সেদিন দুপুরে
- Srabon Ahmed - গদ্য পদ্য ১৯-০৪-২০২৪

পছন্দের প্রেয়সীর নরম হস্তের গরম ছোঁয়া পাইয়া কবির মনে জাগিয়া উঠিলো সাংঘাতিক কবিতা।
কবি তাহার মনঃভাব ব্যক্ত করিবার লক্ষে, সমগ্র বন্ধুদ্বয়কে জানাইবার অভিপ্রায় কবিতা বলিতে আরম্ভ করিলো।

উরিশ শালা.....
খেলাম চর,
ঘুরলো মাথা,
আসলো জ্বর।
গালটা ব্যথা।

মারলো মোরে,
অধিক জোরে।
হাতটা তার,
শক্ত পাহাড়।

বলছি তাকে,
পছন্দ করি,
গালের ফাঁকে।
বসলো চড়ি।

ভাবিনি আহ্,
চড়টা যাহ।
লাগলো বেশ,
হয়েছি শেষ।

হচ্ছিলো খেলা,
শ্রবণ করা,
কথার মেলা।
রহস্যে ভরা।

কথাটা ছিলো,
মন না নিলো।
তবু বলবো,
সাথে চলবো।

তব হাতটি,
নরম খুব।
রাঙা মুখটি
অধিক রুপ।

সে তো করেনা,
প্রেমে পড়ে না,
পছন্দ মোরে।
হাতটি ধরে।

তাইতো সবে,
এটেছি ফন্দি।
পড়বে তবে,
কিন্তু না! চণ্ডী।

স্বভাব তার,
অধিক ধার,
নম্র তো ছিলো,
কে বলেছিলো?

এ তো সম্মুখে,
খুললো দ্বার।
দিবো না সুখে,
প্রেম অফার।

কবি তাঁহার কবিতা বলিবার মধ্যখানে বাঁ গাল বরাবর আবারও অনুভব করিলো একটি ছোঁয়া। তবে উক্ত ছোঁয়াটি গরম নহে। উহা অতীব পরম নম্র হস্তের ছোঁয়া।
পাশ ঘুরিয়া কবি দেখিলো, তাহার প্রেয়সী পরমানন্দে তাঁহার সেই সাংঘাতিক কবিতা শুনিবার অন্তে শান্ত চক্ষু অগ্নি রুপ ধারণ করিয়া তাঁহার পানে চাহিয়া রহিয়াছে।

- কী হচ্ছে এসব? (প্রেয়সী)
- কই? (কবি)
- এটা কী ধরণের কবিতা?
- প্রেম পরিত্যাজ্য হলে মানুষ যা বলে, আমি তো সেটাই বলছি।
- এদিকে ঘুরো।
কবি ঘুরিলো তাঁহার প্রেয়সীর পানে। তৎক্ষণাৎ কবি লক্ষ্য করিলো, প্রেয়সীর উষ্ণ ঠোঁট দুু'টো তাহার ঠোঁটে স্পর্শ করিয়া মুহূর্তেই প্রস্থান করিয়াছে।
.
প্রেম আস্বাদনে কবি আবারও কবিতা বলিতে আরম্ভ করিলো।
-
অখিল ধরনী খুঁজে খুঁজে পেয়েছি তোমারে,
হারাতে দিবো না আমি, থাকতে পারবো নারে।
বহুদিন ঘুরে ঘুরে নিজেকে নিঃস্ব করে,
এসেছিলাম শুধু তোমারই প্রেম তরে,
অবশেষে এসে আমি পেলাম খুঁজে ভবে,
ভালো বাসোনি কেন আগে, বলো তুমি তবে!
তোমারই ছোঁয়াতে আমি পেলাম ফিরে সুখ,
কাঁটলো মনে সংশয়, দূর হলো শত দুঃখ।
.
প্রেমময় কবিতা শুনিয়া বন্ধুদ্বয়ের অন্তরে প্রেমের হাওয়া দোল খেলিয়া গেলো। তাঁহারাও মনঃস্থির করিলো, নিজ নিজ পছন্দের মানুষদের ভালোবাসা নিবেদন করিবে। তাঁহাতে যাহা হইবে হউক। তবু কিছু তো একটা উত্তর আসিবে!
.
গদ্য পদ্য পড়িবার অন্তেও অনেকে বুঝিতে পারিবে না, কী ছিলো ইহার মাঝে!
শুনুন তবে মন প্রাণ খুলিয়া,
যাই আসল কথা খানি বলিয়া.....

অনেকদিন ধরিয়া কবি মহাশয় একটা মেয়েকে পছন্দ করিয়া নিজ বক্ষ মাঝে আশ্রয় দিয়া আসিতেছেন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি তাঁহার পছন্দের মানুষকে ভালোবাসার কথাটা বলিতে পারিতেছেন না। সেই জন্যে তিনি বুদ্ধি করিয়া একটা খেলা খেলিলেন। নিজ আসন হইতে উঠিয়া গিয়া কবি তাঁহার প্রেয়সীর আসন বরাবর বসিয়া পড়িলেন। আর তিনি তাঁহার বন্ধুদের "বাক্য শ্রবণ করা এবং তা ব্যক্ত করা" এই খেলাটি আরম্ভ করিতে বলিলেন। যখন বাক্যটা তাঁহার নিকট আসিয়া ঠেকিলো, তখন তিনি তাঁহার প্রেয়সীর নিকট বাক্যটি প্রেরণ করিলেন।

তিনি তাঁহার প্রেয়সীকে বলিলেন,
"ওগো মোর বক্ষ জুড়ে থাকা অচীন পাখি,
তোমার ভাবনায় আমি নক্ত জেগে থাকি।
ভালোবাসি যে তোমাকে,
বাসবে ভালো আমাকে?"

ইহা বলিবার সঙ্গে সঙ্গে প্রেয়সী কবি মহাশয়ের গাল দু'টো লাল করিয়া দিলো।
আর তাঁহার প্রেক্ষিতেই কবি উপরিউক্ত কবিতাখানা আবৃতি করিতেছিলেন।
.
গদ্য পদ্যের সকল কার্যক্রম কবি মহাশয়ের শ্রেণীকক্ষে তথা তিনি যেই ভার্সিটিতে পড়ালেখা করিতেছেন, সেই ভার্সিটিরই নিজ বিভাগের শ্রেণীকক্ষে এক দুপুর বেলায় সংঘটিত হইয়াছিলো।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।