যে জীবন
- রফিক হাসান ১৩-০৫-২০২৪

পাখিরাও যে মেতে উঠে সর্বভুক সমুদ্রের মত,
কি থাকে পাখিদের ডিনারে, খাবার?
ঝলসানো কুয়াশার ডানা? রোদ্রের ঘ্রাণমাখা সুগন্ধ-সম্ভার?

নাকি সন্ধ্যার অাবিরমাখা, দিগন্তজোড়া মন্দ্রিত সূর্যাস্তের মেঘ?
নিবিড় রাত্রির আহ্বান ভরা দীপ্র শস্যদানা?
সমুদ্রের হাওয়ায় ধোয়া পাতার বাসনে
ফুল্ল কুসুমের মতো উজ্জ্বল হাওয়াই মিঠাই?

কী যে কিচির মিচির, হাঁকডাক যেন উদযাপনের ধুম!
প্রতিদিন নতুন অতিথি, আঁচল উড়িয়ে নাচে উৎসবের গান
উন্মাতাল ঢেউ, অবগাহনের তীরে প্রতিদিন লীন সূর্যস্নান।

আমাদের ডিনারে সেই কলতান নাই।

নাই সেই সন্ধ্যার গান--নক্ষত্রের নিচে নীল সমুদ্র শয়ান
প্রেমাচ্ছন্ন দেহের তিমির ছিঁড়ে তুলে আনে বিজলীর ফুল
জ্বলজ্বলে বুক খুলে জ্যোৎস্না নামে জলে
আলিঙ্গনে চূর্ণকণা তীব্র রাশি রাশি,
আকাশ আছড়ে পড়ে নৈঃশব্দ্যের তীরে
মথিত স্বপ্নের রাতে, যুগল কিনারে।

স্বপ্নের সেই মূর্ছণা নাই আর আমাদের ডিনারে।

নাই সেই নিবিড় রাত্রির আহ্বান--উষ্ণ অনুরাগ,
প্রেম নাই, প্রতীক্ষা নাই, নাই স্মৃতির উত্তাপ।
মুখ গুঁজে চুপচাপ তাই পরান্মুখ শিথিল শরীরে
ঈষৎ সংশয়ের ভাপ, টুকরো চাপাতি কি নির্জীব সালাদ
প্রতিদিন আমাদের অন্তিম ডিনারে।

অন্তিম রাত্রির শোক, বীততাপ সারারাত জেগে থাকে বুকে,
খাঁজে খাঁজে, মুখোমুখি ছায়ার শরীরে, একা
যে যার অন্ধকার হিম রুমে--

স্বপ্নেরা ঘুমায় দূরে, বাহুডোরে--পরস্পর আকাঙ্ক্ষার ওমে।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।