একাত্তরের প্রতক্ষদর্শী
- সোলায়মান শিপন ১৪-০৫-২০২৪

কখনো কাঁটা তারে ‍ঝুলন্ত ফেলানীরা
কখনো ধর্ষিতা তনুদের বিবস্ত্র দেহ ,
কখনো জীবন্ত মানুষকে বাসের মধ্যে পুড়িয়ে হত্যা করা , মানুষের আহাজারী ,
আমাদের একাত্তর দেখায় ।
কখনো কখনো আমাদের রক্ত কথা বলে উঠে ,
অঢেল অজুহাতে তখন আমাদের মুখে কাপড় গুজে দেওয়া
আমাদেরকে বায়ান্ন দেখায় ।
কখনো শিশু হত্যা ,
কখনো আগুনে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া আমাদের বাড়ির ছাইগুলো ,
কখনো আমার ভাইয়ের রক্তমাখা কফিনগুলো
আমাকে একাত্তরে নিয়ে যায় ।
কখওনো একাত্তর দেখি দখিণের গরম বাতাসের তান্ডবে
কখনো হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ানো খোলা চাপাতির রক্ত পিপাসায় ;
আমি তখনো একাত্তর দেখি ।
যখন দেখি কোন বাঙ্গালীর জবাই করা মৃতদেহ,
আমিও আজ গর্ব করে বলতে পারি
আমিও একাত্তরের একজন প্রতক্ষদর্শী ।
গাছে উলঙ্গ নারীর ঝুলন্ত লাস আর আজকের বিবস্ত্র নারীর পড়ে থাকা লাসটি
যেন একই অর্থ বহন করে ।
তাদের ভেতর যেন একই দাবী উথ্থাপিত হচ্ছে -
তারা যেন আজ বারবার বলে যাচ্ছে
আমরা আমাদের লজ্জা দিয়ে জাতীর ভবিষ্যত স্বাধীনতার
পথ সুগম করে দিয়ে গেলাম ।
জাতীর ভবিষ্যতের আর্তনাদ না দেখা , না জানার কারনেই
হয়তো তাদের এই আত্মদান ।
আমি টর্নেডো দেখেছি ,
রক্তমাখা পায়ের ছাপ আর বিভৎস নর-নারীর লাস দেখেছি
তাইতো আমি একাত্তরের প্রতক্ষদর্শী ।
আমি ভোর দেখেছি , রক্তশূণ্য ভোর -
আমি দেখেছি উর্বর মাটিতে কিভাবে মানুষের রক্তমাখা কাপড় পড়ে আছে ।
আমি দেখেছি ধর্মচোরেরা কিভাবে মানুষদের আষাঢ়ে গল্প শুনিয়ে
রক্ত শুষে নিচ্ছে ।
তাইতো আমি, আড়শির সামনে দাড়িয়েও বলতে পারি
আমি একাত্তর দেখেছি ।
ভিন্ন ভিন্নরূপে ওরা বারবার আমার সামনে এসেছে
আমি ওদের দিয়েই একাত্তরকে চিনেছি ।
আমি বারবার একাত্তর দেখেছি ,
আমি বারবার একাত্তর দেখেছি ,
আমি মুক্তিকামী মানুষকে বারবার খুঁজে পেয়েছি
প্রজন্মচত্তরের ভিড়ে, তাদের হাতে জ্বলে থাকা মোমবাতী
কখনো কখনো মশালের ভিড়ে
আবার কখনো সংগ্রামের দাড়িয়াবান্ধা খেলাটিও
আমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছে , বলেছে চিরয়ৌবন ফিরে পাবি ।
আমি আশায় বুক বেঁধেছি , আমি বিশ্বাস করেছি
কেননা আমি একাত্তর দেখেছি । ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।