মায়া , মমতা ও মানবতা যেন আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে । এই মহামারী শেষ হলে তা হয়তো আরো বেড়ে যাবে।
- ফয়জুল মহী ২৬-০৪-২০২৪

সন্তান বাবার মৃত লাশ হাসপাতালে রেখে চলে যাওয়া আমাদের দেশেরই ঘটনা । তাও আবার পেনশানের টাকা উঠাতে যেন কোন সমস্যা না হয় তার জন্য বাবার আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে যায়। মাকে রাতের আধারে গভীর জঙ্গলে রেখে চলে যায় নিজ সন্তান। প্রতিবন্ধী একজন লোককে বাসায় একা ফেলে চলে যায় স্ত্রী ও সন্তান। আর এই সন্তানকে মা পেটে নিয়ে এক একটা হিমালয় পাড়ি দেয় নয় মাসে। সন্তানের প্রস্রাবে ভিজা বিছানায় রাতের পর রাত যাপন করে শীত কিংবা ভরা বর্ষায়ও। আল্লাহ পর মাথা নত করতে হলে মায়েরই তা পাপ্য। বাবা এই সন্তানের সুখের জন্য পৃথিবীর এক পান্ত হতে অন্য পান্তে ছুটে চলছে । কত বাবা যে বরফের পাহাড় এবং ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে আল্লাহ এবং সন্তানের নাম মনে করেছে তার হিসাব কোন দিনই হবে না । কত বাবা যে মধ্যপাচ্যে বর্বর আরবের লাথি আর থাপ্পরে সন্তানের মুখ কল্পনা করে নীরবে চোখের জলে বুক ভিজিয়েছে তার হিসাব কখনো হবে না। করোনায় আক্রান্ত সন্তানকে বাবাই কাঁধে নিয়ে ছুটেছে । আরে একদিন আপনি নিজেই মা হবেন , বাবা হবেন। আর তখন ফিরে পাবেন কর্ম ফল। আল্লাহর কাছে শোকর আমরা মা বাবা নিয়ে সুখেই আছি। নেইমা তোমার বিধাতা । সন্তান যদি এমন আচরণ করে তাহলে অন্য লোক কেমন আচরণ করবে। এইতো ভাবতেই পারি না। কারণ করোনা পরিবর্তি বিশ্ব হবে নিজে খাই নিজে বাঁচি। আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং আইন ও ফিন্যান্সের চেয়ারম্যান এমিলিয়াস অ্যাভগোলিয়াস বলেছেন, 'বৈশ্বিক মন্দার মাঝে বিশ্বে দ্রুত চাকরি হারাচ্ছে কোটি কোটি মানুষ। বিলিয়ন ডলার ব্যবসা ও শিল্প সংরক্ষণে ব্যয় করা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত কোটি’ কোটি লোক চাকরি হারাতে পারে।' আমিও আশংকা করছিঃ ———————————— ——————————— বাংলাদেশেও এর প্রভাব হয়তো কোন অংশেই কম পড়বে না । প্রবাসী যারা করোনার হাত থেকে বাঁচার জন্যই হোক আর নাড়ীর টানেই হোক দেশে এসে গিয়েছে তারাও বাংলাদেশের বোঝা হয়ে গিয়েছে । পাশাপাশি লক্ষ কোটি লোক চাকরি হারিয়ে বেকার জীবন যাপন করবে । এমনিতে কয়েক মিলিয়ন শিক্ষিত বেকার আছে । ওদিকে রোহিঙ্গা তো আছেই । আমরা দুর্যোগের যেত সামনে যেতে চলেছি, তা অতি ভয়ানক । তবুও আমরা সেই একমাত্র মালিকের কাছেই সবকিছু থেকে আশ্রয় চাচ্ছি । হে আল্লাহ্‌ তুমি আমাদের করোনার হাত থেকে বাঁচিয়ে দাও এবং করোনা পরবর্তী দুর্ভিক্ষ থেকেও রক্ষা করো । এখন কি করা যেতে পারেঃ (উদাহরণ ) ————————————— ——————————— আমি একটি লন্ড্রিতে কাজ করতাম, লন্ড্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, চাকরী নেই। এখন কি করবো? উত্তরঃ আপনি লন্ড্রিতে কাজ করতেন, তার মানে আপনি আয়রন এবং ওয়াশিং এর কাজ জানেন। এখন আপনার চাকরী দরকার, পরিবার চালাতে টাকা দরকার। হাতে টাকা নাই। কি করবেন? আয় রোজগারের জন্যে কিছু একটা তো করতেই হবে। ঘরের কোন একটি অপ্রয়োজনীয় জিনিস (টেলিভিশন) বিক্রী করে দিন। হ্যাঁ , ধার না নিয়ে বিক্রী করে দিন। ধার আরও ভয়ানক। না খেয়ে থাকলেও ধার করবেন না। টিভি বেচে দিয়ে একটা ওয়াশিং মেশিন কিস্তিতে নিয়ে আসুন। আপনার মহল্লার লোকজনকেে এসএমএস করে দিন । আপনি তাদের বাসা থেকে কাপড় নিয়ে গিয়ে ওয়াশ করে ফেরত দিবেন। ফেসবুকে e-dhopa নামের পেজ করে নিন। এলাকায় প্রমোশন চালান। ডাক্তার এবং পুলিশের ইউনিফর্ম ফ্রী ধুয়ে দিন । ইমোশনাল গেম খেলুন, মার্কেটিং কিভাবে করা যায়, ভাবুন। ২-৩ মাস যাওয়ার পর, দেখবেন, কাজ বাড়বে। তখন, ভেবে দেখবেন, চাকরীতে ফিরবেন, নাকি ব্যবসা করবেন। মনে রাখবেন, টাফ টাইম, অনেক সমস্যা, চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, নতুন বিজনেস আইডিয়া সামনে নিয়ে আসে। এই টাফ টাইমে মুভি দেখে, গেম খেলে সময় নষ্ট না করে, নিজেকে নিয়ে ভাবুন। বিকল্প কী করা যেতে পারে। আপনি কি কি কাজ জানেন? কি কি স্কিল আছে? কোনটা করলে এখন পয়সা পাবেন? ভাবুন , ঠান্ডা মাথায় । আপনার সমস্যার চমৎকার সমাধান বের হবে , আপনি নিজেই সেটা বের করতে পারবেন। হতে পারে, তা আমার দেয়া সমাধানের চেয়েও অনেক গুণ ভালো। যদি কোন সমাধান মাথায় না আসে তাহলে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করতে পারেন । জমিতে শাকসবজি করা যেতে পারে । মনে রাখবেন এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী রাখা যাবে না । এখনি পুকুরে মাছ চাষ করা শুরু করেন । মহিলারা হাঁস মুরগি পালন করা বাড়াতে হবে। তাহলে নিজের প্রয়োজনীয় ডিম এবং মাংসের যোগান হবে। বেশী হলে বিক্রি করা যাবে। বুঝা দরকার সময় খুব খারাপ আসছে সামনে। হে আল্লাহ আমাদের সঠিক ও সুন্দর পথ দেখিয়ে দিন I
সরকারের প্রতি আবেদনঃ

———————————————————————
অনেক আগে পড়ে ছিলাম সমাজতন্ত্রের দেশ ভেনেজুয়েলা কথা । তারাক একদম গ্রামে যেখানে কৃষি উৎপাদন বেশী ঠিক সেখানে সরকারীভাবে ূকোল্ড স্টোর গঠে তুলেছে। কৃষি মৌসুমে একেবারে কৃষকের জমি হতে সরকার উৎপাদিত পণ্য ন্যায্য দামে খরিদ করে স্টোরে জমা রাখে অফ মৌসুমের জন্য। এবং একই সময় শহরেগুলোতেও ন্যায্য দামে সরবারাহ করে । এতে যেমন কৃষক সঠিক দাম পায়। শহরের মানুষও নতুন শাক সবজি পায় কম দামে । আবার পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় অফ মৌসুমেও ঠিকভাবে সরবারাহ দিতে পারে সরকার যার কারণে দাম থাকে হাতের নাগালে। এতে কৃষক খুশী জনসাধারণও খুশী। আমাদের দেশে কৃষক হতে কম দামে জমি হতে পণ্য কিনে একদল প্রতারক । তারা মজুদ করে আবার সুবিধামত তারাই চড়া দামে শহরে বিক্রি করে। লোকশান কৃষকের আর পণ্যের দাম বেশী বলে গালি সরকারের। মুনাফা মধ্যস্থতা ভুগীর । আমাদের দেশ কৃষিপ্রধান দেশ বলে ভেবে দেখবেন মাননীয় সরকার ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

SAYEDA_YEASMIN
২৫-০৪-২০২০ ০৬:৩০ মিঃ

চমৎকার উপস্থাপন!