“অভিশপ্ত”
- আরিফুল হক - অপ্রকাশিত ১৯-০৪-২০২৪

খুব প্রত্যুষে দুটি মায়াবি খাঁচাবন্দী ঘুঘু, দুপুর নামিয়ে দিলো,
সকালের মরণে!পাখী দুটির গায়ের ছোপ ছোপ ধুসর-
ফোঁটাগুলোতে ঝিলিকে উঠছে তাপদাহ,
----------------------------------সারা শরীরে-
দুপুরের দহনে পুড়ে পুড়ে যেতে চায় পালক,ছটফটানো শিশির!
ঠোঁটে খুঁটে খুঁটে দানা খাওয়ার কথা ভুলে গিয়ে,
--------------------তাঁরা শুধু সকালের কথা ভাবে;
স্বপ্নের মত চোখে ডানা মেলে উড়ে যাবে,
ডানায় ডানায় হবে সন্ধি দুজনার!
আকাশের গায়ে ছায়া ফেলে দিয়ে,
ধরণীর সবটুকু আলোয় বাতাসের ছোঁয়া!
--------------আকাশে ডানার ছায়া!
তারপর, কোন প্রাচীন গাঁয়ে আমলকী ডালে খড়কুটোর সংসার,
--------------------------ওম-ঘুমে শিশুর হাসি,
ডানার আবডালে লক্ষ্মীমন্ত সংসারের বীজ!
আর জলে ডুবে যাওয়া শস্যক্ষেতে ডাহুকের সাথে খুনসুটি!
লাল শাপলা পাতায়, শ্যাওলা গন্ধী নৌকার ডগায়!
---------------------------------------নিরীহ বাঁশঝাড়ে!
সদ্য মাড়ানো ধানের ন্যাতানো শীষে!
---------ঘানিগাছের সর্ষেদানায় সওদা!
বড় বেভুলে কাটিয়েছে সারা রাত্রি,
-------------------------------------সমগ্র জীবন ঝরে ঝরে জন্ম নেয়
জপে যাওয়া প্রতিটা দিন অভিশপ্ত প্রতীক্ষায়;
সাধনায় কাটিয়েছে কামতপ্ত ঋষির মত, একাকী দুজন একাগ্রে!
------------------------দেয়ালের ওপারে চোখ!
তবু,একটা মুক্ত সকালের “বর”কেউ দেয়নি,
------------------------কেউ দেবেনা এই পণে!
দৈনন্দিন সকাল পাঠানো হয়, বন্দীদের হাতে খুন হবে তাই,
অথচ, তাদের প্রস্তুতি ছিলোনা কম,
-------------------------------ধৈর্যের দ্রাক্ষাফল গুড়ো করে করে-
খাঁচাবন্দী জীবনে উড়োচিঠি পাঠিয়েছে ওপাশের ঝুলন্ত খাঁচায়,
ইশারাও পেয়েছিলো গতি;
শুধু সকলটা হয়নি স্থির, ছটফটে পায়ে দৌড়ে পালিয়ে গেলো,
ঝাঁপ দিলো দুপুরের গলন্ত লাভায়,
------------------সাথে নিয়ে গেলো-
তৃতীয় নয়নে দেখা নিঃশূণ্য বুকের ভেতর জমাটা বাঁধা একটা স্বপ্ন;
একটা শিশিরে ভোর, চাদর জড়ানো কুয়াশায়...
দুটি খাঁচাবন্ধী মায়াবী ঘুঘু, সবশেষে একে অন্যের দিকে তাকিয়ে রয়,
দুপুরের তপ্ত রোদে ,হাতছাড়া হয়ে যাওয়া মৃত সকালের শোকে,
গরম হলকা দেয়া বাতাসে খাঁচাদুটো খায় দোল............

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।