সভ্যতার সংস্কার
- আশরাফুন নাহার ২০-০৫-২০২৪

আঁধার রজনী নিস্তব্ধ ধরনী,
সবাই ফিরেছে নীড়ে,
একা আমি অচেনা পথে চলেছি ধীরে ধীরে।
সম্মুখে প্রাচীন ঘর-
ধূ-ধূ প্রান্তরে কে থাকে ঐ ঘরে?
খানিক কৌতুহল মনে ধরে।
এ কী! পশ্চাতে কে করে মানা।
এ যে অদৃশ্য,অচেনা আমারে করেছে হানা।
"অমঙ্গল ঐ ঘরে,
অশুভ নিরালোক ত্রাস
তোমাকে করবে গ্রাস।
তোমার কি নেই জানা?
যেও না ঐ ঘরে।"
মানা সত্ত্বেও দুয়ারে কড়া নাড়ি,
বন্ধদ্বার খুলতে হল না দেরী।
আশ্চর্য ব্যাপার!কে খুলল দ্বার?
কাউকে দেখিনা-শুধুই আঁধার।
ভীত হৃদপিন্ড মোর আঁতকে উঠে বারবার,
দুরু দুরু কাঁপা হৃদপিন্ড চেপে ধরি।
বিবেকের পরিহাস-"কাপুরুষ ওরে,
মৃত্যুরাজ্যে এসে মরেছ মৃত্যু ডরে।"
ভয় ঠেলে হাঁকি জোরে-"কেউ কি আছেন ভিতরে?"
জবাব এল না উত্তরে।
এগিয়ে দেখি এ যে লাশের স্তুপ,
তাদের ঘিরে জ্বালিয়ে রেখেছে কে ধুপ?
সাদাকাফনে লাশ আতরে চাদরে পরিপাটি ভারী,
কোথায় এলাম? একি লাশের বাড়ি!
হাজার বছরের পুরোনো তবু এখনো সদ্যমৃত,
সন্দেহ জাগে প্রাণে-আমি কি জীবিত!
সারি সারি সাজানো প্রাচীন হাঁড়ি,থালা,বাটি-
পিতল,কাঁসা,মাটি নির্মিত।
আগেকার জিনিস যত তাদেরই ব্যবহৃত।
টুং টাং ভাঙে সব আমার পায়ের আঘাতে।
বদ্ধ জানালাগুলো ধূলো-ময়লা তাতে।
বিষাক্ততা মুক্তি পেতে খুলে দিলাম সবকটি।
অজস্র সূর্যরশ্মি এসে আঁধার হল দূর,
দক্ষিণা বাতাসে এল সুগন্ধ,
এতকাল কেন তবে সব ছিল বন্ধ?
ঘরে আর নেই কোনো লাশ,উধাও থালা-বাটি,
ধুয়ে মুছে কে করেছে সব এতটা পরিপাটি।
বিস্ময়ে হতবাক চোখে চেয়ে থাকি,
অলৌকিক লাগে সব তাই হয় নাকি!
আমার স্পর্শে আঁধার ঘুচেছে কি সত্য!
জীর্ণতা ভুলে পেয়েছে নতুনত্ব।
সেই সাথে ভেঙে গেল ঘুমটি আমার,
স্বপ্নে দেখেছি সূচনা এক নতুন সভ্যতার।
ফেলে পিছুটান,জরা-জীর্ণতা,অন্ধ কুসংস্কার,
নয় শঙ্কা চল সম্মুখে আন রে সংস্কার।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 2টি মন্তব্য এসেছে।

asrafunnahar
০৪-০৮-২০১৪ ১৭:০২ মিঃ

কুসংস্কার মুক্ত পৃথিবী চাই

asrafunnahar
০৪-০৮-২০১৪ ১৭:০০ মিঃ

কুসংস্কার মুক্ত এক পৃথিবী চাই
এই আশায় লেখা কবিতাটি