এ তুমি ঠিক করলে বিধাতা
- আরিফ উল ইসলাম ২৫-০৪-২০২৪

তুমি এ ঠিক করলে না বিধাতা...


প্রতিদিন পথে দেখা হয়,
ফিরতি পথে তার সাথে।
দৈব সাক্ষাৎ? না, মিথ্যে
বলবোনা। দৈব মোলাকাত নহে।
অনেকটা ইচ্ছে করে হুড়মুড়িয়ে
তার সম্মুখে দাঁড়াই। ওকে অনেক
ভাল লাগে বলে। ঘন্টার পর
ঘন্টা ছাদে দাঁড়িয়ে চেয়ে চেয়ে
থাকি অন্তহীন পথের অনিমিখে।
নানা রকমের আজব মানুষ ঘুরে
ফেরে সে পথে;অথচ চোখ আমার
অনিমেষ খুঁজে মরে শুধু তারে।
মাঝে মাঝে হয় কি? ভর দুপুরে,
চৈত্রের খর রোদে ছাদে উঠি,
পলকহীন অগোচালো দৃষ্টি আমার সন্ধ্যে নামায়।
কিন্তু তার আসার ওয়াক্ত হয়না। দরদর
গড়িয়ে পড়া ঘামও বাষ্পীভূত হয়ে চুরি হয়ে যায়
বাতাসের আলিঙ্গনে। আচমকা! অবনত মুখে তারে
আসতে দেখলে, হেঙারে টাঙানো, সুগন্ধি মাখা
শার্ট জড়িয়ে বেরিয়ে পড়ি। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কিছু
সরেনা আমার মুখে। আজিবতো! একটু আগেই
ভেবে রেখেছিলেম কতো কি বলার আছে তাকে?
অবশেষে একপাশে সরে অব্যক্ত কথা অনুক্ত রেখেই
তার প্রস্থান-তোরণ খোলে দিই। আর সে?
আলতো হেসে কেট পড়ে।
নিয়ে যায় সাথে করে আমার হৃদয় ছিঁড়ে।
তখন হৃদয়ে পুনঃভাবনার জোছনা ঝরে...
এভাবেই চলছিল আমার দিন-কাল-ক্ষন।


বন্ধুদের সাথে নিদারুণ এক আড্ডায়
মজেছিলাম, হাতে চা'র পেয়ালা আর
দু'আঙুলের ফাঁকে আটকানো "টা"।
"টা" মানে বুঝেছো? একালে "চা-টা"-তে
টা সিগারেটকে আগলে ধরে। আঙুলেরত
ফাঁক গলে সিগাররেটের বাতিটা পরে গেলো।
মাথা তুলে দেখি, সে চলছে। সেই চুলের উড়াউড়ি;
মনে হয় যেন, কেউ এখনই সে চুল কয়লা-খনিতে
চুবিয়ে তুলেছে। মাপা মাপা চার আঙুলের কপালে
তার ক্ষনে ক্ষনে কালো কেশ নাঁচে। চুল আর তার
তর্জনির মাঝে যেন লুকুচুরি খেলা চলছে। সুরমার
ডিব্বায় স্নান করা ডাগর ডাগর লোচনরা যেন,
নিরবধি কথা বলছে। চঞ্চুর কোণ ঘেষে লেগে
আছে রোপালি হাসির অবিনাশী আভা...
সবই ঠিক আছে, আগেরই মতো; তবে সে
একলা নয় আজ। তার মন-পুরুষের হাত ধরে
পথ চলছে সে। আমার মনের চার পাশে দুখের
রাজারা জোট বেঁধেছে। দুখুরা ঘোমড়া মুখে
সুধালো আমায়, ভালইতো ছিলাম আমরা
বেকার। কেন তোমাকে জ্বালানোর কর্ম ঘাড়ে
চাপায়লে বাপু? চোখ মুদে আওড়ালাম, বিধাতা!
এ ঠিক করলে না। ওখানে ওর কোমল হাতের প্যাঁচে
আমার হাত থাকার কথা ছিলো। উদ্যানের গৌণকুঞ্চনে
ওর মাথা আমার কাঁধে থাকার ওয়াদা ছিলো।
তুমি এ ঠিক করলে না বিধাতা....

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।