পথ নেই
- রফিক হাসান ১৩-০৫-২০২৪

নিজের সাথে একটা বোঝাপড়া করতেই হবে যখনই ভাবি,
নিষেধের তপ্ত হাত নেড়ে কে যেন বারণ করে-
এখন না--তারচে' বরং কিছুটা বাতাস টেনে নাও বুক ভরে,
এক মূহূর্তের জন্য--ডীপ ব্রীদিং।
ভেবে দেখ, এই মূহূর্তেই নিঃশ্বাসের ডাল থেকে কোথাও
ঝরে পড়ছে হয়ত প্রণয়ের সহস্র বকুল।
রাস্তা পেরোতে গিয়ে উল্টোদিকের ক্ষিপ্তরঙা গাড়িটা
যেন এদিকেই তাকিয়ে আছে অতর্কিতে লাফিয়ে পড়বে বলে।

এই মূহূর্তে নদীও কোথাও ঘুরিয়ে নিচ্ছে হয়ত তার
যাত্রাপথ উজানের দিকে,
প্রবল কালো জলের ফণা আ'ল ডিঙিয়ে
ঢুকে পড়ছে ফসলের মাঠে।
সন্ধ্যার আগেই সেজেগুজে বসে আছে চন্দ্রমল্লিকার বন,
ঝাঁকে ঝাঁকে মেঘ এসে ঘিরে ফেলছে হঠাৎ চারিদিক--
হ্যান্ডস আপ!
পথ নেই এগোবার, ফিরে যাচ্ছে জ্যোৎস্না তার বিষন্ন বারান্দায়।

ঠিক এই মূহূর্তেই রক্তমঞ্চে মঞ্চস্থ হচ্ছে কোথাও প্রেমের নাটক,
আবেগোষ্ণ চাতুর্যের আঁচে সিদ্ধ করছে কেউ
জনতার বুক, হাত-পা, মাংস ও মগজ,
ভালোবাসার গায়ের ওপর ছেড়ে দিচ্ছে ডেঁয়ো লাল পিঁপড়ে,
কোথাও সীমান্তে ঘটছে অন্যায় সৈন্য সমাবেশ
কাঁটাতারের বেড়া আটকে দিচ্ছে এমনকি শরতের শাদা মেঘ,
চঞ্চুর আক্রোশে রক্তাক্ত কোথাও কাকতাড়ুয়ার মুখ।

সমাধিক্ষেত্রের মত টুকরো টুকরো হয়ে আছে সময়
বরফ ঘেঁষে বয়ে যাচ্ছে উপর দিয়ে হিম দুর্বিপাকের হাওয়া,
ঠিক এই মূহূর্তে ঝড়ের বারান্দায় বসে কোথাও
কাঁটাচামচে তুলে নিচ্ছে কেউ ঝলসানো নীলিমার ডানা,
আসঙ্গের বোঁটা থেকে ঝরে পড়ছে কারো সমুদ্রে যাবার বয়স
সমুদ্রে গিয়েও ঘুমিয়ে পড়ছে কেউ বুকে নিয়ে
ট্যুরিস্ট লজের গোল গ্রীলের বারান্দা।

ঠিক এই মূহূর্তে কোথাও বাতিল যাত্রার মাঝপথে
গাছের গুঁড়ির মত কাটা পড়ে আছে কারো তৃষ্ণার্ত রজনী
ট্রেন আর স্টেশনের মাঝখানে বিমূঢ় দাঁড়িয়ে একা
এক ভগ্নজানু মনোরথ।
পথ নেই, এমনকি হারাবার।

এই বোঝাপড়া তবু কতদিন আমি আর আটকে রাখবো?

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।