যমের বাড়ী
- এ কে সরকার শাওন - বাশীঁওয়ালা ২৫-০৪-২০২৪

বাবা ছিলেন বৃটিশ ফৌজ
রক্তে ছিল স্বাধীকার নেশা!
শক্ত হাতে অস্ত্র চালনা
রপ্ত করেছিলেন খাশা!

একাত্তরে কিছু কমরেডকে
বাবা দিয়েছিল অস্ত্র প্রশিক্ষণ!
তাই রাজাকাররা চটেছিল,
তাঁকে নির্মূল করবে ছিল পণ!

ছোট্ট হুজুরের কান কথায়
রুষ্ট হয় পাক মেজর,
কিলিং মিশনে নাম আসে
নিশ্চুপ সবার অগোচর!

এপ্রিলের কাল সেই দিন
সশস্ত্র আর্মি লঞ্চে চলে!
বরিশাল থেকে ঝালকাঠিতে
একটায় ঘাটে নোঙর ফেলে!

বাবার ভাগ্য ছিল সুপ্রসন্ন
মহান সলিম মিয়া যান জেনে!
তিনি ব্যান্ক ম্যানেজারকে
ফোনে বলেন সঙ্গোপনে!

বেলা ১২ টায় জয়নুল সাহেব
দ্রুত ডেকে বলেন বাবাকে,
“গনি ভাই, ঝালকাঠি ছাড়ো
আর্মি আসছে মৃত্যদূত রূপকে!

বাবা একলাফে রিক্সায় উঠে,
দুই মিনিটে উদ্বোধন স্কুলে!
পাঁচ মিনিটে জলিল খলিলকে
এক করে রিক্সায় নিল তুলে!

পাঁচ মিনিটে বাসায় ফিরে
পাগলের মত বলে মাকে,
“সালেহা, জলদি রিক্সায় ওঠো
আমরা বড় দুর্বিপাকে!”

পরম বন্ধু মৌজে আলী
বললেন হেসে শ্রদ্ধায়,
“নিশ্চিন্তে বাড়ী যান ভাই
বাসা রইলো মোর জিম্মায়!”

বাবা মা ছোট্ট তিন বোন
উঠলেন একটি রিক্সায়
আমরা তিনভাই অন্যটিতে
রিক্সা তাঁদের পিছু যায়।

বেলা ঠিক একটায় পৌঁছে
দেখি লঞ্চ বুঝি ছেড়ে যায়!
তাড়াহুড়া করে একটার লঞ্চে
ঠাঁই পাই বিধাতার কৃপায়!

ঘাতকের লঞ্চ ভিড়িল ঘাঁটে
আমাদেরটা দিল ছাড়ি!
যদিও এবার রক্ষা পেল
বাবা দেখলো যমের বাড়ি!

লেখার সময়: সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৯
লেখার স্থানঃ শাওনাজ, ঢাকা।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।