পদ্মফুল
- ইফতেখার হোসেন - আবেগসন্তের বাক্যনেশা ১১-০৫-২০২৪

ক্লাসরুমে শিক্ষকের অকারণ প্রহার শেষে নিজের সিটে গিয়ে বসলো সরোজ;
শিক্ষকের প্রস্থানের দেরি না হতেই মুখদিয়ে একগাল মন্দ এসে
ভরে দিলো সারা কামড়া জুড়ে,বেন্চিতে মুষ্টির থাবা ঘেষে;
আমাকে এখানে দোযখে রেখে সে সুখে থাক বউ বাচ্চা নিয়ে,
এমন পিতা আমার শত্রুরও যেন কপালে না জুটে গিয়ে।

সরোজের মাথায় হাতবুলিয়ে থামাতে বন্ধু প্লাবন,
অমন কথা আর মুখেও আনিসনে বন্ধু,পিতা যে বড় আপন।

দুপুর বেলায় ক্যান্টিনে খাবার সমেত বসে বিরক্তির চেয়ে সরোজ,
মনে পড়ছে আমার মায়ে রাধতো,কতো মজা করে দিতো খাইয়ে যেন আমার পেট ভরাতেই তার গরয।
মরেছে,বেস করেছে রেখে দিয়ে গেছে এই নরকে,
তীব্র গালিতে পিতা-মাতার ক্ষোভ ঝেড়েছে সরোজ প্রতিদিনকার মতই ধুকে।

জবাবে প্লাবন ফির বলে যায় ‘মা’ যে সৃষ্টির সেরা দান,
মনে রাখিস বন্ধু, দূর থেকেও তোকে দেখে বসে কাঁদছে সে মহাপ্রাণ।
আর জেনে নিস পিতা-মাতা বিনা পৃথিবীর আর কেউ নেইকো আপন,
সবে লোক দেখায়ে ছলনার ছলে দেখাতে স্বর্গ সপন।

বিকেল বেলা হোস্টেল মাঠে পায়চারী ক্ষণে সরোজ পুছিল প্লাবনেক,
দেখিনি কভু তোর পিতা মাতাকে,
বহু তো ভাল বলে যাস তাদের,গল্প করেছিস অনেক।
আসতে কেবল তোর বোন এসেছে ঝকঝকে রঙিন সাজে চুপটি চুপটি মেরে,
দেখার বড় ইচ্ছা জাগে,
শুনতে কথা তোর মহাপ্রাণ পিতা- মাতার মুখটি নেড়ে।

জবাবে প্লাবন, ঠিকাছে তবে এবারের ছুটিতে নিয়ে যাব তোকে মোর শৈশবের ধারে,
কতো রঙছটা দেখেছি সেথায় সত্য মিথ্যার খেলায় প্লাবিত প্লাবনের দরবারে।

অতপর সময় এলো প্লাবনের পিতা-মাতার সাথে দেখা করবার,
বিদ্বেষী সরোজ গুছিয়ে গোছা রওনা হল প্লাবনের সহিত দুর্বার।
বহুক্ষণের ভ্রমণ শেষে,অবশেষ থামল দুজন,
দেখে নিষিদ্ধ এক নগড়ীর ধারে শুধু আসা যাওয়া শত বেটাজন।
সরোজ প্লাবনেক প্রশ্ন রাখে এ কোথা নিয়ে এলি,
নাকি বহুদের পর আসাতে রাস্তা ভুলে গেলি।

ভুলিনি রাস্তা ভুলিনি কিছুই এই মোর শৈশব বাটি,
ওই দেখ, ওই আবর্যনা ধারের গোরস্থানেই দিয়েছি মাকে মাটি।

নিশ্চুপ সরোজের স্তব্ধ শরীরি বিলাপ, ঘামে ঘামে ঝড়তে শুরু করল,
মনে পুশে, শত কোটির এই পৃথিবীর মাটিতে প্লাবনের মার কি শুধু এই জায়গাই মিলল?

মাতা মোর সমাজের সুস্থ নয়কো,নয় সমাজের গৃহীত
সমাজের তাদেরই সুখের স্বাদের, আবার তাদেরই মুখের ঘৃনীত।
দেখ,তারা কতো আসছে হাসছে স্বাদের মায়ায় প্রবাহিত,
কিছু দিয়ে যায় সাথে রেখে যায় কতো শত প্লাবন লুকায়িত।

অতপর সরোজে দেখায়,ওই দেখ ওই ঝুপড়ি বারান্দায় দাঁড়িয়ে লাল ঠোঁটে ওই নারীকে আমার লাগছে চেনা,
জবাবে প্লাবন,আর কেউ নয় সে!প্রিয় বোনটি আমার কিছুদের মধ্যেই হবে কেনা।

সরোজের চোখে ঝাপসা পৃথিবী,এ কেমন খেলা বিধাতার,
সমাজ পতিদের মিলনায়তনে এ কেমন সুপ্ত প্লাবন সমাচার।

এক্টু সামনে হেটেই সরোজেক প্লাবন দিলো থামিয়ে,
কিরে এতো কেন লজ্জা পাচ্ছিস ভাই দেহ গিলা তোর ঘেমে।
বহু কষ্টে সরোজের মুখে দুটি কথা মিলল নেমে,
মিনমিনিয়ে পুছল প্লাবনেক তোর জন্মদাতা কোন খুনে?

জবাবে প্লাবন,ঠিক এখানটায় শিশুকালে কেঁদে একাকার,মায়ের কাছে রেখেছিলাম দাবি
পাষাণী তুই অভাগী তুই আমার বাবাকে আজ দেখাবি।
জবাবে মাতা মলিন হেসে আঙুল দেখিয়ে বলে,
এদিকে যত পুরুষের হানা,যত পতির আনাগোনা, এখানের কেউই হয়তো কভু তোর বাপ হয়েছিল ভুলে।

সরোজের মাথায় আকাশ যেন ভেঙ্গে পড়লো,
কেমনে প্লাবনেক বিধাতা তার আপন বাটে নিয়ে গুছালো!
যেন শত বছরের হাজারো বিষাদ তার এক নিমিষেই হারালো কূল,
তীব্র আবেগে জড়িয়ে ধরে প্লাবনেক,এমন কেমনে বাঁচতে শিখেছিস ওরে পদ্মফুল।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।