ক্ষয়িষ্ণু বিশ্বাস
- ফয়জুস সালেহীন - হে ক্ষণিকের অতিথি ১০-০৫-২০২৪

একদিন বুকভরা বিশ্বাস ছিলো
ছিলোনা ছিটেফোঁটাও সন্দেহের আনাগোনা।
গালভরা আষাঢ়েগল্পে ছিলো দ্বিধাহীন আস্থা।
অবিশ্বাস কখনই দেয়নি হানা।
মোহনিয়া মিথ্যে প্রকল্পে হয়েছি গদগদ
সন্দেহটা কখনই বাঁধেনি দানা।

বিশ্বাস তোকে আগলে রেখেছিলাম নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বলয়ে।
চৌকাঠে তোর নৈশব্দ ঘুণপোকারা নিত্যই মত্ত প্রলয়ে।
সময়ান্তরে তুই তিলেতিলেই যাস ক্ষয়ে।

একদিন ভ্রমণপথে মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছিলাম
শ্বেতশুভ্র শ্মশ্রুশোভিত এক প্রৌঢ়ের স্নেহ বাৎসলে।
মনেমনে তার গলে পড়িয়েছিলাম শ্রদ্ধার বরণমালা।
বুঝিনি মুখোশের অন্তরালে লকলকে জিহ্বা থেকে ঝরছিলো লালসার লালা।
প্রতিদানে সর্বাঙ্গ হয়েছিলো নীল, ধতুরার বিষে।
প্রবঞ্চনার বুলড্রেজারে শ্রদ্ধার সেই অনুভূতিটাই দিলো পিষে।
অর্থনাশে নয় হৃদয়ের এই ধড়ফড়
বিশ্বাসের ঘরে যে সিঁদ কেটেছিলো সিঁদেল চোর!

অরুন্ধতী একদিন ডেকেছিলে হাতছানিতে।
পেয়েছিলাম ভালোবাসার নির্যাস তোমার কথা,হাসি আর গানের পরতে পরতে।
কথাছিলো হাত ধরাধরি করে হাঁটবে বন জোৎস্নার ঘ্রানে
কিন্তু দিনান্তে ঠিকই চাপলে ঐশ্বর্য্যগঞ্জের ট্রেনে।
সেই বিদায়ে বিষাদের বিস্বাদে তিক্ত জিহ্বা-ঠোঁট।
হৃদয়ে তারচেয়েও ঢের বেশী চোট,
বিশ্বাসের ঘরে যে হরিলুট!

গৃহে ফেরার পথে একদিন একটি দৃশ্য হয়েছিলো বন্দী দৃষ্টিগোচরে
হৃদয়ের পটভূমিতে কেটেছিলো দাগ, মিশ্র অনুভূতির আঁচড়ে।
দেখেছিলাম সন্তানহারা এক রমনীকে নির্দয়ভাবে প্রহৃত হতে, চুরির দায়ে।
মৃত সন্তানের দিব্যি খাচ্ছিলো সেই রমনী প্রতিটি বেত্রের ঘায়ে।
তাতেও শান্ত হয়নি জনরোষ,হয়নি নিবৃত্ত।
সঙ্গত কারণেই হয়েছিলাম সেদিন বিব্রত।
খোয়া যাওয়া বস্তু সেই রমনীর কাছ থেকে উদ্ধারে, চোখ দুটো আমার চড়কগাছ!
নিমিষেই যেনো হলো উধাও, বুকে জমা অবশিষ্ট বিশ্বাস।

অবন্তীকা একদিন বাঁধতে চেয়েছিলে সংসারের আঁচলে
ডাগর চোখের চাহনীতে ঠাহর করতে পারিনি কিছুই-
দুলেছি বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলাচলে।
ফেলিনি নোঙর তাই তোমার বন্দরে।
বিশ্বাস যে ততোদিনে উবে গেছে ছিটেফোঁটাও ছিলোনা অন্তরে!
- -
-, -

তারপরও বেঁচে আছি, ফেলছি ক্রমাগত শ্বাস প্রশ্বাস
অবলম্বন একটাই,নাম তার বিশ্বাস।
প্রিয়তমা তোমার আমার সংসারটা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে
বিশ্বাস তার একমাত্র খুঁটি।
কখনও ভেঙ্গে দিয়োনা তা
এটাই যে আমার জীয়নকাঠি!

১১/০৭/২০১৬ খ্রিস্টাব্দ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।