চাহিদারা অপরিমেয়
- শাহানারা সুলতানা তানিয়া - কথোপকথন ২৬-০৪-২০২৪

> শুনছেন,এটা কি মরুর উদ্যান..?
- না না,আমি গ্রীষ্ম থেকে বলছি । এখানে আকাশ নীল, পানিতে নোনা স্বাদ, আর বাতাসে কার্বন জ্বালা ।
- আপনার কাছে বরফ হবে...?
> হায়...! আমি তো বৃষ্টির কাছে ঋণী । সেই কবে এক ফোঁটার আশায় চাতক মরেছিলো, আজও তার খোঁজে ।
> জানেন তো,ও পাড়ে দুর্ভিক্ষ চলছে..? বাজার চওড়া ।
- আমাকে যেতে হবে অনেক দূরে, ভাঁড়ারে টান পড়লে যাযাবরদের উৎপাত শুরু হবে ।
- আমি নিতে ভালোবাসি । বিনিময়ে যদি মুনাফা না হয়, সওদা আমি করিই না ।
> এখনকার রাজসভাগুলো, আমলাতন্ত্রে বিস্ফোরিত, কতক আবার চেতনার গান গায় ।
> বরফ চাষের সাথে, মরুর আবাদে কিছূ যোগান বাড়তো, তবে শাসক হতে আর বেশি বাকি ছিলো না ।
- আমাদের শুষ্ক জমিন, ছাড়তে চাইলে কত না লোকসানের ভয় ।
- ভাবছিলাম বরফ গলা নদের কিনারা পেলে, আরো কিছুটা বাড়তি মুনাফা ঘরে আসতো । মোড়লদের দেখিয়ে দিতাম, আমরা দুর্ভিক্ষেও সচল ।

( মাঝখানে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ । আধবুড়ো বয়সী, হুইল চেয়ারে, সাথে কতক বোঝা/বস্তা )

~শুনছেন, বলি,, বাঁয়ে বরফের পাহাড়, ডাইনে বিস্তর মরুভূমি ।
এই মাঝখানের একমাত্র পথটায় আপনাদের বিতণ্ডা ।
আমি আধবুড়ো মানুষ, চোখে তেমন ঠাহর করিনা, হুইল চেয়ারখানায় জং ধরেছে ।
অনেক পুরনো কি না, ছেলে মরবার আগে কিনে দিয়েছিলো,
ও দিকে সময় বয়েই চলেছে, পেন্ডুলামের শব্দটা ইদানিং কমই শুনি ।
তা বলি কি..? দুর্ভিক্ষেতো মানুষ মরছে, স্বেচ্ছাসেবক দরকার ।
এখনো অনেক ত্রাণ বাকি , ত্রাণ পৌঁছাতে হবে যে,
রাস্তাটা ছাড়েন, ওদিকেই আমি যাবো ।

> আচ্ছা,চলুন আপনাকে সাহায্য করি, রাস্তাটা পার হতে।
- হ্যাঁ চলুন, আমিও হাত বাড়াই, ও পাড়ে যাওয়ার এইটুকুইতো পথ ।

~ ছাড়ুন মশাই, এত টানাপোড়নের মাঝে,
আপনাদের ভাঁড়ার পূর্ণ করুন । আপনাদের দুর্ভিক্ষের দিনে,
মরু উদ্যান আর বরফ পাহাড়, আমাদের মত তৃতীয় ব্যক্তিরা
কিভাবে এসবের যোগান দিবো, সামর্থ্য তো অত নেই,
জানেন ই তো..! চাহিদারা অপরিমেয় ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।