মন আমার পাথর !!
- ইবরার আমিন ২৫-০৪-২০২৪

আমারও মন ছিল ।
ছিল মন বুঝার ক্ষমতা,
আমারও ভালবাসা নিয়ে ছিল ব্যস্ততা ।

খুব নরম ছিল আমার মন ।
একটু তে কেঁদে ফেলতাম,
অভিমান করে গাল ফুলিয়ে রাখতাম !

আজ,, এখন ?
এগুলোর কিছু আমার মাঝে নেই,
আমার মন এখন খুব শক্ত ।
আমার মন এখন পাথর ।

শুনতে চাও, কেন ?
শুনো,,
সেদিন ছিল শুক্রবার ।
সকালে গিয়েছিলাম রসতলির হাটে,
বিকেলে ফিরে এসে দেখি মা উঠে গেছে খাটে ।
জানতে দেয়নি বাবা কিছু আমাকে,
কারন উনিই হত্যা করেছিল গলা টিপে মাকে ।

তিনদিন পর ।
বাবা বিয়ে করলেন পুনরায়,
পড়ে গেলাম আমি অবহেলায় !
বলেছিলাম কে এই মহিলা ?
বলে দিলো
এ তোমার নতুন মা জমিলা ।

ঘৃনায় সেদিন বাবাকে দিয়েছিলাম
ধমক,
থাপ্পড় পড়েছিল তখন আমার গালে ব্যাপক ।
সেদিন ই ছেড়েছিলাম ঘর,
সেদিন থেকে আমার ভিতর আমিও
পর !

আমিও ভালবাসতাম ।
নাম ছিল তার প্রিয়া,
কোথায় যাবো, কি করবো, বললাম তাকে গিয়া ।

সে কি বলেছিল জানো ?
শুনো,,
কে তুমি ?
আমার কাছে কেন ই বা এসেছ ?
রাস্তার ছেলেকে আমি চিনিনা,
কখনো চিনতাম কিনা তাও জানিনা !

রাগে কিংবা অভিমানে,
মারলাম তার গালে থাপ্পড় !
আমাকে নিয়ে বসল গ্রামে সালিশ,
ধরে নিয়ে গেল এসে পুলিশ !

কোন অপরাধে ?
জানো !
প্রেমিকার আংটি চুরি !

জেলখানায় ঢুকতেই পড়লো পিঠে বাড়ি,
প্রকৃত চোরেরা দিনরাত মারতো ঝাড়ি ।
দুই দিনে পেতাম শুধু এক থালা ভাত,
খেতে বসলেই জ্বলতো পুরো হাত ।

লাঠির বাড়িতে রক্তাক্ত করে দিতো হাতের আঙ্গুল,
গরম পানিতে ধুয়ে দিতো মাথার চুল !

এই যে দেখো !
বৃদ্ধ আঙ্গুলের মাথায় নেই নোখ,
রাতের বেলা ঘুম আসত না ফুলে থাকতো চোখ ।

জেলখানায় ছিল এক চাচা,
নাম তার সিরাজুদ্দৌলা ।
তিনি বুঝতে পেরেছেন আমাকে কিছুটা,
খুলে দিয়েছিলেন তিনি জেলের পথটা ।

তারপর আর কখনো কাঁদিনি,
ভাবিনি আর নিজেকে নিয়ে ।
আমিও এখন খুন করতে পারি,
গলা টিপে নয়
পেটে চুরি ঢুকিয়ে !

শুনেছি মায়ের হত্যাকারী সেদিন খুন হয়েছে,
আমি তাও কাঁদিনি ।
কারন খুন করতে কাঁদতে নেই,
সেই খুনি যে আমিই !

এখন আমি এই শহরের সেরা মাস্তান,
দশের ভিতর আমার স্হান ।
আমার ভিতর আর মায়া নেই ।
নেই ভালবাসা,
এখন আমি পাথর, আমার সব কিছুই পাথর ।

নায়লা,,
আমি জানি তুমি আমাকে ভালবাসো ।
কিন্তু আফসোস,
এই খেলায় আমি নিজেকে জড়াতে
চাইনা ।
এখন আমি পাথর,
মায়া নেই আমার ভিতর ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।