মৃত্যুবীজ
- এ কে সরকার শাওন - আপন-ছায়া ২০-০৪-২০২৪

সৃষ্টির আছে ধ্বংস,
জীবনের আছে মৃত্যুবীজ!
মৃত্যু এমনই এক চিজ!
মৃত্যুলোকের স্বাদ
গ্রহণ করিবে প্রত্যেক
প্রাণী নীজ নীজ!

সকল মৃত্যু আমায় ব্যাথিত করে।
বুকে দুঃখ ও দহন জাগায়!
যদিও মৃত্যু ধ্রুব তারার মত চির সত্য!
মৃত্যু সবচেয়ে কঠিন, নির্মম, নির্মোহ,
অত্যাবশ্যকীয় ও অবশ্যম্ভাবী!
মৃত্যু অতি কল্যাণকর!
তার চরণে আমি চুমি!
মৃত্যুহীন কল্পিত পৃথিবী,
ঝঞ্জালপূর্ণ হট্টগোলের
মহাঅশান্তির আবাসভূমি!

রাজা মহারাজের রাজপ্রসাদ
কিংবা সর্বহারার কুড়েঘর;
সর্বত্র মৃত্যুর অবাধ বিচরণ,
যখন তখন সর্বক্ষণ।

মৃত্য কারো পর নয়
সবার সাথে সে একই সুরে কথা কয়;
কাছে এসো বাছা,
যান কবজ করতে দাও আমায়।
সৃষ্টিকারীর নাম জপ শেষবারের মত;
তোমার ভবের হাটের রস-কষ-রঙ্গ,
জারিজুরি, বাহাদুরি, নেতাগিরী
এবার সব হবে সাঙ্গ!

আমি মৃত্যুভয়ে মোটেই ভীত নই!
বিধাতার কাছে প্রার্থনা তিনখানি
অপঘাত অপমৃত্যু নয়,
নির্ঝঞ্ঝাট স্বাভাবিক মৃত্যু চাই।

আমার জীবনের পথ পরিক্রমার
কর্মকাণ্ডগুলি মৃত্যুর কেয়ামতে
ধুয়েমুছে শেষ হয়ে যাবে একাকার;
পচে গলে মাটির মানুষ মাটিতে মিশে
নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে রক্ত-মাংস-হাড়!

কারো স্মৃতিপটে আমি যেন না থাকি;
না থাকি কারো বিরহ বেদনার সুরে!
অশ্রুসজল নয়নের তীরে,
না ভাসায় যেন কেউ বিলাপ-তরী
আমার চলার স্মৃতিচিহ্ন ধরে!

মৃত্যুকালে কারো বোঝা হয়ে
জীবন দীর্ঘায়িত না হোক।
আমার মৃত্যুতে না থাকুক
কোন দুঃখ পরিতাপ শোক!
নিরবে নিভৃতে একাকী
দেয়ালে হেলান দিয়ে
কেউ পাথর বনে না যাক!
কেউ না ফেলুক দীর্ঘশ্বাস!
অশ্রজলে মুছে না যাক
কারো আখির কাজল
ভেসে না যাক তপ্ত বুক!

নিদ্রা থেকে চিরনিদ্রায়
চলে যাব না ফেরার দেশে
দীনহীন বেশে স্থায়ী ঠিকানায়!
যাবার বেলায় শেষ মিনতি
হে নির্বাক পৃথিবী, হে পৃথিবীপতি,
তাদের তুমি রেখো সুখের ছায়ায়;
যাদের আবাস ছিল নিশিদিন
আমার মনের ছোট্ট আঙ্গিনায়।

১৫ জুন ২০১৯
শাওনাজ, উত্তরখান, ঢাকা।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।