বাড়ী ফেরা
- শিশির খান - স্মৃতিঘর ২৫-০৪-২০২৪
কী করছো?
বাড়ী ফিরছি,
অবশ্য একে ঠিক বাড়ী ফেরা বলেনা,
রাতে নির্জন পৃথিবীর নীরবতা থেকে
নিজেকে আড়াল করে নিজের একান্ত
একাকীত্বের আঁধারে আশ্রয় নেয়া।
কেন? কেন এমন বলছো?
বাড়ি তো তোমার সুখের নীড়
সেখানে তোমার সবাই আছে!
হ্যাঁ, বাড়ী!
ইটের দেয়ালে ঘেরা কতগুলো ঘর
যা অনুভূতিহীন জড় বস্তু মাত্র।
যেখানে সবাই এখন গভীর নিদ্রাচ্ছন্ন।
সেখানে আমার বাড়ী ফেরার চিন্তায়
উৎকণ্ঠিত হয়ে কেউ পথ চেয়ে নেই।
বাড়ীর পোষা বেড়ালের মতো
আমার বাড়ী ফেরা কারো কাছে
কোন বিশেষ মূল্য রাখে না।
এমন করে কেন বলছো?
আর কেউ না থাকুক
তোমার সহধর্মিণীতো আছে,
আর তোমার রাজকন্যা?
সহধর্মিণী তার সুখ নিদ্রায় এমন মগ্নথাকেন
যে আমার আগমন চিন্তা তা ভঙ্গ করে না।
আর রাজকন্যা,
সে তার মায়ের স্তনপানে ভুলে যায়
তার বাবা দূরে আছেন।
এক সময় মা জিরো বাল্ব জ্বালিয়ে
ঢুলুঢুলু চোখে আমার পথ চেয়ে থাকতেন,
এখন আর থাকেন না;
তার পুত্রবধূ আছে জেনে তিনি নিশ্চিন্ত।
এই কিছুদিন আগে অবধি
আমার দাদী আমার পথ চেয়ে থাকতেন।
আমার গলা শুনে সেই নব্বই বছর বয়সী
কান সজাগ হয়ে উঠত—
অবুঝ শিশুর মতো জেদ করতেন
আমাকে ছাড়া উনি খাবেন না।
তবে যে বললে, কেউ নেই
তোমার পথ চেয়ে বসে থাকার?
এখন আর উনি জেদ করেন না,
আমার গলার স্বর শোনার জন্য
তার কান আর সজাগ থাকে না,
অভিমানে আমাকে ছেড়ে চলে গেছেন
তার একান্ত নিজের বাড়ীতে।
হ্যাঁ, সেটাইতো আসল বাড়ী!
ইটের দেয়ালে ঘেরা নয়,
মাটির চার দেয়ালে ঘেরা বাড়ী।
আমারও এমন একটি নিজের বাড়ী হবে,
আমিও সে অপেক্ষায় আছি,
নিজের একান্ত সে বাড়ীতে ফিরবো
একদিন!
মন্তব্যসমূহ
এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।
মন্তব্য যোগ করুন
কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।