স্বপ্নের বাংলাদেশ (8)
- শফি আহমেদ ১২-০৫-২০২৪

বেনুবনের মাথার উপরে মেলবে ডানা চাঁদের ঝিলে
জুৎস্নানদে যায় যে ভেসে স্বপ্নচারিনী ধবল পঙ্খী নায়ে।
সন্ধ্যামালতী হাসনাহেনার ওপারে ডিঙিয়ে সকল বেদনাপদ্ম
নিরবে উদ্বেল বুনোহাঁস, তিতির আর সারসের দারে।

ঘুম নালাগা বেশুমার তারার নরম আলোয় চান্নি পসর
এক হালকা-আলো রাতে শতফুল রাতে ফুটে রাতেই ঝরে।
আরেকটু উজল হলে এই বাতিঘরে প্রথম আলয়ে রাঙাপথে
যায় যে বেলা সাঁঝ-বেলাতে কুড়িবে কত হিজলমালা?

আয় গো আমার দোলনচাঁপা খোলত আঁখি ঝুমকালতা
ওই কিসে আকাশী ইন্দিবর দীঘিতে জলকেলে কে নীলাম্বরে
দেখবে সে গগনচারী শতদল এক নজরে তমাল শাখাঁর ফাকে।

লালা রোদ্দুরে রাঙিয়ে একখানা নবাববাড়ির সাচি পানখিলি
সময়ের তাপে যদি ঝরে যায়, সেও যদি এসে যায়
তাই ভেবে নিশিথীর কুসুমে রাখিছি জিয়ে আমি।
আহা রে সে যে এক চতুর রাঙ্গা অধরের মধুকথা, তা কি
ভুলা যায় সে কথা আজো আমি বলি বাতাসের কানে কানে।
জলতরঙে আঁকাবাঁকা নদীর বাঁকে বাশুরীর তালে তালে
প্রাণোচ্ছল ফুল্ল কণ্ঠে মাটির নুন টানা জাঁকাল সুরেলা
ভাটিয়ালী তানে, কোরা নিত্য নতুন শহুরে গানে গানে।

করবী কনকচাঁপা রক্তজবা কত চিত্রালী ফুলেল পাপড়ি
পরাগের পাঁচমিশালী এক মুট শিমুল আমি উড়িয়ে দিয়েছি
দখিনা হাওয়ায় কাশবনে পাখিদের কলতানে খরপরশা কদম্বতলে।
তুমি আসবে বলে, নীরদের পাত্রে পান্থজনেরে
জলপান করার মানসে মাধবকুণ্ড ঝরনায় ধুয়া এক খলসি
নীহার নীর আমি ভাসিয়ে দিয়েছি, চিত্রা হরিণের সুন্দরবনে
তোমার চির চেনা পথে, ইরাবতির জলধি জলোচ্ছাসে।

মেঘের তলে জমে তাকা নীল হেরিয়া তব নয়নকোণে মন মম
শিহরিয়া ওটে জানিবার চাহে কাল রাতের ঘুমভাঙ্গা স্বপ্ন ফল?
সে কি তাবীর শোনিলে আধা পথে থেমে যায় শশী ফুল্ল হয় রবি
রোদের ছুড়ি পটে ছায়া আঁকা সন্তর্পণে অংশুমালীর ফুটো বাণী
নিসর্গ রচনায় আজো ফুটফুটে তুমি এমনি এক বিস্ময়কর পংক্তি!

যার হাতে তুমি এক কড়ে বীণা তাঁরই কেশাগ্রে খেলে আলো আধারী
হলফ করে বলতে পারে যে, শোন এবার ডাকে সেই তোমারি
অর্ক সখা দেখত নয়ন ভরা রঙিন স্বপনের বাংলাদেশ তুমি!

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।