ভিতরও ঘটনা থাকে আর সেটা হল রাজনীতি। সেঁজুতি পুরো এক বছর পরে হাসপাতাল হতে ছাড়া পেয়েছে তাও এক পায়ের উপর ভর করে হাঁটতে হয়।হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে থাকার সময় বলা হয়নি কিছু কথা।কি সেই কথা। আমরা যে টাকা উঠাতাম তা সব কচি হিজড়ার কাছে জমা রাখতাম।আর সেই টাকা ফেরত চাওয়ার পর সে ফেরত দিতে রাজি হয় না,তখন খেকে শত্রুুতা শুরু হয়।সে দিন তারা মৃত ভেবে আমাকে ফেলে যায়,এেবং এখনো হুমকির ভিতর আছি কারণ কচি খুবই ভয়ংকর প্রকৃতির মানুষ। হায়দার হত্যা এবং সেঁজুতি হত্যা চেষ্টার মামলার আসামি হল এই সেই কচি। হায়দারকে কে মারছে সেটা আল্লাহ জানে,আমি মিথ্যা হতে পারি কিন্তু আল্লাহ মিথ্যা না।হায়দার মারা যাওয়ার পর আপন বাদী হয়ে আমাকে আসামী করে মামলা করে।কারণ আমাকে আমার জায়গা হতে বেদখল করে আমার জায়গা দখল করা তার লক্ষ্য।আমাকেও হত্যা করতে চেয়ে ছিল,আমার হাতে পিঠে এখনো আঘাতের চিহ্ন আছে এমনকি মাথাটাও খন্ড বিখন্ড।তদন্ত করে যদি আমি দোষী হই তাহলে যেটা বিচার হয় সেটা মেনে নিব এতে আমি ভয় পাই না। নিজেদের দ্বন্দ্ব নাকি সম্পদ,কোনটা কাল হয়ে ছিল হায়দারের,এলাকার আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব,হামলা-মামলা নাকি খুন-খারাবি।তবে মজা কিংবা ভয়ংকর খবর হল অনেক দিন গুরুমা হয়ে শিয্য নিয়ে থাকার পরও গুরুমা অস্ত্রোপাচার করে মেযে হিজড়ায় পরিনত হওয়া।টাকার জন্য মানুষ জীবনকে কতটা বেদনাদায়ক করতে পারে।আমরা যারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করি তারা এই বেদনার শতভাগের একভাগও বুঝবো না।তাদের প্রতি যদি ন্যায় বিচার করা না যায়,তাদের প্রতি আমাদের মনোভাব যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে সমঅধিকারের সমাজ গঠন সম্ভব না।হায়দার মরে নিজের এলাকা দখল রাখা এবং গুরুমা হিসাবে টিকে থাকার যন্ত্রণা হতে মুক্ত আজ।"বিধি তোমার বিধির বিধান বানাইলা দুনিয়া,নারী পুরুষ না বানাইয়া বানাইলা হিজড়া।বিধি নারী পুরুষ না বানাইয়া বানাইলা হিজড়া।কেউবা করে অবহেলা,কেউবা করে খেলা,আমরা যেন এই সমাজের মানুষ নামের খেলনা।ওহ ভাই মানুষ নামের খেলনা।ওহ বিধি....বিধি.. আমার"।(চলবে)

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

onupshakib2
২৪-০৩-২০২০ ১১:৫৬ মিঃ

খুব সুন্দর