বিষন্ন রবিবার
- আবরার আকিব ২০-০৫-২০২৪

প্রিয়
বিষন্ন রবিবার,
তোমার ছায়ার সাথে আমার ছায়ার দুরুত্ব বেড়ে গেলো বহুদূর।
শতকোটি গ্রহানু ছিটকে এসে বিস্ফোরিত হয়ে অঙ্গার করলো আমায়।
বিষন্ন রবিবার আমায় করলো পৃথিবী হতে অবাঞ্চিত। চৈত্রের দুপুরে তীব্র তাপদাহে আমার শবদেহ পড়ে আছে একা। আমি নিঃসঙ্গ, অনিকেত।
অথচ এ বিষন্ন রবিবার শেষ হতো আমার প্রতীক্ষার প্রহর।
এই বিষন্ন রবিবার আমায় ভেঙে চুড়ে নিঃশেষ করে দিলো।
কেন এলেন জীবনে? নিয়তি কেন আমায় নিয়ে এমন খেলায় মাতলো।
ঐ চোখের হাসি অন্য কারো চোখে চোখ রেখে হাসবে সেটা কেন আমি মেনে নিতে পারতেছি না!
আমি স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি। পিরামিড সমান অবহেলার পর ও আমার বিশ্বাসের পর্বত এক চুল পরিমাণ ও টলাতে পারেনি। তবে কী আমি ব্যর্থ প্রেমিক! কেন এমন হলো, এমন না হয়ে কী পারতো। বামন হয়ে চাঁদে হাত দিয়ে ছোয়ার ইচ্ছে কী তবে বামনের দিবা স্বপ্ন হয়েই থাকবে।
আমি যদি সত্যিকারের প্রেমিক না হতাম তবে কী নিয়তি আমায় নিয়ে পরিহাস করতে পারতো।
তুমি আমার জীবনের প্রত্যেক টা কাব্যের অক্ষরের মতন মিশে গেছো। তুমি হীন এই ক্যানভাসে কোন রং নেই। ধূসর কালো এই ক্যানভাস।
অথচ আমার কল্পনার জগৎ এ তোমার ছায়া ছিলো
আমার হৃৎপিন্ডের প্রতিটি স্পন্দন।
আমি কারো সর্বাঙ্গের প্রতিটি রক্তের ফোটায় নিজের অস্তিত্ব কে মিশিয়ে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কর্পুরের মতন আমি উড়ে গেলাম।
আমার বেদনার বারিধি বক্ররেখার মতন উড়ে যাক ফানুস হয়ে।কারো প্রিয়জন হতে চেয়েছিলাম, প্রয়োজন নই। এবার তবে প্রয়োজন হবো।
তার প্রয়োজনে নিজেকে বিলিয়ে দিবো।
আমার মিথ্যা ভ্রম এবার ভাঙুক, আমি কোনকালেই আপনার বাহিরের রুপ, সৌন্দর্য কিংবা কোন কিছুতেই আকৃষ্ট হয়নি। আপনার দেহের প্রকোষ্ঠে যে একখানা হৃৎপিন্ডের বসবাস সেই হৃৎপিন্ডের আওয়াজের মাঝেই নিজের ভালোবাসা খুঁজে নিয়েছি।
বিষন্ন রবিবার, বিষাক্ত রবিবার, বিরহের অনল যেই রবিবারে প্লাবিত হয় এই রবিবার কে আমি ধিক্কার জানাই।
এই বিষন্ন রবিবারেই রচিত হয়েছে কালজয়ী আত্মহত্যার সেই গান ' গ্লোমি সানডে' যেই গান কত জীবন কে থামিয়ে দিয়েছে জানেন আপনি।
এ লেখা টা যখন লিখছি আমার কানে বাজছে সেই গান। মৃত্যুকে সমর্পন করে কাপুরুষ এর মতন বিদায় নেয়ার ইচ্ছা জাগতেছে। মৃত্যুের পরম সুধা পান করে মুক্তির আনন্দ পাওয়ার বড়ো সাধ জাগতেছে।
অথচ পরম আনন্দে নিদ্রারত এক জগৎ এ প্রেয়সীর সাথে সুখ স্মৃতিময় স্বপ্নে ডুবে আছেন আপনি।
যেই প্রিয়জন হতে চেয়েছিলাম সেই প্রিয়জন কে হেমলক দিয়ে হত্যা করবো, সেই প্রয়োজন কে আজ হতে প্রতিষ্ঠিত করবো। আপনার শুভ্র, স্নিগ্ধ, আনন্দ ময় জীবনের জন্যে নিজেকে উজার করে দিবো।
বিষন্ন রবিবারে আমার চোখের জল হোক আপনার জীবনের সুখ।
তুমি সুখী হও, তোমার সুখ ই হোক আমার বেঁচে থাকা, ছায়া হয়ে, নয়তো আত্মার বেশে তোমার পাশে আমি থাকবো আজীবন।
ইতি - আমি এক নর্দমার কীট।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।