না
- রফিক হাসান ১৩-০৫-২০২৪

সমুদ্রগামী রাত্রির শিহরণ ছুঁয়ে যাবার আগে যখন
পাখির ঠোঁটের নিচে আরো রক্তাক্ত হচ্ছিলো
সন্ধ্যালাগা দিগন্তের মেঘ,
হাওয়া তখন কোথাও ছিলো না।

যখন হাঁটতে হাঁটতে চলে এসেছিলো দুজনেই ছাদের
খুব উড়ন্ত কিনারে,
ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিচ্ছিলো মৃত্যু তার নিজের ছায়াকে
পতনের চেয়ে ভয়াবহ আরো নিচে,
বুকের ভিতরে পথ-হারানো স্বপ্নের মতো নিজের নির্জনে
যখন মরে যাচ্ছিলো প্রাচীন সাহসীবৃক্ষের ছায়া,
দীর্ঘকায় বাসের শরীর বুকে নিয়ে যখন মনের ভুলে
রেলিংশুদ্ধ উড়াল দিচ্ছিলো রাত্রিলাগা কংক্রিটের ব্রিজ;
যখন ফাঁসির দড়ি ছেড়ে দিচ্ছিলো নিজেই তার দন্ডিত আসামী---

হাওয়া তখন কোথাও ছিলো না---না দৃশ্যে, না মৌনতায়।

ঝরাপাতাকে বসিয়ে রেখে ঝাপসা আলোয়
নীল ফুলঅলা ঘাসের বিছানায়,
দু'কাঁধে দুলিয়ে বেণী,
কুশিকাঁটায় নকশাতোলা সবুজাভ স্কার্ফ,
ওড়না উড়িয়ে মিহি শিফনের মতো মেঘের মায়ায়
দোল খেতে গিয়েছিলো হাওয়া, সেজেগুঁজে
নক্ষত্রবাড়ির ঝুলবারান্দায়।

প্রাক-মুহূর্তের বিষাদ-ভরা থমথমে, ফতুর সময়ের
এইসব বিনাশী-রঙের দৃশ্য তাই
চোখে ছায়া ফেলেনি জীবিত কোন মানুষের---
ত্র্যস্তহাতে তারা তখন রাংতায় মুড়িয়ে নিচ্ছিলো
রোঁয়াওঠা দিনের পালক, ভগ্নডানা, স্যাঁতস্যাঁতে বাৎসল্যের বিষ;

নিম্নগামী রাত্রির ভিতরে তুমুল ঘনিয়ে-ওঠা
মরা জোছনার শিস।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।