সময়ের খেলা
- নিশীতা মিতু ২৬-০৪-২০২৪

ছোট্ট শহরে একটাই মসজিদ, অদূরেই একটা সস্তা হোটেল বাতায়ন;
ক্রোশ খানেক দূরে মন্দির আছে, পাশেই শহরের মিলনায়তন।
মসজিদে আযান হচ্ছে, মুয়াজ্জিন ডাকছে সব মুসল্লিকে,
শক্ত হাতগুলো থেকে নিজেকে ছাড়তে পারছেনা মেয়েটা, চেহারা তার ভীষণ ফিকে!
ওদিকে দেবীকে ডাকছে পূজারী, মন্দিরের ঘন্টা বাজে টং টং টং...
এদিকে মেয়েটাকে বলছে একজন, চুপ থাক মাতাড়ি, করিস না বেশি ঢঙ!
সস্তা হোটেলের বদ্ধ কামরা, হারাচ্ছে মেয়েটা সতীচ্ছেদ;
মিলনায়তনে বক্তৃতা দিচ্ছে অতিথি, নারী পুরুষে রবেনা আর বিচ্ছেদ!
গ্রামের পুবের ঘরটায় শোকের মাতম, মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে,
এদিকে মোনাজাতে কাঁদছে ইমাম, সকলের আত্মশুদ্ধি চলছে!
নারী জাগরণের অনুষ্ঠান চলছে, প্রধান অতিথিকে করছে বরণ,
মেয়েটা চিৎকার করে কাঁদছে, হচ্ছে ভীষণ রক্তক্ষরণ!
নামাজ শেষ, পূজা শেষ, হয়ে গেছে শেষ অনুষ্ঠান...
মেয়েটা চিৎকার করে বলতে চাইছে, ভাই আমারে বাঁচান!
পরের নামাজে আসছে মানুষ, আসছে নতুন পূজায়,
পরের পশু এসে মেয়েটার পুরোটা দেহে খোঁচায়!
ইমাম বলে নবীদের কথা, পুরোহিত বলে রাম,
ওদিকে মেয়েটার শরীর ভিজে যায়, বিন্দু বিদু রক্ত-ঘাম!
অনুষ্ঠানে আজ শপথ হয়েছে, আঁচড় লাগবেনা কোন নারীর গায়ে,
ওদিকে মেয়েটার দেহ পুড়ে যায়, সদ্য ফেলা উষ্ণ চায়ে!
শেষ উক্তি ছিলো মেয়েটার, ‘হারামজাদা তোদের জন্ম দিয়েছে কোন না কোন নারী’
মেয়েটা মরেছে, বাবা মা কেঁদে বলে, মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়াই ভুল হয়েছিলো তোর ভারী!

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 4টি মন্তব্য এসেছে।

aisohag12
১৫-০৯-২০১৯ ১৯:৫০ মিঃ

পটভুমি দারুন

Mysb
২২-০৫-২০১৬ ১৩:৪২ মিঃ

লেখাটা খারাপ হলেও এটা সত্য। অনেক ভালো। চেষ্টা করো আরো ভালো কিচু উপহার দেওয়ার।

kabirkabir
২১-০৫-২০১৬ ২৩:৫৭ মিঃ

কবিতাটি পড়ে কিছুক্ষণ চুপ মেরে বসে রইলাম। অপূর্ব সুন্দর ভাবনার গাঁথুনি। একটি দুষ্টু সমাজ ব্যবস্থাকে ফালা ফালা করে করে কর্তন করার মতো শব্দের চাষ। দারুন!

অনেক ভালো লাগা। শুভ কামনা কবি। এমন কবিতা আপনার লেখনি থেকে বের হয়ে আমাদেরকে মুগ্ধ করুক, কামনা করি। ভালো থাকুন সব সময় কবি নিশীতা মিতু।

Saklayena
২১-০৫-২০১৬ ২১:৫৮ মিঃ

অনেক সুন্দর