"তরুলতা "
- কাওসার পারভীন ২০-০৪-২০২৪

কোনো এক বৈশাখী ঝড়ো হাওয়ায়,
তাল মাতাল ,বাতাসের দাপটে
সেই তরু গেলো।
কথা দিসিল তরু আবার আসিবো ফিরিয়া।
ভাবিওনা লতা আমার
বিবাহের যোগাড় হইব সানাই বাজাইয়া।

জৈষ্টের খরতাপে ছল ছল নয়নে,
ভর দুপুরে লতা চেয়ে থাকে পথ পানে।
বলিয়াছে তরু তারে আবার আসিবে ফিরে,
ঐ বুঝি এলো তরু,
কি কথা অন্তরে বাজে বলি বলি করি আজও
হইলোনা বলা।

আষারের শেষ হইলো শাওনের শুরু ,
আকাশে মেঘের ডাক , বুকে দুরু দুরু ,
ভাদ্রের দুপুরে, পানা ভরা পুকুরে,
ঘাটে বসি লতা ভাবে,
ডানা ঝেঁপে হাঁসঝাঁক,সাঁতরে শীতল হয় ,
বাঁশবনে আউলা বাতাস, পাতা শনশন ,
এমনো ক্ষণে,তারে ভাবিয়া আকুল মন।

আশ্বিনের শেষ হইলো কার্তিকের শুরুতে,
ও বাড়ির মনা ভাই আইলো ছুটিতে,
ছুটিয়া গেল লতা জানিতে তরুর কথা ,
কি করিয় আসিবে বল ? থাকে মেলা কামেতে।

অঘ্রানের মাঝেতে ,পিঠে পায়েসের ধুম লাগে,
মমতায় তুলে রাখে, আসিবে তরু আমার,
আহা ! পিঠেয় বড় স্বাদ তার।
নিশিদিন, প্রতিদিন এমনিই অহর্নিশ।

পৌষের সকালে শিশিরের ভেজা ঘাসে ,
অপলক থাকে চাইয়া ধানক্ষেতের আইল বাইয়া,
এই বুঝি তরু আসে,
কাঁদিয়া ভাবিল লতা ,
এমন তো ছিল না কথা,
কি হইলো তরু'র আমার,
দুই চোখে নামে আঁধার।

মাঘ গেলো ,ফাউন গেলো, চৈতের শেষ হইলো,
বছর ঘুরিয়া গেলো ,
নাওয়া খাওয়া দিল ছাড়ি ,মা ,বাপের আহাজারী ,
কি হইলো মাগো তোমার ? খুলিয়া কহ মোরে ,
জীবন যাইবে তবু মরিতে দিব না তোরে।

অবশেষে একদিন ছুটিয়া আসিলো তরু ,
কিসুই হইবে না লতার আমার ,
এই বেলাই ডাকিব আমি, যেইখানে যত আছে ,হেকিম ডাক্তার।
ফিকে হাসি দিয়া কহিল লতা,
শেষ মেষ রাখিলে তুমি তোমার কথা ?
বলিয়া চক্ষু বুজিলো লতা,থামিলো মুখের বোল,
ডুকরিয়া কান্দে তরু, কান্দে সবেতে,
পাড়া পড়শী ছুটিয়া আসে, পড়ে কাঁদনের রোল।।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।