ক্ষনিকের চন্দ্রাবতী
- মুহাম্মদ সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী ১১-০৫-২০২৪
""""ক্ষণিকের চন্দ্রাবতী """""
ব্যস্ততার শহরে আমরা সবাই ব্যস্ত
কারও দুদন্ড দাড়াবার সময় নেই।
আমিও তাদের একজন,
যেকিনা সকাল সন্ধ্যা অফিসের জোয়াল
টেনে টেনে বাধ্য বলদ হয়ে গেছি।
জীবনে এখনো কেউ আসেনি
যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখব কিংবা স্বপ্ন গড়ব।
এমনই চলছিল বাঁধাধরা জীবন।
কোন একদিন অফিসের জরুরি কাজে
খুব দেরি হয়ে গেলো।
সচারচর আমি দেরিতে বাসায় ফিরি না,
বা পারতপক্ষে রাতে বাইরেও থাকি না।
কিন্তু ঐ দিন....একটু দেরীই হলো।
গাড়ি পাচ্ছিলাম না বলে
হাটতে হাটতে অনেক দূর চলে আসলাম।
যেখানে রাতের অন্ধকারে
আলো আধার খেলা করছে ;
আমি তীর্থের কাকের মতো
এদিক ওদিক করছি গাড়ি পাবো বলে।
গাড়ি পাচ্ছিলাম না ঠিকই
কিন্তু এমন একটা সুগন্ধ পাচ্ছি,
যা হঠাৎই আমাকে মোহময় করে তুলে।
আমি বুঝতে পারলাম না কোথা থেকে
এই মিষ্টি সুরভিত সুগন্ধ আসছে।
হঠাৎই আবছা আলোয় দেখতে পেলাম
কিশোরী উত্তীর্ণ চন্দ্রাবতী নারীর রূপ।
মুহূর্তেই চোখ সরিয়ে নিলাম,
তবুও বুকের ভিতর কেমন জানি
খচখচ করতে ছিলো আরেক বার দেখার জন্য।
আমি বুঝতে পারলাম এ নারী রাতের পাখি,
কিন্তু এতো রূপ যৌবন নিয়ে কেন?
সহসা মূর্তিটি এসে দাড়ালো গা ঘেষে।
আমি সরে যেতে চাইলাম,
কিন্তু কোন এক মায়াবী বিনে আবিষ্ট আমি।
তার সুচারু তীক্ষ্ণ চাহনীতে পরাস্থ আমি,
পারলাম না চোখ ফেরাতে।
কত ভালবাসায় বিধাতার এমন সৃষ্টি,
কত সুনিপুণ কারুশৈলী তার রূপে।
ইশারায় চোখের চাহনীতে বললো নারী,
চলো আমার সাথে, কর আজ অমৃত আস্বাদন।
আমার তখন কান্ডজ্ঞানহীন অবস্থা,
আমি ভুলে গেছি তখন, আমি কে?
ভুলে গেছি আমার সমাজে অবস্থান,
ভুলে যাচ্ছি সবই, শুধু মায়াবী অধর চারপাশে।
যখনই আমাকে নিয়ে গেলো কামিনীর একান্ত কক্ষে,
তখনই আমার মোহ গেলো ভেঙে।
যখন নারী উজার করে দাড়ালো সম্মুখে,
আমার ক্ষণিকের প্রেম হারালো দেখে আশেপাশে।
কতই তুচ্ছ তাদের জীবন,
কতই অসহায় তারা।
কতটাই নগন্য তারা সমাজে
নেই তাদের শোয়ার একটু ভালো ঠাঁই।
ক্ষণিকের ভ্রান্তি আমাকে শাঁসালো,
লজ্জিত হলাম আপন মনে।
চন্দ্রাবতী তার চেষ্টার ত্রুটি করছে না
গ্রাহকের মনোরঞ্জনের।
কিন্তু আমার তাতে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই,
পকেট থেকে কিছু টাকা দিলাম ক্ষণিকের চন্দ্রাকে।
অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকা ছাড়া
চন্দ্রাবতীর আর কিছু করার ছিলো না।
16/4/14
মন্তব্যসমূহ
এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।
মন্তব্য যোগ করুন
কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।