কবিতাসমষ্টি তারিফ০৭
- মাহমুদুল মান্নান তারিফ - সোনালি কবিতা ২৯-০৩-২০২৪

সাত (৪৯-৫৬)
মাহমুদুল মান্নান তারিফ৪০৪৯
তাং০২১০১৬
আজো আমার ভাসে কানে

গেলো বছর গাড়িচালক
রাফিকুল হক বান্না
খোকার গালে থাবড় মারে
নামটি খোকার আন্না,
আজো আমার ভাসে কানে
আন্না খোকার কান্না।

রফিককে কই মারলি কেনো?
তাই জেনে সে হ্যাল্পার?
কিছু তোদের বদ মেজাজি
এই সমাজের ক্যান্সার,
ওরে! লোকটি কটু কথায়
অনেক বড়ো ড্যাঞ্জার!

আমার বড়ো দুঃখ জাগে
ঐ খোকাদের জন্য
দশের নীচে হ্যাল্পারি উফঃ
মা-বাবা কি বন্য?
এসব শুনলে ঐ মা-বাবায়
কেউনা দেবে ধন্য।

তারিফ৪০৫০ ০৪১১২০১৬
আয় খাবি দুধভাত!

নিশি চড়ে শিশির ঝরে
দৃষ্টি পড়ে টিনের চালে
টিনের চালে বৃষ্টিস্বরে
শব্দকরে তালবেতালে।

জাগলো খোকা বৃষ্টিস্বরে
বৃষ্টিমধুর টাপুরটুপুর
আরে বাবা শিশির ঝরে!
কণায় কণায় রাত্রিদুপুর।

শিশিরকণা ঘুমভাঙানি
টপটপানি - টলটলানি
খোকার কান্না ছলছলানি
থামলো হাসি খলখলানি।

তারার আলো চাঁদের আলো
নিভে গেলো ঝলমলা
ঝলমলানির রাতরি কালো
শিশির ঢাকা মলমলা।

বৃষ্টিস্বরে শিশির ঝরে
শিশির ঝরে বৃষ্টি পড়ে
ফর্সা হলো ঐ
মাকে বলে ছোট্ট খোকা
চাঁদ-তারকা কই?

মা বলেছে ভোর হয়েছে
দূর হয়েছে রাত
ঐ দেখে নে ঊষার রবি
আয় খাবি দুধভাত!


তারিফ৪০৫১ ০৭১১১৬
মনতো দেখে তাকে

কোথায় গেলো প্রাণের মানুষ,
পাইনা খুঁজে
নিত্য তারে আমি শুধু খুঁজি।
বুকজ্বলে হায় হলো ফানুস,
কেউ কি বুঝে
চিত্তব্যথা নিজে শুধু বুঝি।

কেমন আছে সে কি করে,
ভুলে স্মৃতি
ভালোবাসা অনেক দূরে থাকে,
সেতো আছে মনের ঘরে
স্নেহ-প্রীতি
যত্নে রাখি মনতো দেখে তাকে।

তারিফ৪০৫২ ০৯১১১৬
বরইপাতা-গরমপানি Tarif'sSong52

খাঁটের উপর রেখে স্বজন ধোয়াবে আমায়,
বরইপাতা-গরমপানি ঢালবে আমার গা'য়।।

কিসের বড়াই করি আমি কিসের বাড়িঘর?
কবর ছাড়া এই জনমে সব-ই আমার পর।
ভাইবেরাদর পুত্রকন্যা কাঁদবে সেদিন হায়,
থাকলে বেঁচে কাঁদবেঝারে জনমদুখি মা'য়।

দীর্ঘজীবন পেয়েও আমার নেইত পুণ্যকাজ
কালহাশরে রবের ধারে পাবো শরম-লাজ।
ভাবছি মনে আমিই শুধু এইযে অবেলায়
মনরে পাপি রবের সামনে কী শর্মে দাঁড়ায়!

বুঝলি না রে ঘৃণ্যআঁখি ঝ-রালি না জল
তোর নয়নে রবের দয়া কেমনে যে হয় বল!
বুঝলিনা রে অশরীরী আত্মা তুই রে হায়,
তুইতো যাবে সত্তার দিকে শরীর মৃত্তিকায়।।

তারিফ৪০৫৩ ১২১১১৬
শীত-দুঃখী

গরিবদুঃখী দুস্থলোকের নেইতো কোনো সম্বলও
যা দিয়ে সে কিনতে পারে প্রবল শীতের কম্বলও।
ধনী থাকে মহাসুখে
নিঃস্ব মরে ব্যথা-দুখে
শরীর ঢাকার মতো জানি পায়নি পাতা চম্বলও।

কিছুসংখ্যক সমাজপতি দান করেন শীতবস্ত্র যা
ভাবেন তারা সুযোগ পেলে বস্ত্রে দিবেন অস্ত্র-ঘা।
যখন এলো ভোটাভোটি
তখন তাদের ছুটাছুটি
ভোট না দিলে তখন তারা করে দেন বিবস্ত্র হ্যাঁ।

তারিফ৪০৫৪ ১৪১১১৬
হেমন্তকবিতা

শীত-বারোতা নিয়ে এলো, সুবাস ঋতু হেমন্ত,
তারি পরে আসছে ধীরে, চলে যাওয়া বসন্ত,
ঋতুরাজকে সুবাস বলা, অঘ্রাণ এতে জ্বলন্ত,
নবান্নে সব দিনমজুরের, ক্ষুধা-কাতর কমন্ত।

শাদাগাঙচিল নিত্য দেখি বিলেঝিলে উড়ন্ত,
হেমন্তের সুশীতল হাওয়ায় স্নিগ্ধতা অফুরন্ত।
পূর্বাকাশে রক্তিম আভা, সূরুজ মামা উঠন্ত,
হিম-সকালে বাগানভরা, সুরভি ফুল ফুটন্ত।

হেমন্তকাল তৃপ্তি মিটায় ফলরস এতে ঢলন্ত,
পাক্কাতাজা আম ও জামে মন খুশিতে টলন্ত,
কৃষাণ-শ্রমিক আনন্দ বেশ নবান্নে ঘর ভরন্ত,
শরতকালের মাঝে করে নবান্নকে বরণ তো!

ফজরনামাজ পড়ে ডাকে মা সাকিনা সুমন্ত!
ঘড়িরকাঁটা সাতটে বাজে এক্ষণো তুই ঘুমন্ত!
কাস্তেহাতে কৃষাণ কত্তো মাঠপানে দেখ চলন্ত!
অঘ্রাণে তোর আলস্যবোধ শরীর কিরে গলন্ত?

তারিফ৪০৫৫ ১৭১১১৬
লিমেরিক

বাংলাভাষার শব্দময়, অভিধানে জব্দনয়
নিত্যনতুন শব্দকোষ, কবির মনে কথা কয়।
প্রাচীনকালের শব্দযোগ
করলে ধরবে অব্দরোগ
একেই বলে শব্দরোগ,সল্প জ্ঞানী কেমনে সয়।

তারিফ৪০৫৬ ১৮১১১৬
লিখবো না হয় শিখবো

শেষ বিকেলে বসে টুলে ভাবছি যে কী লিখবো
দেখে গাছের সবুজপাতা লিখবো না হয় শিখবো।
বলি লিচুগাছকে আমি কেনো পাতা-সবুজ!
সে আমাকে বললো শোনো মানুষ তুমি অবুঝ!

লজ্জাপেয়ে ফিরে এলাম গেলাম কাঁঠালগাছে
বলি তাকে আচ্ছা বললো কাঁঠাল কোথায় আছে?
উত্তরে সে বললো আমায় পাগল নাকি বোকা!
হৈমন্তে যে খোঁজো কাঁঠাল কীযে অবুঝ খোকা!

প্রশ্নকরি কমলাগাছকে কমলা কেনো গোলগাল!
সে আমাকে বললো শোনো করছো কেনো গোলমাল!
প্রশ্নকরি তেঁতুলগাছকে তেঁতুল কেনো হয় টক!
আমাকে সে বললো শোনো করছো কেনো বকবক!

নারিকেলগাছকে প্নশ্নই ঠিক ফলে কেনো জলভরা!
ধিক্কার দিয়ে বললো সেতো আমার বুঝি মনমরা!

প্রশ্ন করতে আমগাছে যাই মজার কারণ জান্তে
সাহস বুকে গিয়ে দাঁড়াই উঠানের এক প্রান্তে।
ভয়ে আমি ফিরে আসি করতে পারে রাগ সে!
কাঁঠালগাছের বকা স্মরি পাগল ডাকার দাগ যে!

বরইগাছকে না জিজ্ঞাসী কেনো কাঁটা ডালে
ভাবনা করি মারতে পারে দুটো থাবা গালে।
পেঁপেগাছকে প্রশ্নকরি পেঁপে কেনো মিষ্টি!
গাছটি আমায় বললো খোকা দাও উপরে দিষ্টি!

বুঝতে পারি এখন ঠিকই উত্তরটার রহস্য,
উপরেতো আল্লা'র আরশ ইঙ্গিত তাঁর অবশ্য।

Mahmudul Mannan Tarif7

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।