কারবালা নেই হৃদে
- মাহদী হাসান ২৭-০৪-২০২৪

শোকের মাতমে কেঁদে ফেরে— আজো কারবালার প্রান্তর। মাগরিব গগনে রক্তিম গালিচায়, পুরনো ইতিহাস উঁকি দেয় আমার শাশ্বত আঙ্গিনায়। আমি রক্তহীন মানুষ। অথচ একদিন— আমার রক্তে বয়ে চলতো যুগের জাহাজ! 

দশের ভেতর সৃষ্টিতত্ত্বের অমোঘ বাণী— আমি মানুষ, ভুলোমন জ্যামিতিক স্বভাব। কলানিধি জানিয়ে যায় কালের গহ্বরে। শুরু হয় রক্তের রূপক খেলা! দশভুজা মা’ও এখানে অসহায়ভাবে নুয়ে পড়ে। ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ গগনবিদারী চিৎকারে কেঁপে ওঠে খোদার আরশ।

তাজিয়ার মিছিলে স্লোগানে স্লোগানে আমাকে পাবে সিংহপুরুষ। জমানার ড্রোন খসে পড়ে কারবালার জমিনে, এজিদেরা টিকে যায় যুগে যুগে। দুলদুলের খুঁড়ের আঘাতে— ধুলোয় মলিন ক্বলব। ফোরাতের জল আজো বয়ে যায়! তৃষ্ণা বেড়েই চলছে নির্যাতিত বিবেকের আঁতুড়ঘরে।

টকটকে লাল সূর্যটা দেখলে— জিহাদ ভুলে গিয়ে, শাহাদাতের তীব্রতর তামান্না পেয়ে বসে আমার রক্তে! ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতমে আকাশ ভারী করে, উষ্ণ রক্ত ঝরিয়ে— আমি ঘরে ফিরে আসি। নিষ্পাপ আজগরকে দিতে হয়েছে শাহাদাতের নজরানা, আমি ভুলেছি হাকীকত।

অতঃপর, আমি শুয়ে পড়ি। আমার চারপাশে একটা আওয়াজ ঘুরতে থাকে— ’হাল্ মিন্ নাস্রিন ইয়ানসুরুনা? আলাম্ তাস্মাও? আলাইসা ফিকুম্ মুসলিমু?’ শামে গারিবান’ আমাকে আর বিচলিত করে না। শাহাদাতের তামান্না, আমি শাহাদাত আঙুলেই নিস্তব্ধ করে দেই আমার মুনাফিক কর্ণকুহর। সকলে ভাবে— আমি মানবিক আলখেল্লায় যুগের মুয়াজ্জিন! কিন্তু আমার ভেতরে একটা পশু বেড়ে উঠছে যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।