মুদ্রামন্ত্রে প্রেমজাদু
- মারুফুল হাসান ২৯-০৩-২০২৪


বাসন্তী, তোমার দেহজমিন জুড়ে চৈত্রের খাঁ খাঁ । কোঠরাগত চোখ বলছে কেউ যেন জ্বালিয়ে দিয়েছে দেহের সবুজ ভূমি। আমার খুব জানতে ইচ্ছে হলো শ্যামল কন্যার বিরানভুমির কারণ। তুমি দেখালে দেহজুড়ে তপ্ত মুদ্রার ছাপ।

বাসন্তী একদিন আঁচল ভরে চিঁড়ে এনে বললে জীবনদা, তোমাকে আজ জাদু দেখাবো। প্রেমজাদু। দেখবে ? আমি বললাম দেখব এবং শিখবও। তুমি খাবল ভরে চিঁড়ে নিয়ে বললে তোমার যত মজার মজার কথা আছে বলো। আমি ক্ষণকালের জন্য রবীন্দ্রনাথের অমিত হয়ে গেলাম। কিছু উদ্ভট কথাও বললাম। তোমার চিঁড়ে চিঁড়েই থাকলো। কেঁচো, ব্যাঙ, তেলাপোকা কিংবা ধেড়ে ইদুর কিছুই হলো না । তুমি বললে জীবন দা, চিঁড়ে কিন্তু চিঁড়েই আছে। আমি বললাম এই তোমার জাদু। বিরক্ত হলাম বড্ড। তুমি এবার বললে জীবন দা একটা কয়েন দাও। যতবড় পারো। আমি একটা দশটাকার মুদ্রা দিলাম। তুমি চিঁড়ের মাঝ কয়েনটা ছেড়ে বললে, লাগ ভেলকি লাগ চোখে মুখে লাগ, আমার আর আমার ওস্তাদের চোখ বাদ দিয়ে সবার চোখে লাগ। জীবনদার চোখে বেশি করে লাগ। ছু, মন্ত্রে ছু,। বাঘে ছুলে সাতঘা । নারী ছুলে আঠার ঘা; এবার চিঁড়ে ভিজে যা। অমনি চিঁড়ে ভিজে গেল। কিভাবে সম্ভব! এবার মুদ্রা হাতে নিয়ে তুমি তোমার বুকে একটা ফু দিতে বললে । আমি তোমার মুখে এবং বুকেও ফু দিলাম। দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল তোমার সমস্ত শরীর। ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম। তুমি মুদ্রাটা আমার হাতে দিতেই নিভে গেল সে আগুন। অপরূপ স্নিগ্ধতায় ভরে গেল তোমার শরীর। মুদ্রাটা আমার হাতে দিয়ে বললে এবার আমাকে মারো। আমি ইতস্তত করলে ধমক দিয়ে বললে মারো না কেন? আমি তোমাকে আঘাত করলাম। খুব আস্তে। তুমি বললে জোরে। আমি জোরে আঘাত করলাম। তারপর আরো জোরে। তারপর আরো জোরে। তোমার মুখে স্বর্গীয় হাসি। কৃত্রিম নাকি অকৃত্রিম? আমি বললাম আমাকে শেখাও এ জাদুর মন্ত্র। তুমি বললে এ হচ্ছে মুদ্রামন্ত্র। যা তুমি কখনই শিখবে না।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।